• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২, ২০১৯, ০৬:৩১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২, ২০১৯, ০৬:৫২ পিএম

প্রান্তিক শিশু- কিশোরদের ঈদ!

‘আমরা বড়লোকদের বাড়ি যাই না, হেরা গেটে তালা দিয়া রাখে’

‘আমরা বড়লোকদের বাড়ি যাই না, হেরা গেটে তালা দিয়া রাখে’

সেইসব শিশু। পথের ধারেই যাদের বাস।  ট্রাফিক সিগন্যালের অপেক্ষায় কাটে তাদের সারাদিনের সময়। গাড়ি থামলেই ফুল বিক্রি,গাড়ি মুছে দিতে বা রুমাল বিক্রি করতে থেমে যাওয়া গাড়ির  সিগন্যালে দাঁড়িয়ে গাড়ির গ্লাসে উঁকি দিয়ে দুটো টাকা আয় করতে যাদের জীবনযুদ্ধ শুরু হয় সকাল থেকে। সেইসব  শিশুদের ব্যস্ততা একদম নেই বললেই চলে। কারণ যে রাস্তায় দাঁড়াবে, সে রাস্তার কেনার মানুষেরা আর ঢাকায় নেই। তারা নাড়ীর টানে চলে গেছে গ্রামের বাড়িতে। কিন্তু প্রান্তি সব শিশুদের দিন আর কাটে না, সময় কাটছে না প্রান্তিক শিশুদের। নিজেরা বসে দিনভর আড্ডা দিয়ে, খেলে কত সময় আর পার করা যায়? বনানী পথের পাশেই উকুন বেছে দিচ্ছিলো কয়েকটি প্রান্তিক শিশু-কিশোর। 


 সবার মাথা ভর্তি উকুন  রক্ত চুষে খাচ্ছেই। মাথা খালি চুলকায়। সবাই বসে তাই রক্তচোষা উকুন মারতে ব্যস্ত। রাস্তায় বসেই  দশ আঙ্গুল চষে বেড়াচ্ছে চুলের গোড়ায় গোড়ায়। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। তাই আরেকজন একটু উঁচুতে ফুটপাতে বসে নিজের দশ আঙ্গুলও চালালো  মাথার  আগা থেকে গোড়া অবধি। মানে ছোট্ট একটি মাথায় বিশ আঙ্গুলের অভিযান। তাতেও কিছু কুলকিনারা হচ্ছে না।


তবুও হার মানা নেই। চলেছে উকুন বিরোধী অভিযান। একদিন হয়তো  নিপাত যাবে রক্তচোষা উকুন। ওরা হয়তো জানে না এমন উকুন সমাজে বোঝাই। যারা ধরা ছেঁয়ার বাইরে থেকে কেড়ে নেয় এইসব প্রান্তিক শিশু- কিশোরদের শিক্ষা রুটি -রুজির অধিকার, ঈদআনন্দ  সর্বোপরি বাঁচার অধিকার।
বছর ঘুরে  ঈদ আসলেও, ওদের ঈদ নেই। শপিং মল, কেনাকাটার দোকান কোনকিছুতে ওদের যাওয়ার সামর্থ্য নেই। বাড়ি গেলে  ঈদ আনন্দে মেতে উঠতে পারতো। কিন্তু ওদের বাড়ি কোথায় তা জানে,কিন্তু যাবে কার সাথে ? এত টাকা কোথায়?

ওদের সাথে কথা বললে ওরা সারা দেয়। ঈদে ওদের কি ইচ্ছা করে জিজ্ঞেস করলে ওরা জানায়, পেট ভরে খেতে ইচ্ছে করে। পুনরায় জিজ্ঞেস করি কেন বড় বড় বাড়ি গেলে খেতে দেয়না, অবলীলায় বলে ,‘আমরা বড়লোকদের বাড়ি যাই না। হেরা গেটে তালা দিয়া রাখে’।ঈদে ওদের বৈচিত্র্য সিমাইযের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আর সব প্রতিদিনকার মতো। ঈদ এদের জীবনে নতুন কোন বার্তা আনেনা। এস অয়ুত প্রান্তি শিশুদের ঈদ খেয়ে উকুনের বড় বড় ভবন করে । নিজেরা ঈদ খায়,গেটে তালা মেরে খায়। আর এসব প্রান্তিক শিশু-কিশোরদের ঈদ কোন দিক দিয়ে চলে যায় সে খবর রাখে না কেউ।  কিছু সময় বিস্ময়ের সাথে তাকিয়ে থেকে আমি পুনরায় পথ চলতে শুরু করি।

ডিজি