• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২০, ১০:১৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ১৯, ২০২০, ১০:১৭ পিএম

কানাডাস্থ বাংলাদেশে হাইকমিশনের উদ্যোগে মুজিববর্ষ উদযাপিত

কানাডাস্থ বাংলাদেশে হাইকমিশনের উদ্যোগে মুজিববর্ষ উদযাপিত

কানাডার অটোয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে 'মুক্তির৫ মহানায়ক' ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২০ বর্ণাঢ্য উদযাপন পালিত হয়েছে।

কানাডায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন ইতিহাসের এই অভূতপূর্ব লগ্ন উদযাপনের বিশেষ আয়োজনের পাশাপাশি বাংলাদেশ সরোকার ঘোষিত পুরো মুজিববর্ষজুড়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ভছরব্যাপী নানা কার্যক্রম পালনে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে।

তবে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারী আকারে প্রকোপ সৃষ্টি করায় বাংলাদশ সরকারের নির্দেশনা অনুসারে বিশদ আকারে এই উদযাপন পালনে বিরত থাকে হাই কমিশন।

দিবসের শুরুতেই সকাল ৯.০০ ঘটিকায় অটোয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রধানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভবনে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলনের মধ্যদিয়ে এই অনুষ্ঠান উদযাআআপাওনের কার্যক্রম শুরু করা হয়। এসময় হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

পরবর্তীতে বিকাল ৫.০০ ঘটিকায় বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রাঙ্গনে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন মিশনের প্রথম সচিব মিস অর্পনা রানী পাল। কানাডায় কর্তব্যরত বাংলাদেশের হাইকমিশনার, হাই কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ও প্রবাসী বাংলাদেশীগন স্বতষ্ফূর্তভাবে এ উৎসবে যোগ দেন। দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর উদ্ধৃত বাণি উপস্থিত অতিথিদের সামনে উপস্থাপন করেন যথাক্রমে উপ-হাইকমিশনার জনাব চিরঞ্চীব সরকার, , মিনিস্টার জনাব মিয়া মোঃ মাইনুল কবীর, হাইকমিশন কাউন্সিলর জনাব মোঃ সাখা্ওয়াৎ হোসেন এবং হাইকমিশন কাউন্সিল জনাব দেওয়ান হোসনে আইয়ুব। 

এরপর বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। উক্ত প্রামাণ্য চিত্রের পর একটি বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যেখানে আমন্ত্রিত অতিথিরা বঙ্গবন্ধুর জীবন আদর্শ, তাঁর বর্ণিল রাজনৈতিক জীবন এবং নজিরবিহীন দেশপ্রেমের উপর মতামত ব্যক্ত করেন। উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট সাংবাদিকগণের মাঝে জনাব কবির চৌধুরী, জনাব শরীফ ইকবাল চৌধুরী ও জনাব শাহ বাহউদ্দিন শিশির (প্রেসিডেন্ট, ব্যাকোভ) অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, মুজিবজন্মশতবার্ষিকী উদযাপন আমাদের সকলের জন্য আনন্দের একটি মুহূর্ত। আমাদের সকলকে নিজেদের ব্যক্তি ও কর্মজীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নৈতিক দীক্ষা লালনের শপথ নিতে হবে। তবেই সফল হবে জাতির পিতার অতুলনীয় ত্যাগ। বিশেষ করে আমরা যারা প্রবাসী হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত, আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের দ্বারাই অপর একটি দেশের বুকে বাংলাদেশের পরিচিতি গ্রথিত হয়। এটা আমাদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ যে একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমরা বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মান জানান দিতে পারি। আমরা যেন ভুলে না যাই যে, সারা বিশ্ব জানে বঙ্গবন্ধু কে। আর বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সারাবিশ্বের বুকে বর্তমানে যে অনন্য উচ্চতায় অধিষ্ঠিত, তার মান রক্ষার ভারও আমাদেরই কাঁধে।

তিনি এ সময় প্রতিটি বাংলাদেশি নাগরিকের প্রতি নিজেদের নতুন প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নৈতিকতার দীক্ষা নিশ্চিত করে তাদের একজন আদর্শ বাংলাদেশি হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের উচিত আমাদের সন্তানদের মাঝে এই উপলদ্ধি সৃষ্টি করা যে তারা এমন একটি রাষ্ট্রের সন্তান যার প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মত একজন কিংবদন্তী। তার জীবন, দেশের প্রতি তার ভালবাসা এবং ত্যাগ ও আদর্শ সম্পর্কে সন্তানদের জানতে হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে যাতে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে তারা প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে লড়াই করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘সোনার বাংলার’ – স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের অব্যাবহিত পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, উন্নত দেশে তথা ‘সোনার বাংলায়’ – পরিণত করতে নিজেকে নিবেদিত করেছিলেন তিনি। তার সাড়ে চার বছর শাসন কালে বাংলাদেশকে ‘সোনার বাংলায়’-এ পরিণত করতে যে সকল পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজ দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন। আজ অবদি জাতির পিতার প্রণীত সংবিধানের অনুসরণেই বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এতেই বোঝা যায় কতটা বিচক্ষণ একজন রাষ্ট্র প্রধান ছিলেন বঙ্গবন্ধু।

এ সময় তিনি বংলাদেশের শ্রেষ্ঠতম মিত্র রাষ্ট্রের মাঝে অন্যম  হিসেবে সর্বদা বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গলে নিবেদিত প্রাণ থাকায় কানাডা সরকার ও অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসনের প্রতি আন্তরিক কৃজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

উল্লেখ্য, অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসন কানাডা সরকারের পক্ষ থেকজে স্থানীয় পর্যায়ে ১৭ মার্চ ২০২০ কে শেখ মুজিবুর রহমান দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এ কার্যক্রমে অটোয়াস্থ প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ব্যাকোভ-এর ভূমিকার প্রশংসা করেন হাইকমিশন দপ্তর।

এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিশেষ বানী প্রেরণ করেছেন বএল জানান তিনি।

অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে বাঙালি জাতির মুক্তির কাণ্ডারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার শহীদ পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনূষ্ঠিত হয়। মিশনের সহকারী কনস্যুলার মোঃ রফিকুল ইসলাম এ মোনাজাত পরিচালনা করেন। 

সূত্র: জনাব দেওয়ান হোসনে আইয়ুব,

কাউন্সিলর (রাজনৈতিক)

বাংলাদেশ হাইকমিশন, অটোয়া, কানাডা।

এসকে

  • প্রবাস এর আরও খবর