• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯, ০৮:৪৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯, ০৮:৪৮ এএম

শীতজনিত রোগে সারাদেশে ৪৯ জনের মৃত্যু

শীতজনিত রোগে সারাদেশে ৪৯ জনের মৃত্যু
শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগাীদের সংখ্যা বাড়ছে-ছবি : হালিম মোহাম্মদ

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার পাশাপাশি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় সারাদেশে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে যান চলাচল ব্যহত হচ্ছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় শীতের কারণে ব্যহত হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম। বেশি দুর্ভোগে পড়েছে নিম্মআয়ের ও ছিন্নমূল মানুষ। বাড়ছে শীতকালীন নানা রোগব্যাধি।

স্বাস্থ্য অধিদফতর রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্যমতে,  এখন পর্যন্ত শীতকালীন রোগে ৪৯ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে এআরআইতে ১৬, ডায়রিয়ায় ৪ এবং অন্যান্য রোগে ২৯ জন। চট্টগ্রাম বিভাগেই মারা গেছেন ২২ জন। রংপুর বিভাগে ১৩ জন এবং বরিশালে ৫ জন মারা গেছেন। 

ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে ভিড় করছেন হাসপাতালে।

চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, জ্বর, টনসিল শীতের এসব রোগবালাইয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। ঝুঁকিতে রয়েছেন বৃদ্ধরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল, শিশু হাসপাতালে বিছানা খালি নেই। ঠাঁই নেই ওয়ার্ডগুলোতে। হাসপাতাল পরিচালকের নির্দেশক্রমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে কোনও রোগী ফেরত দেয়া হচ্ছে না। হাসপাতাল করিডোরে, বারান্দায় এবং সিঁড়িগোড়ায় মেঝেতে রোগী রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শীতে অসুস্থ হয়ে শিশু এবং বৃদ্ধরাই হাসপাতালমুখী হচ্ছেন। দু’একটা পরীক্ষা এবং ওষুধ ছাড়া সব কিছুই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করছে।

ঢামেকের পরিচালক ব্রি. জে. নাসির উদ্দিন আহমেদ সার্বক্ষণিক চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। 

স্বাস্থ্য অধিদফতর রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্য অনুযায়ী, ১৬ ডিসেম্বর (সোমবার) থেকে ২২ ডিসেম্বর (রোববার) সকাল ৮টা পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৫ হাজার ৭৭ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজার ৫১৪ জন ভর্তি হয়েছেন। শুধু তাই নয়, শীত শুরুর পর ১ নভেম্বর (শুক্রবার) থেকে ২২ ডিসেম্বর (রোববার) পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১ লাখ ৯১২ জন ভর্তি হয়েছেন। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ হাজার ৭৮৮ জন হাসপাতালে এসেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রাজেশ মজুমদার বলছেন, ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে নতুন নতুন কিছু রোগব্যধির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এর মধ্যে বেশি রোগব্যাধি হয় শীতকালে। এবারও শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সর্দি, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, বাত-ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ব্রংকাইটিস, টনসিলের ব্যথা ও প্রদাহসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শীতকালীন রোগব্যধিতে ৬ মাস থেকে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বেশী। সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যাই বেশি।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মঙ্গলবারের (২৪ ডিসেম্বর) মধ্যেই তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। তবে শীতের তীব্রতা কমতে শুরু হবে। পাশাপাশি বৃষ্টি হতে পারে। সংস্থাটি বলছে, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বলেন, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ম তাপমাত্রার পার্থক্য এখনও কম থাকায় সারাদেশেই ঠাণ্ডা অনুভূতি বেশি রয়েছে আগের মতোই। দু’একদিনের মধ্যে কমে যেতে পারে।

এইচএম/এসএমএম

আরও পড়ুন