• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২১, ০২:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১২, ২০২১, ০২:৫৭ পিএম

আঞ্জনি অবহেলায় নষ্ট হতে পারে চোখ

আঞ্জনি অবহেলায় নষ্ট হতে পারে চোখ

গ্রীষ্মকালে মাথা চাড়া দিয়ে উঠে বিভিন্ন রোগ। পেট অসুখ, গরমের ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় বড়-ছোট সবাই। চোখও রেহাই পায় না। গরমে বর্ষাকালেই চোখ ওঠার প্রকোপও বাড়ে। যাকে বলে কনজাংটিভাইটিস বা চোখের আবরণ কনজাংটিভার প্রদাহ। কিংবা আঞ্জনি বা আইলিড সিস্টও হতে পারে।

স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, চোখের কোনো গ্রন্থিতে তেল জমে থাকলে গ্রন্থিটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আঞ্জনির সমস্যা দেখা দেয়। রোগটি ছোঁয়াচে। দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। চোখে ব্যথার পাশাপাশি অনেকেরই এই সময়ে চোখে পুঁজ হয়। রক্তক্ষরণও দেখা যায় অনেকের ক্ষেত্রে।

চিকিৎসক এই রোগটিতে অবহেলা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা জানান, ঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে এই সমস্য়ায় চোখ নষ্ট পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, আঞ্জনি হলেই যে কড়া ডোজের ওষুধ বা ড্রপ ব্যবহার করতেই হবে এমন নয়। বরং আঞ্জনি হওয়ার পর পরই ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করলে সেরে যাবে।

কনজাংটিভাইটিসের বা চোখ ওঠা বা আঞ্জনির লক্ষণ হলো চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা, খচখচ করা বা অস্বস্তি। প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়, তারপর অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। চোখের নিচের অংশ ফুলে ও লাল হয়ে যায়। চোখ জ্বলে ও চুলকাতে থাকে। আলোয় চোখে আরও অস্বস্তি হয়।

কেন হয়?

আক্রান্ত রোগীর যেকোনো বস্তু যেমন রুমাল, তোয়ালে, বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। এই ভাইরাসটি বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে যারা থাকে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। করোনা পরিস্থিতিতে চোখ ওঠা নিয়ে আরও সতর্ক হতে হবে।

কীভাবে সারবে

  • তাওয়া গরম করে পরিষ্কার, শুকনো কাপড়ে সেই তাপ নিন। এবার গরম কাপড়টি চোখে দিন। কয়েকবার এটি করলে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মরে যাবে। গ্রন্থির তেলও শুকিয়ে গিয়ে আরাম পাবেন।
  • পেয়ারা পাতায় রয়েছে জীবাণু ধ্বংস করার ক্ষমতা। এই পাতাকে শুকনো তাওয়ায় নেড়ে তা একটি নরম কাপড়ে জড়িয়ে ধরে থাকুন চোখের ওপর। দিনে ৩ বার এটি করুন। আরাম পাবেন। এটি আবারো আঞ্জনি সংক্রমণ হওয়া থেকেও দূরে রাখবে।
  • উচ্চ মাত্রায় অপকারী ব্যাকটিরিয়া ধ্বংস করে এমন তেল ব্যবহার করতে পারেন। যেমন ক্যাস্টর অয়েল। এটি ব্যবহার করে অতি সহজে চোখের আঞ্জনি দূর করা সম্ভব। ক্যাস্টর অয়েলে রয়েছে প্রদাহ দূর করার ক্ষমতা। আক্রান্ত চোখে প্রথমে গরম ভাপ নিন ১০ মিনিট। তারপর একটি তুলোয় অয়েল মাখিয়ে তা আলতো করে চোখের পাতায় লাগিয়ে নিন। ব্যথা কমে যাবে।
  • সাবানপানি দিয়ে কিছুক্ষণ পরপরই হাত পরিষ্কার করে নিন। ময়লা হাত এটির সংক্রমণ ছড়িয়ে দিবে।
  • কোনো কারণে চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিন। টিস্যু পেপারটি অবশ্যই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিন।
  • চোখ উঠলে চশমার ব্যবহার করুন। এতে চোখে স্পর্শ করা কমবে। ধুলাবালি, ধোঁয়া থেকে চোখ রক্ষা পাবে। আলোয় অস্বস্তিও কমবে।
  • অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ বা মলম জাতীয় মেডিসিন ব্যবহার করতে পারেন।
  • নিজের ব্যবহার করা প্রসাধনসামগ্রী ও ব্যক্তিগত কাপড়চোপড় অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেবেন না। একইভাবে অন্যের ব্যবহৃত প্রসাধনসামগ্রী ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রোগীর ব্যবহার করা চলবে না।
  • চোখ ঘষে চুলকাবেন না। অন্য কারও আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত হবে না। এতে আবার কনজাংটিভাইটিস হতে পারে।
  • যাদের বারবার আঞ্জনি হয়, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রক্তে শর্করা ঘাটতি হলে এটি হতে পারে। পরীক্ষা করে নিন।