• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০১৯, ০৭:৪৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০১৯, ০৮:৪৬ পিএম

নববর্ষের কেনাকাটায় লোকঐতিহ্য 

নববর্ষের কেনাকাটায় লোকঐতিহ্য 
বৈশাখে চাই মানানসই শাড়ি। সেই শাড়ির খোঁজে এক নারী ক্রেতা- ছবি : কাশেম হারুন

নববর্ষ উৎসব বাঙালির চিরায়ত উৎসবের মধ্যে অন্যতম। ভূমিকেন্দ্রিক সভ্যতার এ দেশে বাংলা নববর্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। গ্রামীণ জীবনে যেমন মেলার প্রবর্তন হয়েছে, তেমনি নগর জীবনেও মেলার প্রভাব বিশাল। পহেলা বৈশাখের মেলাকে ঘিরে পুঁজির বিস্তার চোখে পড়ার মতো। আগে কেবল ঈদ ও পুজাকে ঘিরে কেনাকাটার বাজারে ভিড় জমতো। এখন সেদিক থেকে দেখলে পহেলা বৈশাখের বাজারের বিস্তৃতিও চোখে পড়ার মতো। বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে প্রতিবছর জমে উঠে কেনাকাটা। এবারও জমে উঠতে শুরু করেম বৈশাখি কেনাকাটা। সে সঙ্গে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বৈশাখকেন্দ্রিক অর্থনীতি। 

বৈশাখকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশে দেশীয় পোশারে প্রতিষ্ঠান বুটিক হাউসগুলোতে উপচেপড়া ভিড় এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমল। নববর্ষের রঙে রাঙানো এখন রাজধানীর প্রতিটি বুটিত হাউস। ইদানিং বুটিক হাউসগুলোতে সংযোজন হয়েছে খ্যাতনামা শিল্পী-ডিজাইনারদের হাতে আঁকা লোকজ মোটিভ সম্বৃদ্ধ শাড়ি পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ও ছোটদের বাহারি রঙের পোশাকে সাজানো সব দোকান। তরুণীরা শাড়ি এবং সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন গহনা। এ ক্ষেত্রেও চারুশিল্পী বা লোক শিল্পীদের মাটিতে তৈরি পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। বলা যায় পহেলা বৈশাখকে ঘিরে লোকজ মোটিভের একটা নতুন বাজার তৈরি হয়েছে। দেশজ মোটিভ ব্যবহারে মানুষ অনেক আগ্রহী হয়ে উঠেছে। 

পোশাকের পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে মাটির পুতুল, হাঁড়ি-পাতিল, ঢোল, মুখোশ ইত্যাদি। শপিংমল কিংবা মার্কেটের পাশাপাশি এসব দেশজ পণ্য পাওয়া যাচ্ছে মেলা এবং ফুটপাতে, বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। সেখানেও ক্রেতার ভিড়।

‘‘চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বৈশাখকেন্দ্রিক অর্থনীতি’’

বৈশাখের বেচাকেনায় শ্রেণি সচেতনতা লক্ষ্য করার মতো। সেক্ষেত্রে রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা শপিং মল, বারিধারার যমুনা ফিউচার পার্ক, শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট কিংবা গুলশানের আড়ংসহ সবখানে ক্রেতায় ঠাসা থাকলেও শ্রেণি ভিন্নতা আছে। তবে জিনিসপত্রের কেনাকাটা চলছে ধুমছে এটাই সবচেয়ে বড় কথা। এই বৈশাখে প্রত্যাশার চেয়ে বিক্রি বেশি হচ্ছে এসব কথা ব্যবসায়ীদের। 

ঐতিহ্যগত আড়ংয়ের বাইরেও এখন অনেক বুটিক হাউস গড়ে উঠেছে রাজধানীতে। সবখানেই ক্রেতার দীর্ঘ লাইন। দোকানগুলোতে পছন্দ করছেন ক্রেতারা। বুটিক হাউসগুলোর দিকে তাকালেই এ দৃশ্য চোখে পড়বে।  

দেশীয় ক্রিয়েটিভ ফ্যাশন হাউজ নিত্য উপহার-এর সত্ত্বাধিকারী বাহার রহমান জাগরণকে বলেন,  এ বছর ব্যবসা তুলনামূলক ভালো। ক্রেতারা ক্রমশ দেশীয় পণ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন এটা একটি আশার দিক। নববর্ষ সামনে রেখে এ বছরও নতুন নতুন লোকজ মোটিভের ব্যবহার সামনে এসেছে। যা ক্রেতারা লুফে নিচ্ছেন। তবে এবারে পাঞ্জাবি ও শাড়ির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বড়দের পাশাপাশি ছোট বাচ্চাদের কাপড়ও বেশ বিক্রি হচ্ছে। শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে অনেকে গহনা কিনছেন।

এবার নববর্ষে প্যাকেজ পোশাকে ভিন্নতা নিয়ে এসেছে সাদাকালো, দেশাল, নিত্য উপহার, দেশীদশ, অন্যমেলা, স্বদেশ, অঞ্জন'স, কে-ক্রাফটসহ বেশ কয়েক বুটিক হাউস। ছেলে, মেয়ে এবং মা-বাবার জন্য একই নকশা এবং একই কাপড়ের পোশাক এসেছে। দেশীয় পোশাকের প্রতি আগ্রহী করে তুলতেই এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বুটিক হাউসগুলোতে।

ডিজি/এসএমএম