• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০১৯, ০৯:৩৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৪, ২০১৯, ০৩:৫০ এএম

পহেলা বৈশাখ

সার্বজনীন উৎসবে শামিল হতে চলছে প্রস্তুতি

সার্বজনীন উৎসবে শামিল হতে চলছে প্রস্তুতি
বাঙালিয়ানা সাজে মডেল রুমানা আমিন

দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালির সার্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ।পুরনো বছর বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেবে উৎসবপ্রিয় বাঙালি জাতি। তাই এ উৎসবকে ঘিরে এখন চলছে নিজেদের রাঙ্গিয়ে নিতে পছন্দের ডিজাইন ও রঙয়ের পোশাক বাছাই। সেই চলছে নানা অনুষঙ্গ কেনাবেচা। 

বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে ঘুড়ি, মাটির হাড়ি কিংবা ঢোল ও একতারার মতো ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে নগরীর বুটিক হাউসগুলো। যেখানে পাওয়া যাচ্ছে লাল-সাদা, হলুদ, কিংবা সাদা জমিনের ওপর বর্ণিল নকশার সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি ও ফতুয়াসহ নানা পোশাক। আলাদা করে ক্রেতাদের নজর কাড়ছে তাঁতের শাড়ি। শাহবাগ, টিএসসির মতো ব্যস্ত এলাকার সড়কের পাশে বসে গেছে রেশমির চুড়ির হাট। যেটা ছাড়া অপূর্ণ রয়ে যায় নারীদের বৈশাখি সাজ।

রাজধানীর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে মিলছে বৈশাখকেন্দ্রিক বাহারি সব পোশাক-আশাক। বাহারি সব দেশীয় শাড়ি মিলছে নগরী নাটক সরণির (সাবেক বেইলি রোড) শাড়ির দোকানগুলোতেও। 

নগরীর গুলশান ১ ও ২, বনানী, ধানমণ্ডি, বারিধারা, উত্তরাসহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকার বুটিক হাউসগুলোতে মিলছে বৈশাখি বর্ণিল পোশাক।

ক্রেতারা বলেন, বৈশাখ উপলক্ষে নানা ডিজাইনের পোশাক এসেছে। নববর্ষের জন্যই পোশাক কিনতে এসেছি। দাম মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে।

বুটিক হাউসগুলোর কর্নধাররা বলছেন, শাড়ি ও পাঞ্জাবি ছাড়াও সালোয়ার-কামিজ বেশি বিক্রি হচ্ছে। পোশাকের দামও রাখা হয়েছে ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে।

শিশুদের জন্য বৈশাখী পোশাক রয়েছে প্রায় সব দোকানেই। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। তাই এ উৎসবকে বর্ণিল করতে চলছে পোশাকসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন উপকরণ কেনার ধুম। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে এখন চাঙ্গাভাব।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন ডিজাইন, রঙের নিরীক্ষা সবকিছুই চোখে পড়ছে এবারের বৈশাশি পোশাকের আয়োজনে। কয়েক বছর ধরেই ঈদ বা পূজার পরই বৈশাখ যেন সার্বজনীন উৎসবের আমেজ নিয়ে উপস্থিত হয় জাতির সামনে। বাঙালির নববর্ষ তাই বুটিক হাউসগুলোর শোরুমগুলোর দিকে সবারই এ সময় অন্যরকম আগ্রহ থাকে। 

পহেলা বৈশাখে শাড়ি বা পাঞ্জাবি যাই হোক না কেন ক্রেতার প্রথম আকর্ষণ থাকে লাল সাদা কম্বিনেশনের দিকে। আর সাদা বা ঘিয়ে গরদে টকটকে লাল পাড়ের শাড়ি পরা যেন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। আর ছেলেদের জন্য গিলা-করা সিল্কের পাঞ্জাবি। তবে হালফ্যাশনে শুধু সাদা লালে আটকে নেই পোশাকের রঙ। বরং বাঙালি ঐতিহ্যের রঙের বাইরে গিয়ে উৎসবকে প্রতিনিধিত্ব করে এমন রঙকেই বেছে নিচ্ছেন ক্রেতারা। 

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির ৭ম তলায় রয়েছে দেশের নাম ১০টি ফ্যাশন হাউস। যা ‘দেশীদশ’ নামে পরিচিত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নিপুণ, কে-ক্র্যাফট, অঞ্জন’স, রং, বাংলার মেলা, সাদাকালো, বিবিয়ানা, দেশাল, নগরদোলা ও সৃষ্টি। বৈশাখের রং লাল-সাদা পোশাকের প্রাধান্য দেশীদশের সবগুলোতেই। তবে অন্য রঙের পোশাকও বিক্রি হচ্ছে।

পহেলা এপ্রিল থেকেই বৈশাখের কেনাকাটা শুরু হয়েছে। পোশাকে লাল-সাদার পাশাপাশি সবুজ, নীল, মেরুন রঙ প্রাধান্য পেয়েছে। নকশায় বাংলার লোকজ বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বৈশাখী কাপড়েও বিশেষ নতুনত্ব এসেছে।

বারিধারার যমুনা ফিউচার পার্কের রয়েছে শতাধিক ‍বুটিক হাউস। সেখানকার বুটিক হাউসগুলো মিলছে উৎসবের রঙে রাঙানো নানা পোশাক। বিশেষ স্বদেশ আউটলেট সেজেছে বাহারি সাজে। 

রাজধানীর খিলগাঁও, ওয়ারী, মালিবাগ. মগবাজার, ধানমণ্ডি, সীমান্ত স্কয়ার, মিরপুর রোড ও মিরপুর ১ ও ২ নম্বরের দেশীয় বুটিক হাউসগুলোতেও মিলছে নানা রকম পোশাক। 

পহেলা বৈশাখকে ঘিরে রাজধানীতে মৃৎশিল্পীদের নিপুণ হাতের তৈরি মাটির বিভিন্ন তৈজসপত্র এবং কারুশিল্পীদের কারুপণ্যের চাহিদা শত গুণ বেড়ে যায়। তাই এ বছর বৈশাখের বাজার ধরতে পিছিয়ে নেই মৃৎশিল্প এবং গহনার কারিগররা। 

সরেজমিনে, রাজধানীর দোয়েল চত্বর গিয়ে দেখা যায়, রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে মাটির হাঁড়িতে রঙ-তুলির আঁচড় দিয়ে চলেছেন মৃৎশিল্পীরা। 

রাজধানীর বাজারে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। অনেক ক্রেতা আগেভাগে ইলিশ কিনতে শুরু করেছেন। তাই দাম একটু বেশি। তবে বড় ইলিশের তুলনায় ছোট ও মাঝারি আকারের চাহিদা বেশি দেখা যাচ্ছে। 

এসএমএম