• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০১৯, ০৩:৩২ পিএম

কাদের যখন সংকটাপন্ন

বেলুন পাম্প মেশিন খুঁজে পায়নি বিএসএমএমইউ

বেলুন পাম্প মেশিন খুঁজে পায়নি বিএসএমএমইউ

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় যখন বেলুন পাম্প (intra-aortic balloon pump - IABP) দিয়ে হৃৎপিণ্ডে বায়ুপ্রবাহ সচল রাখার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসকরা কাঙ্ক্ষিত বেলুন পাম্প মেশিন খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকার ল্যাব এইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল থেকে বেলুন পাম্প মেশিন এনে কাজ সারেন চিকিৎসকরা। সেই মেশিনসহই ওবায়দুল কাদেরকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের উদ্দেশে নেয়া হয় সোমবার (৪ মার্চ) বিকালে।

ওবায়দুল কাদের      - ফাইল ছবি

রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে বেলুন পাম্প মেশিন দিয়ে ওবায়দুল কাদেরকে সাপোর্ট দেয়া হয় এবং এটিসহ তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয় বলে দৈনিক জাগরণকে জানান বিএসএমএমইউর হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান।

বেলুন পাম্প মেশিন বিএসএমএমইউর হৃদরোগ বিভাগে আছে, না কি নেই? কোথায় ছিল? কী অবস্থায় ছিল? কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না? কেন নেই?- এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে যখন দৈনিক জাগরণ তথ্যানুসন্ধান করছিল, তখন ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যায় দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে।

হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে দৈনিক জাগরণকে বলেন, আসলে মেশিনটি আমাদের ছিল, কিন্তু এটা খুবই... খুবই কম কাজে লাগে। ওবায়দুল কাদেরের জন্য যখন এটি দরকার হয়, তখন পাওয়া যাচ্ছিল না বলেই ল্যাব এইড থেকে এনে আমরা কাজ সারি।

মেশিনটির মূল্য আনুমানিক ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা বলে ‍জানিয়েছেন চেয়ারম্যান। এত বড় একটি যন্ত্র কেন খুঁজে পাওয়া যাবে না- এ প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে।

বেলুন পাম্প মেশিনটি ছিল হৃদরোগ বিভাগের ক্যাথল্যাব ইনচার্জের দায়িত্বে। বিএসএমএমইউর ক্যাথল্যাব ইনচার্জ হলেন অধ্যাপক মোস্তফা জামান। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মোবাইলে ফোনে কল দিয়ে বেলুন পাম্প মেশিন সম্পর্কে জানতে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে চাইলে তিনি বিভাগীয় একটি সম্মেলন নিয়ে মারাত্মক ব্যস্ততার কথা বলে অন্যদিন সাক্ষাতের অনুরোধ জানান।

ক্যাথল্যাবে কাজ করেন এমন একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রায় এক বছর আগে এই মেশিন কেনা হয়। কেনার পর কখনই এটি ব্যবহার করা হয়নি। চিকিৎসকরা ভুলেই গেছেন যে, এই মেশিন আমাদের আছে।

হৃদরোগ বিভাগের দায়িত্বশীল আরেকটি সূত্র জানায়, মেশিনটির ত্রুটি ছিল বলে কাজে লাগানো যায়নি।

তবে বিএসএমএমইউর পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন মঙ্গলবার তার কার্যালয়ে দৈনিক জাগরণকে বলেন, গতকাল (সোমবার) সকাল ৮টার সময় আমি কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে মেশিনটি খুঁজে বের করি। আসলে এটি কাজে লাগে খুবই কম। আমরা অন্য হাসপাতাল থেকে সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে সফল হই।

হৃদরোগ বিভাগের একজন অধ্যাপক নাম না প্রকাশের শর্তে দৈনিক জাগরণকে বলেন, কোন মেশিন কাজে কম লাগে বা বেশি লাগে- সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- নিজের থাকা মেশিন কেন কাজের সময় পাওয়া যাবে না? নিজের থাকা সত্ত্বেও একজন ভিআইপি রোগীর প্রয়োজনে মেশিনটি ব্যবহার করা যায়নি, তাহলে সাধারণ রোগীর ক্ষেত্রে কী হবে? সাধারণ রোগীকে কি অন্য হাসপাতাল থেকে এনে এভাবে সাপোর্ট দেয়া হত?

জানার জন্য বিএসএমএমইউর ভিসি অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়ার ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

আরএম/এফসি