• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০১৯, ০৭:৩২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১, ২০১৯, ০৭:৩৩ পিএম

সেমিনারে বক্তারা

নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার পদ্ধতি সম্ভবনাময়

নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার পদ্ধতি সম্ভবনাময়
শিশুদের নিউমোনিয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন মতামত তুলে ধরছেন বিশেষজ্ঞরা -ছবি : জাগরণ

ঢাকার আইসিডিডিআর,বি মিলনায়তনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক এক সেমিনারে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য ‘ডে-কেয়ার’ নামক চিকিৎসা পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় বলে অভিমত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেখানে একইসঙ্গে বলা হয়, এ পদ্ধতি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত প্রচলিত চিকিৎসার ব্যবস্থার মতোই কার্যকর, নিরাপদ এবং বেশ ব্যয় সাশ্রয়ী।

রোববার (১ ডিসেম্বর) আইসিডিডিআর,বি সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ব্যাসেল এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেনটাকির সহযোগিতায় তীব্র নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নিয়ে গবেষণার ফলাফলের ওপর ওই সেমিনারে আয়োজন করে।

ইউনিসেফ, ইউবিএস অপটিমাস ফাউন্ডেশন, বটনার ফাউন্ডেশন, ইগল ফাউন্ডেশন, আইসিডিডিআর,বি এবং বাংলাদেশ সরকার গবেষণাটি পরিচালনায় সহায়তা করেছে।

সেমিনারে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ‘ডে-কেয়ার ব্যবস্থাপনা’র মাধ্যমে শিশুদের নিউমোনিয়ার একটি উদ্ভাবনমূলক চিকিৎসা পদ্ধতি-সংক্রান্ত গবেষণা ফলাফল তুলে ধরা হয়।

বিজ্ঞানীরা জানান, ডে কেয়ার ব্যবস্থাপনাটি তীব্র নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করে অক্সিজেনথেরাপি, ফ্লুইড, পুষ্টি ব্যবস্থাপনা এবং অ্যান্টিবায়োটিকের সমন্বয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত প্রচলিত চিকিৎসার ব্যবস্থার মতোই কার্যকর, নিরাপদ এবং বেশ ব্যয় সাশ্রয়ী।

বাংলাদেশের বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে ডে-কেয়ার ধারণাভিত্তিক নিউমোনিয়া ব্যবস্থাপনার এ পদ্ধতি বেশ সম্ভাবনাময়।

আইসিডিডিআর,বি-র ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ও গবেষেণাটির প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ড. নূর হক আলম ২০১৫ থেকে ২০১৯ সময়কালে সংঘটিত এই গবেষণা সম্পর্কে তার উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন ইউনিভার্সিটির স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের পিএইচডি শিক্ষার্থী ডা. মারুফা সুলতানা ওই পদ্ধতিটির ব্যয়-সাশ্রয়ী সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

পাথফাইন্ডার বাংলাদেশের প্রাক্তন কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির অ্যাডজাঙ্কট অধ্যাপক ড. হালিদা আক্তার এ সংক্রান্ত অন্যান্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফলসমূহ উপস্থাপন করেন। যেখানে দেখা গেছে, অপুষ্টিসহ বা ছাড়া তীব্র নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত প্রায় ৯০% শিশুর চিকিৎসা ডে-কেয়ার ক্লিনিকে নিরাপদভাবে করা যায়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রাক্তন পরিচালক ড. খালেদা ইসলাম কিভাবে এই মডেল সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সন্নিবেশিত করা যায় সে সম্পর্কে অভিমত ব্যক্ত করেন।

তীব্র নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় ডে-কেয়ার মডেলটির বিভিন্ন সম্ভাবনাময় দিক সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেনটাকির অধ্যাপক জর্জ ফুশ বলেন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু, তাদের পরিবারের সদস্য এবং সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য ডে-কেয়ার মডেলটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, তীব্র নিউমোনিয়া চিকিৎসায় ডে-কেয়ার মডেল এর ধারণা একটি ভাল উদ্যোগ, ভবিষ্যতে দেশব্যাপী এই মডেলটির প্রসারের উদ্দেশে আমরা শহর ও গ্রামাঞ্চলে এর পাইলট প্রকল্পের সম্ভাব্যতা খুঁজে দেখব।

বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)-র সভাপতি অধ্যাপক ডা. মঞ্জুর হোসেন এবং সুইজারল্যান্ডের ইউনিসেফ ফাউন্ডেশনের বোর্ডের সদস্য ড. ড্যানিয়েল ফ্রে অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন। এর আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিডিডিআর,বি’র নিউট্রিশন অ্যান্ড ক্ল্যিনিক্যাল সার্ভিসেস ডিভিশনের সিনিয়র ডিরেক্টর ড. তাহমিদ আহমেদ। 

আরএম/এসএমএম