• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৯, ২০১৯, ০৬:২২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৯, ২০১৯, ০৬:২২ পিএম

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মুরাদ হাসানকে যে কারণে সরতে হলো

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মুরাদ হাসানকে যে কারণে সরতে হলো
প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান; ফাইল ফটো


নড়াইল সদর হাসপাতালে স্থানীয় সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে মুরাদ হাসান যে মন্তব্য করে চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি করেছিলেন, সেই মন্তব্যের প্রভাবেই তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরানো হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে।

গত ২৫ এপ্রিল আকস্মিকভাবে তার নির্বাচনী এলাকায় নড়াইল সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে যান সংসদ সদস্য মাশরাফী। হাজিরা খাতায় তিন চিকিৎসকের স্বাক্ষর না দেখে তিনি দুজন চিকিৎসকের সঙ্গে ফোন করে কথা বলেন। ওই কথোপকথনে মাশরাফীর বক্তব্যের ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেক চিকিৎসক ফেইসবুকে মাশরাফীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে ফেইসবুকে কটূক্তি করায় ছয় চিকিৎসককে কারণ দর্শাও নোটিস দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

১০ মে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে মুরাদ হাসান বলেছিলেন, জেলা পর্যায়ের হাসপাতালের সভাপতি থাকেন সংসদ সদস্য। এলাকার হাসপাতালে সমস্যা থাকলে সেটা দেখভালের দায়িত্বও এমপির। ধৈর্য্য, সহ্য, দেশপ্রেম- সবকিছু মিলিয়ে মাশরাফী। ডাক্তার সাহেবরা এ বিষয় নিয়ে তাকে (মাশরাফি) খুব বেশি রকম আক্রমণ করা, এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি শুধু একজন জাতীয় ক্রিকেট খেলোয়াড় না, মাননীয় সংসদ সদস্যও বটে। সংবিধানে তার মর্যাদা অনেক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ঘটনার পর চিকিৎসকরা একাট্টা হয়ে মুরাদ হাসানের বিরোধিতা শুরু করেন। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএম) নেতারা ও তাদের বিভিন্ন স্তরের অনুসারীরা মুরাদ হাসানের ঘোরতর বিরোধিতা শুরু করেন। একই সঙ্গে তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সাথেও এ নিয়ে জোরালো কথা বলেন।

জাহিদ মালেকের সাথে মুরাদ হাসানের দ্বন্দ্ব থাকায় পুরো এ সুযোগটা কাজে লাগান চিকিৎসকরা। জানা গেছে, দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীর সম্পর্ক খুব একটা ভালো যাচ্ছিলো না। মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত কিছু নিয়োগ নিয়ে তাদের মাঝে ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়। এই লড়াই এক সময় প্রকাশ্যে রূপ নেয়। তাদের মাঝে মুখ দেখা-দেখিও বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। আর এরই সুযোগ নেন স্বাচিপ ও বিএমএ’র মুরাদ বিরোধী অংশ।

স্বাচিপ ও বিএমএ- এর এই নেতারা সরাসরি মুরাদ হাসানের বিরোধিতায় সামনে আসেননি। তবে মুরাদ হাসানের বিরোধিতায় এসব নেতারা তাদের সমর্থক চিকিৎসকদের কোনো বাধাও দেননি। 

যোগাযোগ করা হলে বিএমএ’র মহাসচিব ইহতেশামুল হক চৌধুরী জাগরণকে বলেন, না, আমরা তার কোনো বিরোধিতা করিনি। আর আমাদের বিরোধিতায় তাকে কেন সরানো হবে? সরকারের বিভিন্ন সংস্থা আছে, তারা নিশ্চয়ই সরকারকে জানিয়েছে যে, তিনি ওই পদের জন্য মানানসই নন।

স্বাচিপের প্রভাবশালী একজন নেতার ভাষ্য- মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে নিয়ে মুরাদ হাসানের মন্তব্য ছিল উস্কানিমূলক। এটা চিকিৎসকদের উত্তেজিত করেছিল এবং পরিবেশ নষ্ট করেছিল। একজন প্রতিমন্ত্রীর মুখ থেকে এ ধরনের উস্কানিমূলক কথা আসা খুবই দুঃখজনক ও আপত্তিকর। বিষয়টি আমরা সরকারের উপরের মহলকে অবগত করেছিলাম।

আরএম/আরআই