• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৯, ০৯:০৯ পিএম

ভবঘুরে হয়ে আছে জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র

ভবঘুরে হয়ে আছে জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র

 

ভবঘুরের মতো ঘুরছে জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র। এর কার্যালয় এখান থেকে ওখান পর্যন্ত ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত। শেষে নিজস্ব ভবন নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ পেলেও উপযুক্ত জায়গা মিলছে না। এখানে-সেখানে জায়গা খুঁজতে খুঁজতে এ কেন্দ্রের প্রকৃত কাজ কার্যত বন্ধ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এর নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ও বর্তমানে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আসাদুল ইসলাম দৈনিক জাগরণকে বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের দেয়া ৮ কোটি টাকা অলস পড়ে আছে। কিন্তু জায়গা মেলানো যাচ্ছে না।

সারাদেশের ব্ল্যাড ব্যাংক নিয়ন্ত্রণসহ দেশের সব হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন মনিটরিং, সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্দেশে জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে এর কার্যক্রম পরিচালিত হতো। একসময় মাত্র ছোট ছোট দুটি কক্ষে আবদ্ধ হয়ে পড়ে এই কেন্দ্র। বহু ঠাসাঠাসি করে কেন্দ্রের কর্মীরা কাজ করতেন। অবস্থার উন্নতি নেই এখনও।

অধ্যাপক আসাদুল ইসলাম    -ছবি : জাগরণ

অধ্যাপক আসাদুল ইসলাম বলেন, ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নতুন ভবন হচ্ছে। নতুন ভবনে এই হাসপাতালের নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র হবে। পুরাতন ভবনে থাকা কেন্দ্রটিই নতুন ভবনে স্থানান্তর হবে। সেই হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি, পুরাতন ভবনস্থ নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের যে অংশ তারা ছেড়ে দেবেন, সেটা যেন জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের জন্য দেয়। পরিচালক তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তারপরও বলব জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের যে পরিমাণ দায়িত্ব-কাজ, তা করতে হলে পৃথক ভবনের বিকল্প নেই।

জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সরকার মহাখালীস্থ সাততলা বস্তির কিছু জায়গা বরাদ্দ দিয়েছিল। সেই জায়গায় বহু আগ থেকে অবৈধ বসবাস। তাছাড়া জায়গাটি নিয়ে জটিল আইনি প্যাঁচ রয়েছে। এজন্য সেই জায়গার আশা নিভে গেছে। এ স্থানে ১৬ তলা ভবনের নকশাও চূড়ান্ত করা হয়েছিল। পরে নির্মাণের অপেক্ষায় জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে (আইপিএইচ) বহুতল ভবনে জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা করা হয়। কিন্তু ভবন এখনও নির্মাণ না হওয়ায় সেই চিন্তা-ভাবনা নিস্তেজ।

বর্তমানে দেশে ২১৯টি সরকারি ও ১৪৫টি অনুমোদিত বেসরকারি নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র আছে। তবে দেশজুড়ে অবৈধ নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র হাজার খানেক বলে স্বাস্থ্য অধিদ্প্তরের কাছে তথ্য আছে। এসব দেখাশোনার দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেরই। নিজস্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকাসহ প্রয়োজনীয় লোকবল সংকটের কারণে জেনেশুনেও এসবের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান পদক্ষেপে যেতে পারে না প্রতিষ্ঠানটি।

অধ্যাপক আসাদুল ইসলাম বলেন, যদি জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালক কেন্দ্র সঠিকভাবে চলতে পারে, তখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে ওইসব কাজ কেন্দ্রের লোকজনই করবে।

আরএম/ এফসি