• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২০, ০২:৩৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২২, ২০২০, ০৩:০০ পিএম

কোভিড-১৯

মৃত্যুর মিছিলে আরও ৩৮ জন

মৃত্যুর মিছিলে আরও ৩৮ জন
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা

আক্রান্তের ১০৭তম দিন 

.....

গত ২৪ ঘণ্টা দেশে মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এর মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। এ নিয়ে মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়াল ১ হাজার ৫০২ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে নতুন করে ৩ হাজার ৪৮০ জনের দেহে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৬ জন।

আইইডিসিআর এর বরাত দিয়ে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬৮৭ জন সহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৪০ হাজার ৭৫৫ জন। 

সোমবার (২২ জুন) দুপুরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে মোট ৬১ টি ল্যাবে গত ২৪ ঘন্টায় মোট ১৬ হাজার ২৮৭ টি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৫৫৫ টি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬ লাখ ২৭ হাজার ৭১৯ টি।

নমুনা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৩৮ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।

রোববার (২১ জুন) শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৫৩১ ও মারা যায় ৩৯ জন। 

গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা শুরু করে। ৮ মার্চ দেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম কোনও করোনা রোগী মারা যায়।

চলতি মাসের ১ জুন ২,৩৮১, ২ জুন ২,৯১১, ৩ জুন ২,৬৯৫, ৪ জুন ২,৪২৩, ৫ জুন ২,৮২৮, ৬ জুন ২,৬৩৫, ৭ জুন ২,৭৪৩, ৮ জুন ২,৭৩৫, ৯ জুন ৩,১৭১ জন, ১০ জুন ৩,১৯০, ১১ জুন ৩, ১৮৭, ১২ জুন ৩,৪৭১ ও  ১৩ জুন ২,৮৫৬, ১৪ জুন ৩,১৪১, ১৫ জুন ৩,০৯৯, ১৬ জুন ৩,৮৬২, ১৭ জুন ৪,০০৮, ১৮ জুন ৩,৮০৩, ১৯ জুন ৩,২৪৩ জন, ২০ জুন ৩,২৪০ ও ২১ জুন ৩,৫৩১ শনাক্ত হয়।

দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৫৩ জনের। সে তথ্য জানান হয় ১৬ জুনের বুলেটিনে। আর সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে ৪ হাজার ৮ জনের। এ তথ্য জানান হয় ১৭ জুনের বুলেটিনে।

বুলেটিনে বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. নাসিমা।

ভারতের পরিস্থিতি

গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮২১ জন। আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুও বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪৪৫ জনের। দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা এখন ১৩ হাজার ৬৯৯।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৩ হাজার ৯২৫ জন।

সারা দেশে মহারাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে মারা গেছে ৬ হাজার ১৭০ জন। দিল্লিতে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ১৭৫ জনের। গুজরাটে মারা গেছে এক হাজার ৬৬৩। এর পর তালিকায় রয়েছে তামিলনাড়ু (৭৫৭), পশ্চিমবঙ্গ (৫৫৫), উত্তরপ্রদেশ (৫৫০), মধ্যপ্রদেশ (৫১৫), রাজস্থান (৩৪৯), তেলঙ্গানা (২১০)।

৩০ জানুয়ারি কেরলে দেশের প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার পর সময় যত গড়িয়েছে ততই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাবা বসিয়েছে করোনা। প্রথম থেকেই করোনা সংক্রমণে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে এক লাখ ৩২ হাজার ৭৫ জন করোনা আক্রান্ত। সারা দেশে সংক্রমিতের সংখ্যার চার ভাগের এক ভাগই মহারাষ্ট্রে। এর পরেই রয়েছে দিল্লি। দেশের রাজধানীতে করোনা আক্রান্ত ৫৯ হাজার ৭৪৬। পাল্লা দিয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তামিলনাড়ুতেও। সেখানে আক্রান্ত ৫৯ হাজার ৩৭৭। গুজরাটে আক্রান্ত ২৭ হাজার ২৬০।

 ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে ফেলেছে উত্তরপ্রদেশ (১৭,৭৩১), রাজস্থান (১৪,৯৩০), পশ্চিমবঙ্গ (১৩,৯৪৫), মধ্যপ্রদেশ (১১,৯০৩) ও হরিয়ানা (১০,৬৩৫)।

দেশে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও অনেকটা বেড়েছে। ইতিমধ্যেই ২ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৫.৪৯ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি

যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়ীরা আবারও তাদের কার্যক্রম শুরু করায় এবং পুনরায় সব প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রচেষ্টার মধ্যেই দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক হারে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফ্লোরিডা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ফ্লোরিডা রাজ্যে শনিবার (২০ জুন) ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, যা টানা তৃতীয় দিনের মতো একক সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইথ ক্যারোলিনা, মিসৌরি, নেভাডা, অ্যারিজোনা, উটাহ এবং মন্টানাতেও এদিন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এর আগে সপ্তাহের প্রথমদিকে  ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, আলাবামা, ওকলাহোমা এবং ওরেগনে ব্যাপক হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়।

নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সিসহ ১০টিরও বেশি রাজ্যে করোনা সংক্রমণের নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও, শুক্র ও শনিবার উভয় দিনেই সারাদেশে নতুন করে ৩০ হাজারেরও বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে।

বিশ্ব পরিস্থিতি

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (২২ জুন) সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৯ লাখ ছাড়িয়েছে।

প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৬৩৬ জনের এবং সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৪ লাখেরও বেশি মানুষ।

জেএইচইউ এর তথ্য অনুসারে, সোমবার (২২ জুন) পর্যন্ত ব্রাজিল ও রাশিয়া যথাক্রমে ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪১ এবং ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৮৭৯ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।

রাশিয়ার পর সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত রোগীর তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৪ লাখেরও বেশি মানুষ এবং মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ২৫৪ জনের।

করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ২২ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৯ জনের।

যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ব্রাজিলে। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ২১৩টিরও বেশি দেশে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এসএমএম

আরও পড়ুন