• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২১, ০১:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৬, ২০২১, ০১:৩২ পিএম

করোনায় কখন হাসপাতালে যাবেন? জেনে নিন

করোনায় কখন হাসপাতালে যাবেন? জেনে নিন

করোনা সংক্রমণ বাড়ছেই লাগামহীনভাবে। প্রতিদিন শনাক্তের সংখ্যা এখন হাজারের ঘরে। সুনির্দিষ্ট কোনো উপসর্গ ছাড়াই দেহে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে রোগটি। আক্রান্তদেরও মূহুর্তেই ঘায়েল করে দিচ্ছে। হাসপাতালেরও ঠাঁই হচ্ছে না অনেক রোগীর। হাসপাতালে একটি বেড কিংবা একটি আইসিইউর জন্য় অ্যাম্বুলেন্স করে স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ছুটে চলছেন অনেকে।

চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা রোগটি মহামারি হলেও এই রোগে আক্রান্ত ৯০ শতাংশ রোগী ঘরে থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব। বাকি ১০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে আইসিইউ কিংবা অক্সিজেনের দরকার হয়। তাই সাধারণ উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

কখন হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে এই বিষয়েও জানতে বলেছেন। চিকিৎসকদের মতে, স্বল্প লক্ষণ কিংবা মাঝারি লক্ষণের কোভিড-১৯ রোগীদের একটি বড় অংশ বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করা যায়। শরীরের উপসর্গ বুঝেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। এজন্য় দরকার সচেতনতা।

অনেকে সাধারণ উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, অনেকে আবার করোনার লক্ষণ ভালো হয়ে যাওয়ার পরও হাসপাতালে থেকে যান। এমনটি মোটেও উচিত নয়। হাসপাতালের যে বেডটি আপনি নিজের জন্য ধরে রেখেছেন তা হয়তবা অন্য এক রোগীর জন্য বেশি প্রয়োজন। হাসপাতালে বেড খালি না পেয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অনেক রোগী হয়তো অ্যাম্বুলেন্সেই প্রাণ হারাচ্ছেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণে কোন উপসর্গ হলেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে এ বিষয়ে সঠিক সচেতনতা দরকার। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কখন হাসপাতালে যাওয়া উচিত, এ বিষয়ে জানাবো আজকের আয়োজনে।

  • প্রচণ্ড দুর্বলতা, খাওয়া দাওয়া করতে পারছেন না। এজন্য় আরও দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন। তবে বুঝতে হবে করোনার সংক্রমণ শরীরে মাঝারি থেকে গুরুতর পর্যায়ে যাচ্ছে।
  • জ্বর ১০২ ডিগ্রির নিচে নামছে না। ওষুধ খাওয়ার পরও জ্বরের তাপমাত্রা কমছে না।
  • চোখে দেখতে সমস্যা হচ্ছে। হঠাৎ করে এমনটা হতে পারে।
  • রক্তচাপ কমে ৯০ থেকে ৬০ এর নিচে চলে গেলে।
  • কোভিড-১৯  ব্রেণে প্রভাব ফেলতে পারে। একে বলে এনসেফালাইটিস। এই উপসর্গে মানুষটি কনফিউসড হয়ে যায়। মানুষ চিনছে না, আবোল তাবোল বলছে। যখন জ্বর নেই তখনও যদি এমন হয় তবে হাসপাতালে যেতে হবে।
  • কোভিড হৃদপিণ্ডের মাংসপেশিতে আক্রান্ত করতে পারে। এটি মায়োকার্ডাইটিজ বলা হয়। বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হবে।
  • কোভিড ফুসফুসে আক্রান্ত হয়। প্রচণ্ড শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। বুকে নিউমোনিয়া হলে যেমন উপসর্গ দেখা যায় এক্ষেত্রেও এমনটা হয়।
  • অক্সিজেন যদি ৯২ এর নিচে নেমে যায় সেটিও একটি লক্ষণ হতে পারে। কোভিড লক্ষণ থাকলেই অক্সিমিটারে অক্সিজেন মাপবেন। অন্যথায় মাপা ঠিক নয়।
  • পেটে ব্যথা হতে পারে। হঠাৎ যদি এমন পেটে ব্যথা হয় যা আপনি সহ্য করতে পারছেন না। তখন হাসপাতালে যেতে হবে। কোভিডের কারণে পেটের ভেতর রক্ত জমাট বাধার সম্ভবনা রয়েছে। এর কারণে এমনটা হতে পারে।
  • অনেকের বমি হতে পারে। যদিও বমি যেকোনো ভাইরাস জ্বরের সঙ্গে হতে পারে। পাকস্থলির প্রদাহ থেকে বমি হতে পারে। কিন্তু ওষুধ খাবার পরও বমি যদি বন্ধ না হয় এবং এর কারণে আপনি দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে হাসপাতালে যেতে হবে।
  • পানিশূণ্যতা হতে পারে। পানিশূণ্যতার কারণে যদি আপনার প্রস্রাবের পরিমান কমে যায়। এর মানে হচ্ছে কিডনিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এমন উপসর্গেও হাসপাতালে দ্রুত যেতে হবে।
  • কোভিড-১৯ এ রক্ত জমাট বাঁধে শরীরের বিভিন্ন অংশে। হঠাৎ যদি দেখেন পায়ের একটি অংশে অনেক ব্যথা হচ্ছে, সেই অংশে যদি ফুলে যায় তবে বুঝতে হবে রক্ত জমাট বেঁধেছে। তখন হাসপাতালে যেতে হবে।

এই লক্ষণগুলো নিজেরা খুজতে যাবেন না। যদি সত্যিই এমন উপসর্গগুলো থাকে তবেই হাসপাতালমুখী হবেন। এর আগ পর্যন্ত একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধায়নে থাকুন। যার নিয়মিত গাইডলাইনে আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। মনে রাখবেন, মানসিকভাবে পজিটিভ থেকে ৯৮ শতাংশ মানুষই করোনাভাইরাসকে উপেক্ষা করে সুস্থ হতে পারেন।