• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১, ১০:৪০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১, ১০:৪০ এএম

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ৪৫% শিশু-কিশোর

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ৪৫% শিশু-কিশোর
ফাইল ফটো

ঢাকায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যার কাছাকাছি উঠে গেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য বলছে, রোববার পর্যন্ত ঢাকার সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি ছিল এক হাজার ৫২৯ জন। সেখানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উঠে গেছে এক হাজার ৭৯ জনে। এ ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে বেশি করোনা রোগী আর বেসরকারিতে বেশি ডেঙ্গু রোগী। সরকারি হাসপাতালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী রয়েছে মিটফোর্ড হাসপাতালে।

সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী রয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রশিদ উন নবী বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে এ বছর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এখনও প্রতিদিন অন্য হাসপাতালের চেয়ে এখানে বেশি রোগী আসছে। বড়দের পাশাপাশি শিশু ডেঙ্গু রোগীও আছে। বিশেষ করে আজ (গতকাল) মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ২৪৮ জন। তাদের মধ্যে ৩৮ জনই শিশু।’

তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগী আগের তুলনায় বেড়েছে। যদিও এত দিন অন্য হাসপাতালগুলোতে করোনার রোগীর চাপ বেশি থাকায় ডেঙ্গু রোগীরা বেশির ভাগই এখানে আসত। এখন অন্য হাসপাতালেও যাচ্ছে।

শিশু রোগীদের তথ্যের সঙ্গে অধ্যাপক ডা. সৈয়দ শফি আহম্মেদের কথার প্রতিফলন দেখা যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণেও। ওই তথ্য অনুসারে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩১৯ রোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫.৮ শতাংশ রোগীর বয়স এক থেকে ১০ বছরের মধ্যে। এরপর ২২.৭ শতাংশের বয়স ২১-৩০ বছর, ১৯.১ শতাংশের বয়স ১১-২০ বছর, ১৬ শতাংশের বয়স ৩১-৪০ বছর, ৬.৩ শতাংশের বয়স ৪১-৫০ বছর, ৫.৯ শতাংশের বয়স ৫১-৬০ বছর এবং ষাট বছরের ওপরে রয়েছে ৪.৩ শতাংশ রোগী।

চলতি মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে গত মাসের চেয়েও দ্রুতগতিতে। এ বছরে এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৬৯৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় গত মাসে। গড়ে দিনে রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ২৪৮। কিন্তু এই মাসে দিনে গড়ে ২৯৩ জন করে গত ১২ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে তিন হাজার ৫১৯ জন ডেঙ্গু রোগী।

গত মাসের তুলনায় গতকাল পর্যন্ত এই মাসে মৃতের সংখ্যা কমের দিকেই রয়েছে। অর্থাৎ গত মাসে মোট মারা যায় ৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী। এই মাসে রোববার পর্যন্ত মারা গেছে আটজন।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু রোগীর বিস্তার খুব দ্রুত ঘটছে। সবাইকে সতর্ক থাকা উচিত। শুধু করোনা নিয়ে থাকলে হবে না, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আরো জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে সুরক্ষার বিষয়ে মানুষকে আরো সচেতন হতে হবে।

এই বিশেষজ্ঞ বলেন, করোনা মহামারি ও ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে। তাই জ্বর হলেই পরীক্ষা করাতে হবে। তবে পরীক্ষায় ডেঙ্গু পজিটিভ হলেই হাসপাতালে ছুটতে হবে এমন নয়। প্লাটিলেট কী পর্যায়ে আছে, অন্য কোনো জটিলতা বা একাধিক রোগ আছে কি না সেগুলো বিবেচনায় নিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা হচ্ছে ফ্রি। আমরা হাসপাতালগুলোতেও বলে দিয়েছি, জ্বর নিয়ে রোগী এলেই প্রথমে ডেঙ্গু টেস্ট করাতে হবে। এ জন্য সব হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডেঙ্গু টেস্ট কিট দেয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলো নিজেরাও কিনছে। তবে আশা করা যাচ্ছে, আগামী মাস নাগাদ ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে।’

জাগরণ/এসএসকে/এমএ