• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২১, ১২:১৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১, ২০২১, ১২:১৪ পিএম

ফিল্ড হাসপাতাল হচ্ছে না এখনই

ফিল্ড হাসপাতাল হচ্ছে না এখনই
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)—এর সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের কথা জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তবে তিনি কোথায় কয়টি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

জানা গেছে, ফিল্ড হাসপাতাল থেকে সরে আসছে সরকার।

গত ৯ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব কনভেনশন সেন্টার পরিদর্শনে দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিঞা ঢাকায় বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টারসহ পাঁচটি স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের ঘোষণা দেন। অন্য চারটি ফিল্ড হাসপাতাল কোথায় স্থাপন করা হবে সে সম্পর্কে কিছুই বলেননি সচিব।

পরদিন ১০ জুলাই পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বঙ্গমাতা কনভেনশন সেন্টারে এক হাজার ২০০ শয্যার ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের ঘোষণা দেন। কিন্তু অন্য চারটি ফিল্ড হাসপাতালে বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীও কিছু বলেননি।

তবে স্বাস্থ্য বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম ও পুলিশ কনভেনশন সেন্টার, গুলশানের শুটিং ক্লাবের ভবন এবং টিকাটুলীতে এফবিসিসিআইর ১৩ তলার একটি ভবনে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ঢাকায় ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের জন্য পাঁচটি স্থাপনা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। বিশেষ করে ভবনগুলোতে যন্ত্রপাতি স্থাপন করে রোগী চিকিৎসার উপযোগী করতে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় মাস সময় লাগবে।

দ্রুততম সময়ে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে রোগী চিকিৎসার উপযোগী করা সম্ভব হবে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে বড় পরিসরে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়।

আপাতত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বঙ্গমাতা কনভেনশন সেন্টারে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে গত ১৪ জুলাই বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট পরিবীক্ষণ কমিটি গঠন করে এ-সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই ফিল্ড হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হয়নি।

অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রথম ধাপে বরাদ্দের টাকা ছাড় করা হয়েছে। উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ায় কেনাকাটা সময়সাপেক্ষ। দ্রুততম সময়ে হাসপাতালটি চালু করতে হলে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। এজন্য সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। ওই অনুমোদন পাওয়ার পর দ্রুততম সময়ে যন্ত্রপাতি ক্রয় করে হাসপাতালটি চালু করা হবে।’

কবে নাগাদ হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।

স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র জানায়, দ্রুতই এই হাসপাতালটি চালু হচ্ছে না। কারণ গত সপ্তাহের শেষ দিকে হাসপাতালটির যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ১৬ কোটির কিছু বেশি টাকা ছাড় করা হয়েছে। এখন সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় কেনাকাটা করার জন্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে। ওই অনুমোদন পেতে চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। এরপর আগামী সপ্তাহে কেনাকাটার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ক্রয়কৃত ওই সব সামগ্রী পেতে আরও তিন থেকে চার সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতে পারে। যন্ত্রপাতি আসার পর তা স্থাপন করতে হবে। সব দ্রুততম সময়ে হলেও হাসপাতালটি চালু হতে এক মাসের মতো সময় লাগতে পারে।

বঙ্গমাতা কনভেনশন সেন্টারের বাইরে ঢাকার গুলশান শুটিং ক্লাব ভবনে আরও একটি ফিল্ড হাসপাতাল চালুর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেন, গুলশান শুটিং ক্লাব ভবনটি কী প্রক্রিয়ায় হাসপাতালে রূপান্তর করে রোগীর চিকিৎসার আওতায় আনা যায়, তা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে সেটি যাতে দ্রুততম সময়ে চালু করা যায়, তার একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা হচ্ছে। অন্য যে তিনটি ভবনে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল, তা আপাতত বাদ রাখা হয়েছে। তবে প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে সেগুলোকে আবারও বিবেচনায় আনা হতে পারে।

জাগরণ/এসএসকে/এমএ