• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৯, ২০১৯, ০৮:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৯, ২০১৯, ০৮:২২ পিএম

লোকসভা নির্বাচনের বুথফেরত সমীক্ষা

দিল্লিতে ঝড়, বাংলায় উত্থান আর উত্তরপ্রদেশে গদিহারা বিজেপি

দিল্লিতে ঝড়, বাংলায় উত্থান আর উত্তরপ্রদেশে গদিহারা বিজেপি

যুদ্ধ শেষ, এবার পালা ফল ঘোষণার। কে জিতবে? কে হারবে? ভোট মিটতেই শুরু হয়ে গিয়েছে হিসেব নিকেশ। কার দখলে থাকবে দিল্লির সিংহাসন? কে হতে চলেছেন দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী? এই সব প্রশ্নের প্রকৃত উত্তর জানতে এখনও ৩ দিন বাকি। ২৩ মে ভোট গণনার দিন বেলা গড়ালেই লোকসভার লড়াইয়ের ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু তার আগে আজ শেষ দফার লোকসভা নির্বাচন মিটতেই ফলাফলের আগাম আভাস পেতে নজরে এক্সিট পোল বা বুথ ফেরত সমীক্ষা। বলে রাখা দরকার, এই এক্সিট পোল নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোটারের উপর করা সমীক্ষার নির্যাস। ভারতের লোকসভা নির্বাচন শুরু হয় ১১ এপ্রিল। তার পর থেকে সারা দেশে একে একে সাত দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলার পর আজই শেষ হলো ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্যায়ের ভোটগ্রহণ। নির্বাচন কমিশনের সূচি অনুযায়ী আজ সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়েছে ভোটগ্রহণ।

কিন্তু কার দখলে যাচ্ছে দিল্লি? ফের কি রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঘাঁটি গাড়বেন নরেন্দ্র মোদী? নাকি সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলঘোষণার পর সাত রেসকোর্স রোডে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির দখল নেবেন রাহুল গান্ধী? নাকি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলোর তরফে অন্য কেউ বসবেন প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে? নিশ্চিতভাবে সেই উত্তর পাওয়া যাবে আগামী ২৩ মে। কিন্তু তার আগেই একটা আঁচ পাওয়া যাবে আজকেই, বুথফেরত সমীক্ষায়। যা অনেক সময়ই সঠিক পূর্বাভাস দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে। সারা পৃথিবীতেই এখন পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে কীভাবে আরও নির্ভুল করা যায় বুথফেরত সমীক্ষাকে। ব্যতিক্রম নয় ভারতও। মনে রাখতে হবে- ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে ভোটগণনার আগেই একটি সমীক্ষার কথা, যে সমীক্ষা ভোটের ফলাফলের সঙ্গে প্রায় মিলে গিয়েছিল। ‌‘টুডে চানক্য’ সমীক্ষায় বলা হয়েছিল এনডিএ পেতে চলেছে প্রায় ৩৪০টি আসন। পাশাপাশি বলা হয়েছিল বিজেপি পেতে চলেছে ২৯১ আসন। পরে দেখা গিয়েছিল, এই ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে আসল ফলাফলের কোনো ফারাক নেই। ‘টুডে চানক্য’ ফল মিলিয়ে দিলেও অনেকেই আবার আসল ফলাফলের ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেনি।

উনিশের নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত কি মোদীবাহিনীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে কংগ্রেস বা বিরোধীদের মহাজোট? নাকি বিরোধীদের মহাজোটকে টেক্কা দিয়েই ‘তিনশোরও বেশি আসন’ নিজেদের হাতে রাখতে পারবে গেরুয়াবাহিনী? ২৩ মে-র চূড়ান্ত ফলের আগে এই উত্তর মিলবে না, তবে আভাস মিলতে পারে এক্সিট পোল থেকে। লোকসভা নির্বাচনে এবার প্রথম থেকেই বিশেষ নজরে রয়েছে বাংলা। পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ’-এর লক্ষ্যপূরণ আদৌ কি হবে নাকি, অমিত শাহের ২৩টি আসনে পদ্মফুল ফোটানোর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে? সেই ইঙ্গিতও মিলতে পারে এক্সিট পোল থেকে।

সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনেও আজকের পরই জানা যাবে কার দখলে যাচ্ছে দিল্লি, তার ইঙ্গিত। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পাবে বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফল। এই লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন সমীক্ষা সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে সংবাদ মাধ্যম। তার মধ্যে অন্যতম এবিপি-সিএসডিএস বুথফেরত সমীক্ষা। এছাড়া ফলাফল জানা যাবে নিউজ ১৮- আইপিএসওএস, ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস, টাইমস নাও-সিএনএক্স, নিউজ এক্স-নেতা, রিপাবলিক-জন কি বাত, রিপাবলিক-সিভোটার, এবিপি-সিএসডিএস এবং টুডে চাণক্য-র করা বুথফেরত সমীক্ষা থেকেও।

