• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯, ০৮:২৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯, ০৮:২৬ এএম

সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে কেন মৃতদেহ পরিবহন করা হয় না?

সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে কেন মৃতদেহ পরিবহন করা হয় না?

সম্প্রতি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে দৈনিক জাগরণ এর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক এসএম মুন্না মিয়ার মায়ের মৃত্যু ঘটে। হাসপাতাল থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মৃতদেহ গন্তব্যে নিয়ে যেতে তিনি ও হাসপাতালে উপস্থিত তার স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্স খোঁজ করেন। তারা চাচ্ছিলেন- কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে করে মৃতদেহ নিয়ে যাবেন বাসায়। কিন্তু এখানেই বিপত্তি বাধে। হাসপাতাল থেকে উত্তর আসে- সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে মৃতদেহ পরিবহন করার নিয়ম নেই। 

গতি না পেয়ে তারা বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন ২ হাজার টাকা ভাড়ার বিনিময়ে। প্রায় ১ ঘণ্টা পর ওই অ্যাম্বুলেন্স এসে মৃতদেহ পরিবহন করে পৌঁছে দেন কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। 

কিন্তু কেন সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে মৃতদেহ পরিবহন করার নিয়ম নেই?

কেরাণীগঞ্জ থানা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক মীর মোবারক হোসেন দৈনিক জাগরণকে বলেন, অ্যাম্বুলেন্স শুধুমাত্র রোগী পরিবহনের জন্য। এটা হতে পারে বাসা থেকে হাসপাতালে, হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে, হাসপাতাল থেকে বাসায় বা অন্য। মৃতদেহ বহনের গাড়ি আলাদা। যা সরকারি হাসপাতালে নেই।  

বাংলাদেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী দেখা যায়- কাছাকাছি দূরত্বে হলে মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করেই পরিবহন করা হয়। লাশবাহী পরিবহনের কথা চিন্তাও করা হয় না। আবার কেউ কেউ চিন্তা করলেও অধিক খরচের কারণে পিছিয়ে পড়েন। কেননা, লাশবাহী পরিবহনের খরচ কিছুটা বেশিই। এই সুযোগে বেসরকারিখাতের সাধারণ অ্যাম্বুলেন্সগুলো ভাড়া আদায়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেন। কেননা, মরদেহের স্বজন বিপদে, ভাড়া যা-ই হোক, মরদেহ বাসায় নিতেই হবে। 

বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক রিপন মিয়া দৈনিক জাগরণকে বলেন, ঢাকার ভেতরে যেখানেই যাই, এটা রেট করা, ২ হাজার টাকা।  কোনো কোনো সময় এটা বাড়তেও পারে। কিন্তু কমে না। 

একটি প্রশ্নে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক ওমর গাজী দৈনিক জাগরণকে বলেন, ভাড়া বেশি নেই? খালি এইটাই বললেন? শোনেন, এই যে একটা লাশ গাড়িতে তুলি, এজন্য অনেক কাম করতে হয়। লাশটা নামানোর পরে পুরা গাড়ি ধুইতে হয়। যাতে কোনো গন্ধ না থাকে। একটা মানুষ আইসা যখন আমার গাড়ি ভাড়া করব, তহন আইসা যদি কোনো গন্ধ পায়, তাইলে শেষ, ভাড়া পাওন যায় না। এজন্য লাশ পরিবহন করলে ভাড়া ওই হিসাব কইরাই নিতে হয়। 

ঢাকা জেলার প্রাক্তন সিভিল সার্জন ও বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যুরোর লাইন ডিরেক্টর, চিকিৎসক এহসানুল করিম দৈনিক জাগরণকে বলেন, আসলে মৃতদেহ পরিবহনের গাড়ি আলাদা। অ্যাম্বুলেন্স শুধু রোগী পরিবহনে সীমাবদ্ধ। বেসরকারি হোক, আর যাই হোক, মৃতদেহ পরিবহন নিয়ে যদি কেউ উচ্চমূল্য আদায়ের পায়তারা করে, সেটা অত্যন্ত নীতিহীন কাজ।  

তিনি বলেন, আমাদের দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর লাশবাহী পরিবহন নেই। এজন্য বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে মৃতদেহ পরিবহন করেন। এটাও কিন্তু ঠিক নয়। মৃতদেহ বহনের জন্য লাশবাহী গাড়ি ব্যবহারই উত্তম। 

আরএম/টিএফ

আরও পড়ুন