• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২০, ০৩:২৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ২, ২০২০, ০৩:২৮ পিএম

মুজিবর্ষে ১০ লাখ ঔষধি গাছ লাগাবে বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশন

মুজিবর্ষে ১০ লাখ ঔষধি গাছ লাগাবে বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশন

মুজিববর্ষে সারাদেশে ১০ লাখ ঔষধি গাছ লাগানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশন। সোমবার (২ মার্চ) দুপুর ১২টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের চেয়ারমান ড. এম এ হাকিম।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ১৯৮৬ সাল থেকে ঔষধি গাছ বিশেষ করে নিম গাছ রোপন করে আসছে বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশন। ইতোমধ্যেই নিম গাছের গুনাগুন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজধানী ঢাকা শহরের রাস্তার মাঝের আইল্যান্ডসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় নিম গাছ পরিলক্ষিত হচ্ছে। সারাদেশের সব ক্যান্টনমেন্ট ও চা বাগানের অব্যবহৃত জমি বিশেষ করে ব্র্যাকের চা বাগান এবং ন্যাশনাল টি কোম্পানির চা বাগানসহ অধিকাংশ বাগানে নিম গাছের ব্যাপক বিস্তৃতি হযেছে।’

ঔষধি উদ্ভিদের এই গবেষক বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ রাস্তার পাশে এবং বসতবাড়িতে ব্যাপকভাবে নিম চারা লাগানো হয়েছে। যা বর্তমানে ফুল ও ফলে শোভা পাচ্ছে। এসব গাছের পাতা, ফল, বীজ ও ছাল থেকে তৈরি হচ্ছে জৈব কিট বিতারক, জৈব সার ও জৈব প্রসাধনী, যা বিক্রি হচ্ছে দেশের সকল ক্যান্টনমেন্টের সিএসডি, সিআইডি কল্যাণ স্টোর, লাজফার্মা ও অন্যান্য সুপার শপে।’
 
এছাড়া দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রফতানি হচ্ছে বিদেশেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিম গাছের গুনাগুন, পরিবেশ রক্ষা, কৃষিতে এর ব্যবহার এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে নিমকে একুশ শতকের বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এটি আমাদের উপমহাদেশেরই একটি বৃক্ষ। বাংলাদেশে নিম নিয়ে কাজ করা একমাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশন’। 


ড. নিম হাকিম বলেন, ‘নিম ও অন্যান্য ঔষধি উদ্ভিদ যার অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশ নিম ডাউন্ডেশন জন্মলগ্ন থেকেই এ ধরণের ঔষধি উদ্ভিদ রোপনের জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার কাজ করে যাচ্ছে।’

ঔষধি উদ্ভিদের এই গবেষক বলেন, ‘এই কাজে শুরু থেকেই গবেষণা, উন্নয়ন ও সংরক্ষণে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, বাংলাদেশ চা বোর্ড, বাংলাদেশ টি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের সাথে কারিগরি সহযোগিতা ও গবেষণায় সম্পৃক্ততা রয়েছে।’

ঔষধি উদ্ভিদ রোপন এবং তা বাণিজ্যিকিকরণে প্রশিক্ষণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিসিনাল প্লান্টস অ্যান্ড হারবাল প্রডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল।

তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে ১০ লাখ ঔষধি গাছ লাগানোর কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশন, যা শুরু হবে মুজিববর্ষের শুরুতে ২১ মার্চ ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম বৃক্ষটি রোপন করা হবে জাতির জনকের জন্ম জেলা বৃহত্তর ফরিদপুরের রাজবাড়ি জেলার শান্তি মিশনে।’ তিনি আরো বলেন, ‘শেখ মুজিব পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সম্মতিজ্ঞাপন করেছেন। এছাড়া রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।’

ড. নিম হাকিম আরো বলেন, ‘এই বৃক্ষগুলো যতদিন জীবিত থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বহন করবে। পাশাপাশি এই গাছগুলো থেকে দরিদ্র মানুষের একটি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি, দেশের পরিবেশে রক্ষা, জৈব প্রসাধনী, খাদ্য ও নিরাপদ কৃষিপণ্য পাবে বাংলাদেশ। বিদেশে রফতানি করেও আয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা, যা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখবে। 

মুজিববর্ষে এই ১০ লাখ ঔষধি গাছ রোপনে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশনের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান তিনি। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, ক্রাইম রিপোর্টার এসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান দিপু, সাবেক সভাপতি আবু সালেহ আকন, বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা  মাহমুদা ডলি প্রমুখ।

উল্লেখ্য যে, ড. নিম হাকিম ওয়ার্ল্ড নিম অরগানাইজেশন (ডব্লিউএনও) এর প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি এবং সমগ্র এশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক। 

এইচএম/ এমএইচবি