বুথফেরত সমীক্ষার কাজ শুরু হয়ে যায় প্রথম দফার ভোটগ্রহণের পরই। ভোট দিয়ে বেরনোর পর যারা ভোট দিয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেই কী ফলাফল হতে চলেছে তার একটা আন্দাজ পাওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সবকটি দফার ভোটগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেই ফলাফল প্রকাশ করা হয় না। কারণ, তা প্রভাবিত করতে পারে, যেখানে ভোট তখনও হয়নি, সেখানকার ভোটারদের।

এই কারণেই বুথফেরত সমীক্ষার কাজ শুরু হয়ে গেলেও তা নিজেদের কাছেই রাখে সংবাদ মাধ্যমগুলো। এই নির্বাচনেও বুথফেরত সমীক্ষার কাজ শুরু হয়ে যায় ১১ এপ্রিল থেকেই। কিন্তু তা সামনে আসবে আজকেই, সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরই। কারণ, ১৯ মের আগে বুথফেরত সমীক্ষার ফল প্রকাশ করতে পারবে না কোনো টেলিভিশন, রেডিয়ো, কেবল নেটওয়ার্ক, ওয়েবসাইট কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া- এমনটাই নির্দেশ ছিল নির্বাচন কমিশনের।

তাই ২৩ মে আসল ফলাফল কী হচ্ছে তা জানা গেলেও, দেশবাসীর মন বুঝতে আপাতত ভরসা বুথফেরত সমীক্ষাতেই। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকেই সামনে আসবে দিল্লি কার কাছে যাচ্ছে তার ইঙ্গিত।

বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে ৫৪৩ টির মধ্যে ৩০০-র বেশি আসনে জিতে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ (ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স) সরকার। অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার (২৭২) থেকে বেশ অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে এনডিএ। ১৯৮৯ সাল থেকে জোট সরকারই ক্ষমতায় থেকেছে ২০১৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত। ২০১৪ সালে ২৮২ টি আসনে জিতে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে এনডিএ সরকার। এক্সিট পোল বলছে সেই ধারা অব্যহত থাকছে এবারও।

টাইমস নাও সংস্থার এক্সিট পোল বলছে এনডিএ এবং ইউপিএ যথাক্রমে পাচ্ছে ৩০৬ এবং ১৩২টি আসন। ১০৪টি আসন পাবে অন্যান্য দল।

রিপাবলিক-জনকি বাতের অনুমান এনডিএ এবং ইউপিএ যথাক্রমে পাবে ৩০৫ এবং ১২৪টি আসন।

ইন্ডিয়া টিভি-র এক্সিট পোল বলছে দিল্লিতে সাতটা আসনের ৭ টাই পাবে বিজেপি।

বাংলায় বিজেপি ঝড়, জোর ধাক্কা তৃণমূলের: এবিপি-নিয়েলসন

বাংলায় এবার লোকসভা নির্বাচনে জোর ধাক্কা খেতে পারে তৃণমূল। গতবারের নির্বাচনের থেকে ১০টি আসন কম পেতে পারে মমতার দল। এবিপি-নিয়েলসন সমীক্ষা বলছে, তৃণমূল পেতে পারে ২৪টি আসন, বিজেপি পেতে পারে ১৬টি আসন, কংগ্রেস পেতে পারে ২টি আসন। বামেরা কোনও খাতা খুলতে পারবে না।

দিল্লিতে বিজেপি ঝড়: ইন্ডিয়া টিভি

ইন্ডিয়া টুডের সমীক্ষা অনুযায়ী, দিল্লির সবকটা আসনেই পদ্মফুল ফুটতে পারে। ৭টি আসনেই জিততে পারে বিজেপি। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের নির্বাচনেও বিজেপি সব আসনে জিতেছিল।

উত্তরপ্রদেশ মহাজোটের, গদিচ্যুত বিজেপি: এবিপি-নিয়েলসন

উত্তরপ্রদেশে ৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টি আসন পেতে পারে মহাজোট, বিজেপি পেতে পারে ২২টি, ইউপিএ পেতে পারে ২টি আসন, জানাল এবিপি-নিয়েলসন।

অন্ধ্রপ্রদেশে জিততে পারে ওয়াইএসআর কংগ্রেস: ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস

ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিসের বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশে ১৮ থেকে ২০টির মতো আসনে জয় পাবে ওয়াইএসআর কংগ্রেস। অন্যদিকে, ৪-৬টি আসন কমপেতে পারে টিডিপি। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের নির্বাচনে চন্দ্রবাবু নাইডুর নেতৃত্বাধীন টিডিপির ঝুলিতে এসেছিল ১৬টি আসন। দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে জায়গা পেয়েছিল জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস।

সূত্র : এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এসজেড