• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০১৯, ০৭:৫৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৯, ২০১৯, ০৭:৫৬ পিএম

জনগণ ও চিকিৎসকদের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা

জনগণ ও চিকিৎসকদের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করছে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা- ছবি: জাগরণ

দেশের জনগণের চিকিৎসার জন্য ২৫,৭৩২ কোটি টাকা মোটেও যথেষ্ট বাজেট নয় বলে দাবি করেন ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের নেতারা। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এধরনের বাজেট বরাদ্দে জনগণ এবং ডাক্তারদের মধ্যে উত্তেজনা ও গণ্ডগোল আরও বৃদ্ধি পাবে। চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সংস্কার করা ছাড়া সুষ্ঠু চিকিৎসা আশা করা সম্ভব না। 

বুধবার (১৯ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘জাতীয় বাজেট ২০১৯-২০২০: স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক ও পরিবেশবাদিরা এ সব কথা বলেন। 

ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলনে বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন সঞ্চালনা করেন। এতে মূল বক্তব্য পাঠ করেন ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্টের সাধারণ সম্পাদক ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- বিএমএর সাবেক সভাপতি ও জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহবায়ক অধ্যাপক রশিদ-ই মাহবুব, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্টের সাবেক সভাপতি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নাজমুন নাহার, ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক এম আবু সাঈদ, জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ডা. ফয়জুল হাকিম লালা, ডা. হাসিনা মমতাজ, মিহির বিশ্বাস প্রমূখ। 

অধ্যাপক রশিদ-ই মাহবুব বলেন, সরকার যে বাজেট স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দিয়েছে তা দিয়ে জনগণ এবং ডাক্তারদের মধ্যে উত্তেজনা ও গণ্ডগোল আরও বৃদ্ধি পাবে। কারণ সীমিত বাজেটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানের বেতন দেয়ার পর ঔষধসহ অন্যান্য প্রয়োজন মেটানো কোনভাবেই সম্ভব না। বর্তমান বাজেটও বরাবরের মত উচ্চবৃত্ত ও উচ্চ মধ্যবৃত্তদের জন্যই সহায়ক। 

অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, সরকারের অব্যবস্থাপনার জন্যই উপজেলা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার নিয়োগসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সরঞ্জাম বা স্বাস্থ্য সেবা দেয়া যায় না। অযোগ্য লোককে যোগ্য যায়গায় দিয়ে স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বারটা বাজিয়ে দিয়েছে। ঔষধ প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারনে ভেজাল ও মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ ঔষধে আজ বাজার সয়লাব। প্রণোদনার মাধ্যমে ডাক্তারদের উপজেলা পর্যায়ে থাকার সুব্যবস্থা করতে হবে। 

অধ্যাপক নাজমুন নাহার বলেন, যে বাজেটটি দেয়া হয় তাও সঠিক যায়গা সঠিকভাবে ব্যবহার হয় না। সরকারের উচিত দেশে ডাক্তার, নার্স, টেকনোশিয়ানের চাহিদা অনুযায়ী কত প্রয়োজন তা হিসাব করে পদ সৃষ্টি করে দ্রুত নিয়োগ দেয়া। তা না হলে দেশে সুষ্ঠুভাবে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে না। ঔষধ প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে ঔষধের দাম যে যেমন ইচ্ছে নিচ্ছে। এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। 

অধ্যাপক এম আবু সাঈদ বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে বিকেন্দ্রীকরণ করে স্থানীয় পর্যায়ে দিলে তারা স্থানীয়ভাবে বাজেট করবে এবং এ খাতে কত বাজেট লাগবে সেটা তারা স্থানীয়ভাবে তাদের বাজেট তারা নিজেরাই ঠিক করে নিবে। 

ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ মোট জাতীয় বাজেটের ৪.৯২% এবং জিডিপির ০.৮৯%। সেই হিসেবে এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জন প্রতি বরাদ্দের পরিমাণ ১৪২৭.৭৭ টাকা।

সংবাদ সম্মেলন থেকে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ অত্যন্ত অপ্রতুল, এমনকি তা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যেও সর্বনিম্ন। তাই  স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য আমাদের দেশের বর্তমান আর্থসামাজিক বাস্তবতায় জাতীয় বাজেটের ১২% এবং জিডিপির বরাদ্দ ৩%-এ উন্নীত করার দাবি জানাই এবং চলতি বাজেট থেকেই তার প্রতিফলন দাবি করেন চিকিৎসক ও পরিবেশবাদিরা। 

টিএস/টিএফ