• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২০, ২০১৯, ০৯:০৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২০, ২০১৯, ০৯:০৪ এএম

আরব লিগ ও পিজিসিসি‍‍`র জরুরি বৈঠক ডাকলো সৌদি আরব

আরব লিগ ও পিজিসিসি‍‍`র জরুরি বৈঠক ডাকলো সৌদি আরব

 

আরব লিগের জরুরি বৈঠক ডেকেছে সৌদি আরব। একইসঙ্গে পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (পিজিসিসি)-এরও বৈঠক ডেকেছে দেশটি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলে তেল ট্যাংকারে হামলা এবং সৌদি তেল পাম্পে ড্রোন হামলার পর এ বৈঠক ডাকলেন সৌদি রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজ। রোববার (১৯ মে) সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) এ খবর দিয়েছে।

সৌদি প্রেস এজেন্সি’র খবরে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করতে সৌদি বাদশাহ সালমান আগামী ৩০ মে মক্কায় আরব নেতাদের নিয়ে শীর্ষ বৈঠকে বসবেন।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্প্রতি আরব আমিরাতের উপকূলে বাণিজ্যিক তেল ট্যাংকারে হামলা এবং সৌদি আরবের তেল পাম্পে ড্রোন হামলার ফলে তেল সরবরাহ লাইনে বিঘ্ন ঘটানো এবং তেলের বাজারে অস্থিরতার প্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সৌদি বাদশাহ । শীর্ষ বৈঠকে এসব হামলার ফলে সৃষ্ট পরিণতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। ধারনা করা হচ্ছে, চলমান ইরান-মার্কিন উত্তেজনার প্রসঙ্গটিই গুরুত্ব পেতে পারে এ আলোচনায়।

এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সৌদি বাদশাহ সালমানের এই জরুরি বৈঠক আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমানে জটিল পরিস্থিতির ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরব রাষ্ট্রগুলোকে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এ অঞ্চলে উত্তেজনা এড়াতে আগ্রহী রিয়াদ। তবে সৌদি তেল সম্পদে যেকোনও ধরনের হামলা সর্বশক্তি দিয়ে মোকাবিলায় তার দেশ প্রস্তুত রয়েছে।

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য সংকটে বিশ্ববাজারে নতুন করে বেড়েছে তেলের দাম। শুক্রবার লন্ডনে প্রতি ব্যারেল তেল বিক্রি হয়েছে ৭৩ ডলারে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহে বিঘ্ন এবং ইরান ও আমেরিকার মধ্যকার উত্তেজনার ফলশ্রুতিতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইরানের ওপর মার্কিন একতরফা নিষেধাজ্ঞার কারণে ওপেকের তেলের উৎপাদন কমে গেছে। 

এছাড়া, চলতি সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক উত্তেজনাকর ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার সামরিক আগ্রাসনের হুমকি যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজায়রা বন্দরে চারটি তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণের মতো ঘটনা। এসব ঘটনায় অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন চীন সফররত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। চীনের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন দিয়াওটাইতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইরানের রফতানি তেলের অন্যতম প্রধান ক্রেতা চীন। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার পর তেহরানের জন্য বিশ্ববাজার উন্মুক্ত রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে এই সফর অনুষ্ঠিত হয়।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার বর্ষপূর্তির দিনে চুক্তি থেকে আংশিক সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে দেয় তেহরান। এরপরই ইরানের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে উগসাগরীয় এলাকায় বিমানবাহী রণতরী ও ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধসরঞ্জাম মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের হুমকি মোকাবিলায় ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ শুরুর অভিযোগ এনেছে।

এসকে