• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১১, ২০১৯, ০৩:৪৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১১, ২০১৯, ০৩:৪৫ পিএম

পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসা থামছেই না

পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসা থামছেই না

 

রাজনৈতিক হিংসায় এখনও থমথমে সন্দেশখালি। সেই রেশ থাকতে থাকতেই আবারো পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক কর্মী হত্যার অভিযোগ উঠল। হাওড়ার আমতায় বিজেপি কর্মীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত বিজেপি কর্মী সমতুল দোলুই (৪০) হাওড়ার আমতার চালুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনা প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা বিজেপি সভাপতি অনুপম মালিক বলেন, ‘‘আমরা গোটা ঘটনা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সমতুলকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়।’’ খুনের প্রতিবাদে আমতা রোডে দেহ রেখে বেশ কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করেন নিহতের পরিজনরা। একইসঙ্গে এ ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তারা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

রোববার (৯ জুন) ওই এলাকায় দোলুইয়ের দোকানের কাছে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলার সময়ে সমতুলকে ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিতে দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে নিহতের এক আত্মীয়ের দাবি, ‘‘অনুষ্ঠান চলাকালীন বেশ কয়েকবার জয় শ্রী রাম ধ্বনি দেয়, যা তৃণমূল কর্মীরা ভাল চোখে দেখেনি। তৃণমূল কর্মীরাই ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল। এর কিছুক্ষণ পরেই দোলুইয়ের কোনও খোঁজ পাওয়া যায় না। পরের দিন সকালে দোকানের পিছন থেকে ওকে উদ্ধার করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, তৃণমূল কর্মীরাই ওকে খুন করেছে।’’

এ ঘটনা প্রসঙ্গে নিহতের বড় ভাই ভাস্কর বলেন, ‘‘আমার ভাই বিজেপি কর্মী ছিল। তৃণমূল সমর্থকরা ওকে খুন করেছে। প্রথমে ওকে মদ্যপান করায়, তারপর পিটিয়ে মারা হয়।’’ এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বলা সম্ভব। তদন্ত শুরু হয়েছে’’।

অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই’’।

অপরদিকে উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়ায় বোমার ঘায়ে জখম হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই ব্যক্তির। এ ঘটনায় জখম হয়েছেন আরেক মহিলা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আর্য সমাজ মোড়ের কাছে গতকাল (১০ জুন) মাঝরাতে ২-৩টি বোমা ছোড়া হয়। এ ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মহম্মদ হালিম (৬০) ও মহম্মদ মুখতারের (৬৮)।

নিহত দু’জনই তৃণমূল সমর্থক বলে দাবি করেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘নিহত দু’জনই এলাকায় তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত ছিলেন।’’ নিহতদের বাড়িতে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব যাচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী। উল্লেখ্য, আগামী ১৪ জুন কাঁকিনাড়ায় সভা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই তেতে রয়েছে কাঁকিনাড়া এলাকা। গত ১৯ মে ভাটপাড়ায় বিধানসভা উপনির্বাচন ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ওই এলাকা। ভোট পরবর্তী সংঘর্ষ ঘিরে দফায় দফায় বোমাবাজি চলে। রেল অবরোধও করা হয় সেসময়। কাঁকিনাড়া এলাকা ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ওই কেন্দ্রে এবার একদা তৃণমূলের বাহুবলী নেতা অর্জুন সিংয়ের হাত ধরেই পদ্মফুল ফুটেছে। উপনির্বাচনেও তৃণমূলের মদন মিত্রকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন বিজেপির অর্জুন সিংয়ের ছেলে পবন সিং। ক’দিন আগে ভাটপাড়া পুরসভাও দখল করে বিজেপি।

দুটি ঘটনাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

সূত্র : এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এসজেড