• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০১৯, ০৬:০২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৯, ২০১৯, ০৬:১৭ পিএম

মোদীর সর্বদল বৈঠকে যাচ্ছেন না মমতাসহ অনেকেই

মোদীর সর্বদল বৈঠকে যাচ্ছেন না মমতাসহ অনেকেই

নরেন্দ্র মোদীর ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে অনুপস্থিতের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার (১৯ জুন) সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন প্রধানত দু’টি বিষয়ে আলোচনা করতে। যার একটি তাঁর প্রস্তাবিত ‘এক দেশ এক নির্বাচন’। দ্বিতীয়টি নীতি আয়োগ প্রস্তাবিত ২৮টি রাজ্যের ১১৭টি জেলার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি ঘটানোর জন্য ‘অ্যাসপিরিশনাল ডিস্ট্রিক্টস’।

সমস্ত দলের প্রধান নেতানেত্রীকে সরকারের তরফে বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কিন্তু সাতজন গুরুত্বপূর্ণ নেতানেত্রী বৈঠকে আসছেন না। এদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বৈঠকে আসছেন না। পাশাপাশি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও তেলুগু দেশম পার্টি প্রধান এন চন্দ্রবাবু ‌নাইডু ও ডিএমকে প্রধান এমকে স্টালিনও তাদের না আসতে পারার ব্যাপারে জানিয়েছেন।

আসছেন না মায়াবতী ও সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদব। মমতা ও স্টালিন তাঁদের পরিবর্তে কাউকে পাঠাচ্ছেন না। কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তেলুগু দেশম পার্টি প্রধান এন চন্দ্রবাবু ‌নাইডু ও কে চন্দ্রশেখর রাও তাