• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০১৯, ০৩:৩১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২১, ২০১৯, ০৩:৪০ পিএম

পুরুষদের জন্য বিশ্বে প্রথম কন্ট্রাসেপটিভ ইনজেকশন আনছে ভারত

পুরুষদের জন্য বিশ্বে প্রথম কন্ট্রাসেপটিভ ইনজেকশন আনছে ভারত
বিশ্বে প্রথম এমন ইঞ্জেকশন আনতে চলেছে ভারত - ছবি : শাটারস্টক (আনন্দবাজার)

স্বা স্থ্য  বা র্তা

......

● কনডম, পিলের চেয়ে এই ইনজেকশনের ক্ষমতা অনেক বেশি

● একবার গ্রহণ করলে প্রায় ১৩ বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে 

● ৯৭.৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই ফলাফল অনুকূলে

নির্বীজকরণ সম্ভব হবে, তবে লাগবে না কোনও ছুরি-কাঁচি। এবার সার্জারির মাধ্যমে পুরুষের নির্বীজকরণের বিকল্প এক ইনজেকশনের সন্ধান পেলেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা অসীম হবে বলেই তারা আশাবাদী। খবর ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের।

একটা সময় ছিল যখন মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্মনিয়ন্ত্রণের দায় বর্তাত শুধুমাত্র নারীর ওপর। সময় পাল্টানোর সঙ্গে বদলেছে জীবন দেখার দৃষ্টিভঙ্গিও। সেই বদলের হাত ধরেই কনডম, পিল ঢুকে পড়েছিল নিম্নবিত্তের বিছানাতেও। ভ্যাসেকটমিও বেশ পরিচিত হয়ে উঠছিল সমাজের নানা স্তরেই। এ বার সেই ঝক্কিও কমিয়ে দিতে এক ইনজেকশনের খোঁজ দিলেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর গবেষকরা। তাদের পরীক্ষিত এই ইনজেকশনটি বাজারীকরণ থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে। এরই মধ্যেই ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)-র অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এই ইনজেকশন।

আইসিএমআর-এর গবেষক আর এস শর্মা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ইনজেকশনটি বাজারে আনার জন্য দিনগুনছি আমরা। এরই মধ্যেই তিনটি ধাপে এর নানা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তিনটি ট্রায়ালও দেয়া হয়েছে। ৩০৩ জন পুরুষের ওপর এই ইনজেকশন প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে, ৯৭.৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই ফলাফল আমাদের অনুকূলে এসেছে। বাজারীকরণ হলে এটিই হবে পুরুষদের জন্য তৈরি বিশ্বের প্রথম কন্ট্রাসেপটিভ ইনজেকশন।’

ভারত সমেত নানা দেশেই এই বিষয় নিয়ে গবেষণা চলছে। আমেরিকার স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটে সম্প্রতি এই বিষয়ে সেই দেশের গবেষণা নিয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দাবি করে বলা হয়, ‘‘২০১৬ সালে আমেরিকা এই বিষয়ে অনেকটা এগিয়ে গেলেও তাদের তৈরি ইনজেকশনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া থাকায় তা বাজারীকরণ সম্ভব হয়নি।’’

এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দিকটি নিয়েই ভারতীয় বিজ্ঞানীরা সচেতন ছিলেন। অধ্যাপক আর এস শর্মা বলেন, ‘‘১৯৭০ সালে আইআইটি-র অধ্যাপক এস কে গুহ একটি পলিমারের সন্ধান দেন। সেই পলিমার নিয়েই ১৯৮৪ সাল থেকে গবেষণা চালাচ্ছে আইসিএমআর। বার বার পরীক্ষা, ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ, মানুষের ওপর প্রয়োগ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সব দিক নজরে রেখেই এই গবেষণা আমরা চালিয়েছি।’’

ভারত সরকারের প্রাক্তন পরিবারকল্যাণ সম্পাদক এ আর নন্দ বলেন, ‘সরকারের উচিত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এই বিষয়গুলো নিয়ে আরও বেশি করে প্রচারে জোর দেয়া। মানুষের মধ্যেও সচেতনতা বাড়ানো। পুরুষরাও যে গর্ভনিরোধনে এগিয়ে আসতেই পারেন, তাতে কোনও অসুবিধা নেই— এই প্রচার এখনও প্রয়োজন। তবেই এই ইনজেকশনের গুরুত্ব মানুষ বুঝবেন।’

কী ভাবে প্রয়োগ হবে এই ইনজেকশন?

এই ইনজেকশন প্রয়োগ সার্জারির চেয়ে অনেক সহজ ও কম কষ্টসাধ্য। লোকাল অ্যানাস্থেশিয়া করে এই পলিমারটি টেস্টিক্যালসের কাছে শুক্রাণু বহনকারী টিউবে প্রয়োগ করা হবে। শুক্রাণু নির্গমনকে বাধা দেবে এই ইনজেকশন। এক বার গ্রহণ করলে প্রায় ১৩ বছর পর্যন্ত কার্যকরী থাকবে এটি।

কনডম, পিল সমেত নানা গর্ভনিরোধকের চেয়ে এই ইনজেকশনের ক্ষমতা অনেক বেশি ও তা বহুলভাবে জনপ্রিয় হবে বলেই আশা বিজ্ঞানীদের।

এসএমএম

আরও পড়ুন