আকস্মিক বন্যায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো।
জেলার ৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় সেগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বানের পানিতে ভেঙে গেছে শ্রেণিকক্ষ। বাঁধ ও ৯টি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে বানভাসি মানুষ গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। জেলার চারটি উপজেলার প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
বন্যায় তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে থাকা জেলার চারটি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। রাস্তাঘাট ভেঙে তলিয়ে যায় বসতভিটা। তলিয়ে যায় আগাম আলু আবাদ ও উঠতি আমন ধানের ক্ষেত।
বানভাসি মানুষ তাদের গবাদি পশু নিয়ে উঁচু স্থান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়তে থাকায় ২০ অক্টোবর (বুধবার) দুপুর ১২ টার দিকে ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাসের ৬১০ মিটারের মধ্যে ৩০০ মিটার এলাকা ভেঙে যায়। ব্যারাজ এলাকায় জারি করা হয় রেড অ্যালার্ট।
মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়। ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানি নিয়ন্ত্রণে হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করে। দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় তিস্তা। পানি নামতে শুরু করলে বেরিয়ে আসে ক্ষতচিহ্ন।
কাকিনা মহিপুর সেতু হয়ে রংপুরে যাওয়ার সড়কটি পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। এতে যান চলাচল বন্ধ হলে বিপাকে পড়ে মানুষ।
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া বানভাসি ফেছকো মামুদ জানান, গত ৩০ বছরে এমন বন্যা তিনি দেখেননি।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, জেলায় ১৭ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এসব মানুষের খাদ্য সহায়তার জন্য ১৭০ টন জিআর চাল ও নগদ ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ২০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বলে তিনি জানান।
জাগরণ/এসএসকে/এমএ