• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২০, ০২:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ২৭, ২০২০, ০৪:২২ পিএম

ভিটামিন সি কেন খাবেন?

ভিটামিন সি কেন খাবেন?

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বুস্ট করে ভিটামিন সি। করোনায় ভিটামিন সি যুক্ত খাবারে নজর দিতে জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু শীতে করোনার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে, ভিটামিন সি-এর প্রয়োজনীয়তাও বেড়ে যাচ্ছে। ওষুধের চেয়ে খাবারের মাধ্যমে এই ভিটামিন নিলে দ্বিগুণ পুষ্টি পায় মানবদেহ।

হৃদরোগ, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা কিংবা ত্বকের সমস্যা রোধে সাহায্য করে ভিটামিন সি। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

শীতকালের ফলগুলো এখন সারাবছরই পাওয়া যায়। শীতের সময়টাতে ফলন বেশি হওয়ায় ফলগুলোর তুলনামূলক সাধ্যের মধ্যেই থাকে। যা সব শ্রেণির মানুষের জন্য সহজলভ্য। ইমিউনিটি বুস্ট বা রোগ প্রতিরোধে শীতের এ সময়টাতে ভিটামিন সি যুক্ত ফলগুলো খাওয়ার পরামর্শ ডাক্তারদের। শীতের কোন ফলে কত পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে তা নিয়ে এ আয়োজন।

বেদানা
একটি বেদানায় ভিটামিন সি থাকে ১০ মিলিগ্রাম। লাল রঙের এই ফলটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। বেদানা জুস করেও খেতে পছন্দ করেন অনেকে। এটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে, ইমিউনিটি সিস্টেম মজবুত করতে, কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে, হার্টে অক্সিজেন সরবরাহ ও রক্ত চলাচলে, অ্যাসিডিটি কমাতে, অন্তঃসত্ত্বার জন্যে উপকারি এ ফলটি। গবেষণায় জানা যায়, লো-অক্সিজেন বা রিডিউসড ব্লাড ফ্লো-এর কারণে ব্রেন ইফেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা থেকে বাচ্চাকে রক্ষা করে বেদানা।

আঙুর
আঙুরে ভিটামিন সি আছে ২৮ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের দেয়। কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের রোগ প্রতিরোধ করে। আঙুরের বীজ ও খোসায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালিগুলোকে সচল রাখে। আঙুরের ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের সহায়ক ও ইনসুলিন বৃদ্ধি করে। আঙুরের জুসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লামিটরি, যা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রদাহ দূর করে ক্যানসার রোগ থেকে মুক্তি দেয়। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, ডায়রিয়া, ত্বক ও মাইগ্রেনের সমস্যাও দূর করে এ ফলটি।

স্ট্রবেরি
স্ট্রবেরিতে ৫১ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে। ভিটামিন, ফাইবার, মিনারেল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই ফলটিতে জিরো কোলেস্টেরল ও ফ্যাট রয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, স্ট্রবেরিতে যে পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে, তা আমাদের দৈনন্দিন চাহিদার প্রায় অর্ধেক। প্রতিদিন দুই কাপ স্ট্রবেরি খেলে ফলে শরীরের চাহিদার ১০০ শতাংশ ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি-তে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই সুস্থ থাকতে স্ট্রবেরি খান।

পেয়ারা
একটি গোটা পেয়ারায় ২১০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। তাই পেয়ারাকে ভিটামিন সি-এর সবচেয়ে ভালো উৎস বলা যেতে পারে। পেয়ারা খেতে খুবই সুস্বাদু। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। পেয়ারার বিশেষ ৫টি গুণ রয়েছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে, পেটের অসুখে প্রতিরোধে ও ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে এ ফলটি।

কমলালেবু
গোটা একটি কমলায় প্রায় ৭০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। এই ফল খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনই এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিকর উপাদান। এতে ভিটামিন সি ছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার রয়েছে। কমলার মতো অন্যান্য ফল, যেমন মাল্টা বা জাম্বুরায়ও ভিটামিন সি অনেক। ১০০ গ্রাম মাল্টায় আছে ৩২ মিলিগ্রাম এবং ১০০ গ্রাম জাম্বুরায় আছে ৬১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।

কিউই
গবেষণায় দেখা গেছে, ১০০ গ্রাম কিউই ৭৪ দশমিক ৭ গ্রাম ভিটামিন সি সরবরাহ করে। এটি মূলত চীন দেশের ফল। ফলের বাইরের রঙ গোল্ডেন ব্রাউন এবং ভেতর সবুজ। ভিটামিন-সি ও পটাশিয়াম থাকায় স্বাস্থের জন্য় খুবই উপকারি। প্রতিদিন যদি ২টি করে কিউই ফল খাওয়া যায় তাহলে অক্সিডেটভ স্ট্রেস হ্রাস পায়। হৃদরোগের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এই ফল। এছাড়াও কিউইতে ম্য়াগনেশিয়ামের থাকায় হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। এই ফলটি বর্তমানে নিউজিল্য়ান্ডের জাতীয় ফল।