• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০১৯, ০৭:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৮, ২০১৯, ০১:৫৩ এএম

ঈদে ছুটি বাতিল হচ্ছে সরকারি চিকিৎসকদের

ঈদে ছুটি বাতিল হচ্ছে সরকারি চিকিৎসকদের
চিকিৎসা সেবার চিত্র-ফাইল ছবি

ঈদের ছুটিতে সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কঠোর হতে যাচ্ছে সরকার। এক্ষেত্রে বাতিল হতে পারে অনেক সরকারি চিকিrসকের ঈদ ছুটি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মনিটরিং সেল এমনকি দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) ঈদ ছুটিতে সরকারি হাসপাতাল পরিদর্শনে যাবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে কী ধরনের নির্দেশনা আসতে পারে, সে বিষয়ে কোনো কর্মকর্তা চূড়ান্তভাবে কিছু জানাতে রাজি হননি। তাই নাম উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রকাশ না করারও অনুরোধ জানান তারা।

এর আগে, টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফাঁকিবাজ চিকিৎসকদের ধরতে ঢাকাসহ দেশের কিছু সরকারি হাসপাতালে দুদকের অভিযান ও অনিয়ম কাঁপিয়ে তোলে স্বাস্থ্য বিভাগকে। তখন থেকেই চিকিৎসকদের প্রতি সরকারের কঠোরতার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে বাস্তব ক্ষেত্রে এই কঠোরতার কতটুকু প্রয়োগ হয়েছে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে রয়েছে অনেক সমালোচনা, যা দৈনিক জাগরণের বিভিন্ন তথ্যানুসন্ধানে উঠে এসেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন পরিচালক দৈনিক জাগরণকে বলেন, প্রতি ঈদেই লম্বা সরকারি ছুটি পড়ে যায়। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তাই চিকিৎসকদের ছুটি কাটানো নিয়ে গভীরভাবে ভাবছে সরকার। এবারের নির্দেশনায় ভিন্নতা ও কড়াকড়ি থাকবে। এসব নিয়ে কথাবার্তা চলছে। তাই চাইলেই গণহারে সব চিকিৎসককে ছুটি দেয়া হবে না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন সচিব জাগরণকে জানান, ঈদের সময় চিকিৎসকদের ছুটির দরখাস্তের স্তূপ পড়ে যায়। আবার রয়েছে অনেক তদবির ও সুপারিশ। গত ঈদে এই তদবির আমার কাছে পর্যন্ত এসেছে। এটা নিয়ে আমিও খুব বিরক্ত ছিলাম। তিনি জানান, চিকিৎসকদের যদি এতই ছুটি প্রয়োজন হয় তবে তারা চিকিৎসা পেশায় কেন? তাই সবকিছু বিবেচনায় রেখে সরকার এবার গণহারে ছুটিভোগের বিষয়টিতে লাগাম টানতে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীও এ বিষয়ে খুব কঠোর।

চলতি রমজানে ২৯টি রোজা হলে আগামী ৫ জুন ঈদ হবে। আর ৩০টি রোজা হলে ঈদ হবে ৬ জুন।  ৫ জুন ঈদ হলে ছুটি থাকবে ৪, ৫ ও ৬ জুন অর্থাৎ মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতি। এরপর শুক্র ও শনিবার (৭ ও ৮ জুন) দু’দিন সাপ্তাহিক ছুটি।

ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন অফিসের একজন কর্মকর্তা বলছেন, ঈদ ছুটিকালীন সরকারি হাসপাতাল পরিচালনা নিয়ে কথাবার্তা চলছে। আশা করছি, এবার কঠোরভাবে সবকিছু করা হবে। ঈদের সময় রোগীর চাপ এমনিতেই কমে যায়। চিকিৎসকও যে খুব বেশি লাগে, তা নয়। তারপরও চিকিৎসকরা ছুটি ছুটি বলে পাগল করে দেয়। চিকিৎসকদের এহেন মানসিকতা পরিহার করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঈদ ছুটিতে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ করতে পারে। প্রয়োজনে সেখান থেকে দুদককে কাজে লাগানো হবে- এমন আভাসও আমার কাছে আছে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষা।

চিকিৎসক নেতাদের কিছুটা সমালোচনা করে সূত্রটি জানায়, রোগীর সেবা ব্যাহত হলে চিকিৎসক নেতাদের খুঁজে পাওয়া যায় না প্রতিকারমূলক কথা বলার জন্য। কিন্তু সরকার যদি চিকিৎসকদের শৃঙ্খলা বিধানের জন্য বিধি মোতাবেকও কিছু করে, তখন তারা নানা কর্মসূচি, আন্দোলন-সংগ্রাম করে নাগরিক সেবা ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালায়। এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বিষয়টি দেখবে বলে জানতে পেরেছি।

ঈদে চিকিৎসকদের ছুটি সংক্রান্ত বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

আরএম/এমএইউ