• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯, ০৬:৫৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯, ০৭:০৭ পিএম

যুক্তরাজ্যে পড়া শেষে ২ বছর চাকরির সুযোগ

যুক্তরাজ্যে পড়া শেষে ২ বছর চাকরির সুযোগ

ব্রিটেনে লেখাপড়া করতে আসা বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্যের সরকার। ব্রিটিশ হোম অফিসের ঘোষণা করা নতুন এ প্রস্তাবনা অনুযায়ী স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর কর্মসংস্থানের জন্য ২ বছর যুক্তরাজ্যে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা। এর ফলে ২০১২ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পরে বৃটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা থেরেসা মের নেয়া সিদ্ধান্তকে পাল্টে দেয়া হল।

থেরেসা মের নিয়ম করেছিলেন, স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর বিদেশি শিক্ষার্থীরা ৪ মাসের বেশি ব্রিটেনে অবস্থান করতে পারবেন না।

যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, নতুন পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের নিজেদের সক্ষমতা বুঝতে এবং যুক্তরাজ্যে নিজেদের পেশা গড়ে নিতে সহায়ক হবে। কিন্তু মাইগ্রেশন ওয়াচ নামে একটি প্রচারণা গোষ্ঠী এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে এটাকে পশ্চাৎমুখী বলে উল্লেখ করেছে।

যেসব শিক্ষার্থীরা আগামী বছর থেকে যুক্তরাজ্যে স্নাতক পর্যায়ে কিংবা তার থেকে উঁচু কোন ডিগ্রির জন্য পড়াশুনা শুরু করবেন তারা এই পরিবর্তীত নিয়মের সুযোগ পাবেন। কিন্তু এখানে শর্ত হল, বিদেশি স্টুডেন্টরা যেনতেন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবেন না। শুধুমাত্র সেইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই সুযোগ পাবেন যেসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে অভিবাসন সংক্রান্ত নিয়মকানুন যথাযথভাবে মেনে চলে আসছে। নতুন এ আইনে শিক্ষার্থীরা কি ধরণের কাজ বা কতটি কাজ একসঙ্গে করতে পারবেন তার উপর কোন বিধিনিষেধ থাকবে না।

নতুন এ আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা কিভাবে উপকৃত হতে পারেন এ সম্পর্কে জানতে চাইলে পূর্ব লন্ডনের স্ট্রাটফোর্ডে অবস্থিত ‘সিটি হাইটস সলিসিটরস’ প্রতিষ্ঠানের আইনজীবী রুমেল আহমেদ বলেন, এ আইন পূর্বেও ছিল। এটা হল বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যে খুবই উপকারী একটা সুযোগ। এর মাধ্যমে তারা ইউকের মত দেশে কাজের সুযোগ পান। যা তাদের অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি একটি উন্নত ভবিষ্যত গড়ার পথ খুলে দেয়। এর মাধ্যমে বিদেশিরা যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের একটা সুযোগও তৈরী করতে পারেন। এ আইনের মাধ্যমে ইউকেতে কাজ করে অতীতে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ করে নিয়েছেন। আমাদের মত দেশের ছাত্রছাত্রীদের জন্যে এমন আইন একটা সুভাগ্য বলে মন্তব্য করেন আইনজীবী রুমেল আহমেদ।

নতুন এ আইনের প্রশংসা করেছেন ব্রিটেনের শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তিরা। ব্রিটেনের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পাটেল এ আইনকে সমর্থন করে বলেন, এই সিদ্ধান্ত সরকারের বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ।

বিবিসির বিশিষ্ট সাংবাদিক মার্ক ইস্টন বলেন, অভিবাসন নিয়ে সরকারের নতুন কোন পদক্ষেপের প্রমাণ যদি চান, তাহলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ২ বছর থাকতে দেয়ার এই সিদ্ধান্তই সেই প্রমাণ।

ইউনিভার্সিটিজ ইউকের প্রধান নির্বাহী অ্যালেস্টার জারভিস এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলছেন, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে লাভবান করবে এবং উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক গন্তব্য হিসেবে যুক্তরাজ্যের সুনাম ফিরিয়ে আনবে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যের জন্য ইতিবাচক সামাজিক প্রভাব বয়ে আনে বলে প্রমাণ রয়েছে। সঙ্গে অর্থনীতিতে যোগ করেছে ২৬ বিলিয়ন পাউন্ড। কিন্তু বেশ দীর্ঘ সময় ধরে, শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা শেষে কাজের সুযোগ না থাকায় যুক্তরাজ্য এসব শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

সদ্য পদত্যাগকারী যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটিস মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সহোদর জো জনসন বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যে নতুন এ আইনের প্রশংসা করে টুইট করেছেন ‘অবশেষে সফলতা আসল’।

ব্রিটেনের বিরোধী দল লেবার পার্টির ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডায়ান অ্যাবোট বলেন, লেবার পার্টি বরাবরই বলে আসছে যে, স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার পর কাজের সুযোগ দেয়া উচিত। এতে তারা আমাদের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারবে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণায় অবদান রাখবে। এর ফলে আমরা বিশ্বের মেধাবী এবং সেরাদের আনতে পারবো।

তবে মাইগ্রেশন ওয়াচের চেয়ারম্যান আলপ মেহমেট নতুন এই সিদ্ধান্তকে ‘অপরিণামদর্শী’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি মনে করেন, এর ফলে স্নাতক ডিগ্রিধারী বিদেশি শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি পরিমাণে ব্রিটেনে থেকে যাবে।

একেএস
 

আরও পড়ুন

  • প্রবাস এর আরও খবর