• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০১৯, ০৬:০৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১০, ২০১৯, ০৬:১৪ পিএম

বুলবুলের তাণ্ডবে ১১ জনের প্রাণহানি

বুলবুলের তাণ্ডবে ১১ জনের প্রাণহানি
বুলবুলের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত কোটালি পাড়ার একটি বাড়ি -ছবি : জাগরণ

● বরগুনায় ৬৪ মাঝি-মাল্লাসহ ৭টি মাছধরার ট্রলার নিখোঁজ

● সেন্টমার্টিনে আটকা ১২শ’ পর্যটক

● সাতক্ষীরায় তলিয়ে গেছে বহু চিংড়ির ঘের

● বিমানবন্দর চালু ও স্বাভাবিক ঘোষণা

● আরও ২ দিন বজায় থাকবে বৈরি আবহাওয়া 

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর আঘাতে বাংলাদেশের ৫ জেলায় ৯ জন এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ২ জন নিহত হয়েছেন। 

শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে বুলবুল উপকূলীয় এলাকা অতিক্রমের সময় তাণ্ডবে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে ভিত্তিতে জানা গেছে, পটুয়াখালীতে ৩ জন, খুলনায় ২ জন, সাতক্ষীরায় ২ জন, বাগেরহাটে ১ জন, মাদারীপুরে ১ জন  এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। 

আগে থেকেই এসব অঞ্চলের আশ্রয়কেন্দ্রে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে আছেন।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে চিংড়ির ঘের। গাছ ভেঙে বিদ্যুতের তার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। বাগেরহাটে ভারি বৃষ্টিপাতের সাথে বেশ কিছু জায়গায় উপড়ে গেছে গাছ।

ভোলার লালমোহন ও চরফ্যাশনে বুলবুলের আঘাতে ২০টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে আহত হয়েছেন ১৫ জন।

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ায় সমুদ্র বন্দরগুলোতে মহাবিপদ সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে মোংলা ও পায়রায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সঙ্কেত, আর চট্টগ্রাম বন্দরের ৯ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সঙ্কেত বহাল করেছে আবহাওয়া অফিস।

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর কারণে শনিবার বন্ধ থাকার পর রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকে পুনরায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরসহ কক্সবাজার এবং বরিশাল বিমানবন্দর খুলে দেয়া হয়েছে।

রোববার সকাল ৭টা থেকে বিমানবন্দর চালু ও স্বাভাবিক ঘোষণা করা হয়। এর ফলে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে উড়োজাহাজ চলাচল।

অন্যদিকে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর প্রত্যাহার করা হয়েছে সর্বোচ্চ রেড অ্যালার্ট। রোববার সকাল থেকে শুরু হয়েছে অপারেশন কার্যক্রম।

আবহাওয়া অফিস জানায়, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলাসমূহের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এসব অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া ও দমকা বাতাস বইতে পারে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে আগামী ২ দিন বৈরি আবহাওয়া থাকতে পারে। সেই সাথে রয়েছে ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা।

আবহাওয়া অফিস আরও বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় ১৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হযেছে। আর বাতাস হয়েছে ঘণ্টায় ৮১ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ বাতাসের রেকর্ড করা হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১১৭ কিলোমিটার। এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে প্রতি ঘণ্টায় ১৩১ মিলিমিটার।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এখন স্থল নিম্নচাপ হিসেবে বাগেরহাট, খুলনা ও পটুয়াখালী অঞ্চলে অবস্থান করছে। এর ফলে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড়টি তার অবস্থান থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বুলবুল ক্রমেই আরও দুর্বল হয়ে মাদারিপুর, ফরিদপুর, ঢাকা, কুমিল্লা অঞ্চল দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা অতিক্রম করবে।

শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতভর উপকূলে তাণ্ডব চালিয়ে বুলবুল দুর্বল হয়ে পড়েছে স্থলভাগে এসে। এখন স্থলভাগের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে। 

বরগুনায় ৬৪ মাঝি-মাল্লাসহ ৭টি মাছধরার ট্রলার নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে।

সারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল এখনও বন্ধ রয়েছে। এছাড়া সাগর উত্তাল থাকায় সেন্টমার্টিনে আটকা পড়েছেন ১২শ’ পর্যটক।

এসএমএম

আরও পড়ুন