• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৩, ২০১৯, ০৮:১৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৩, ২০১৯, ০৮:২৫ এএম

বাংলায় আধিপত্য কার? উত্তরের অপেক্ষায় পুরো ভারত

বাংলায় আধিপত্য কার? উত্তরের অপেক্ষায় পুরো ভারত

 

টান টান উত্তেজনায় মিটেছে পশ্চিমবঙ্গের ভোট পর্ব। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হতে চলেছে গণনা। প্রথম থেকেই বাংলাকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গে ভোট গণনা পর্ব যাতে ভালভাবে সম্পন্ন হয় তার জন্য ২৫ হাজার নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। আছেন আরও ২৫ হাজার আধিকারিক। তারাই করবেন গণনার কাজ। এবার সাত দফায় রায় দিয়েছে বাংলা।

রাজ্যের মোট ৫৮টি কেন্দ্রে ভোট গণনা হবে। সকাল থেকেই গণনা কেন্দ্রে পৌঁছে যাচ্ছেন আধিকারিক থেকে শুরু করে প্রার্থী এবং তার এজেন্ট। পাশাপাশি নিরাপত্তা জনিত সমস্যা যাতে না হয় সেটাও দেখছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে রাজ্যের সমস্ত গণনাকেন্দ্রে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। নির্দিষ্ট পরিচয় পত্র ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। সাত দফা ভোট পর্ব শেষ হওয়ার পর বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে বাংলায় এবার বিজেপি দারুণ ফল  করতে পারে। কিন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী  বলেন তিনি বুথ ফেরত সমীক্ষায় বিশ্বাস করেন না।  

এ রাজ্য থেকে ২৩টি আসন জয়ের আশা করছে বিজেপি। দলের সভাপতি অমিত শাহ সেই লক্ষ্যমাত্রাই দিয়েছেন। প্রথম থেকে সেভাবেই কাজ করে চলেছে বিজেপির বঙ্গজ নেতারা। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মনে করেন বাংলায় তৃণমূলের থেকে বেশি আসন পাবে বিজেপি। সাত দফা ভোট মেটার পরও রাজ্যের একাধিক জায়গায় গোলমাল হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িয়েছে শাসক- বিরোধী দুপক্ষই। আর তাই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে দেওয়ার দাবিও উঠেছে।

পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা নির্বাচন এবার সমস্ত দিক থেকেই ছিল বিশেষ। এবার বাংলার মানুষ কাকে বেছে নিচ্ছেন তার দিকে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ। বামেদের সাড়ে তিন দশকে পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে দেশে এত বিপুল আগ্রহ তৈরি হওয়ার কোনও সুযোগই ছিল না। তার কারণ ওই সময় চিরকাল বাম দলগুলি পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভা নির্বাচনে দারুণ ফল করত। বস্তুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর হওয়া ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচন বাদ দিলে ২০০৯ পর্যন্ত বিরোধীদের ফল যথেষ্ট খারাপ হয়েছে  বাংলায়। কিন্তু বাংলায় যে পরিবর্তন হতে চলেছে সেই আভাস মিলেছিল ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেই।

কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে রাজনৈতিক বোদ্ধাদের চমকে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত সেই সময় থেকেই স্পষ্ট হচ্ছিল এবার হয়তো বাংলায় পালাবদলের পালা আসছে। শেষমেষ ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয় বামেরা। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে এতটা  উত্তাপ ছিল না। কিন্তু এবার এ রাজ্যের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। বিজেপি বাংলায় আসন সংখ্যা বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টা করতে থাকায় পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ৪২টি আসনের মধ্যে পদ্ম শিবির কটি পাবে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। বুথ ফেরত সমীক্ষার গড় বলছে অন্তত ১৩টি আসনে পদ্ম ফুটতে চলেছে বাংলায়।  

তৃণমূল অবশ্য এই সমীকরণ বা পূর্বাভাস মানতে রাজি নয়। তাদের স্পষ্ট কথা বাংলার মানুষ আবারও তৃণমূলেরউপরই আস্থা রেখেছেন। এটাও ঠিক লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। প্রচারে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। তাছাড়া সাত পর্বের প্রতিটিতেইপ্রবল বিক্রমে প্রচার করেছেন তৃণমূল নেত্রী। রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে প্রান্তে ছুটে গিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে এবারই প্রথম লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী ১৯ বার এলেন রাজ্যে। গত সাত দশকে এমন ঘটনা কখনও ঘটেছে বলে রাজনৈতিক বোদ্ধাদেরও জানা নেই। তাছাড়া বিজেপি সভাপতি থেকে শুরু করে গেরুয়া শিবিরের তাবড় নেতারা নিয়মিত সভা করে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে। স্বভাবতই ৪২টির মধ্যে বিজেপি কটি দখল করতে পারে তা জানতে আগ্রহের অন্ত নেই রাজনৈতিকগবেষক থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

সূত্র : এনডিটিভি

এসজেড