• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯, ০২:৪১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯, ০২:৪৪ পিএম

টিআইবির গবেষণাপত্রে তথ্য

ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যাওয়ার কারণ অনিয়ম ও দুর্নীতি

ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যাওয়ার কারণ অনিয়ম ও দুর্নীতি
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান -ছবি : জাগরণ

ডে ঙ্গু  প রি স্থি তি

................

দুর্নীতি কারা করেছে, সরকার চাইলেই সেসব ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে পারে : ড. ইফতেখারুজ্জামান

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে মশা মারার ওষুধ ক্রয় থেকে শুরু করে মশা মারার সব  ধরনের ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। 

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমণ্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ সংক্রান্ত এক গবেষণাপত্রের নানা তথ্য তুলে ধরে টিআইবি।

 ‘ঢাকা শহরে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণাপত্র থেকে অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য যৌথভাবে উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষণা সেলের সদস্য মোহাম্মদ জুলকার নাইন ও মোস্তফা কামাল। 

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অবহেলা, অনিয়ম, ব্যক্তিস্বার্থ ও অব্যবস্থাপনাগত কারণে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা যায় নি। মশা নিয়ন্ত্রণে বাজেটে ঘাটতি ছিল না, কিন্তু প্রয়োগে সমস্যা ছিল। 

গবেষণাপত্রে বলা হয় ‘বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকলেও জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয় নি। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা না রেখে দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম শুধু রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রিক ও অ্যাডাল্টিসাইড পদ্ধতিনির্ভর। যা এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত নয় এবং দুর্নীতি-বান্ধব। ডেঙ্গুর প্রকৃত চিত্র চিহ্নিত, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট দফতর ও বিভাগের মধ্যে সমন্বয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ঘাটতি আছে। বিক্ষিপ্তভাবে লোক দেখানো অকার্যকর কার্যক্রম গ্রহণ এবং সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্য অংশীজনের মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা, অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে।  

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু পুরাতন রোগ। সে হিসেবে প্রকোপ ঠেকানোর ব্যবস্থা আরও আগেই নেয়া সম্ভব ছিল, কিন্তু তা করা হয় নি। এটা চরম অবহেলা। 

কীটনাশক ক্রয় প্রক্রিয়াতেও অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে টিআইবি। 

তারই তথ্য দিয়ে গবেষণাপত্রে বলা হয়- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দরপত্রে কীটনাশক বা কীটনাশকের উপাদান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট বিবরণ দেয়া হয় না। যথাসময়ে ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু ও সম্পন্ন না করায় উত্তর সিটি করপোরেশন কয়েক মাস কীটনাশক মজুদশূন্য ছিল। উত্তর সিটি করপোরেশনের দরপত্র বিজ্ঞপ্তির কোনোটিতে কীটনাশকের পরিমাণ উল্লেখ থাকলেও কোনোটিতে ছিল না, একইভাবে দরপত্রে অংশগ্রহণের যোগ্যতা কোনোটিতে থাকে, কোনোটিতে থাকে না। 

টিআইবি আরও জানায়, গত ৫ অর্থবছরে উত্তর সিটি করপোরেশন সিপিটিইউ পরিচালিত ইজিপি পোর্টালের মাধ্যমে মশক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কীটনাশক ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে উন্মুক্ত দরপত্র গ্রহণ করে।  কিন্তু দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তা না করে সরাসরি কার্যাদেশ প্রদান করে। কীটনাশনকের মানও ভাল ছিল না, অকার্যকর। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ডক ইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডকে প্রতি লিটার কীটনাশক ৩৭৮ টাকায় সরাসরি ক্রয়ের কার্যাদেশ দেয়ায় প্রতি লিটার কীটনাশক ক্রয়ে ১৬১ টাকা ক্ষতি হয়েছে। সে হিসাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কীটনাশক ক্রয় বাবদ মোট ক্রয়ের ৪০ শতাংশ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। 

কীটনাশকের মান নিয়ন্ত্রণ, মাঠ পর্যায়ের মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে বিভিন্ন অংশীজনের সমন্বয়, মশক নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনায়ও বেশকিছু অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা পেয়েছে টিআইবি। 

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, দুর্নীতি কারা করেছে, চাইলেই সেসব ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে পারে সরকার।

আরএম/এসএমএম

আরও পড়ুন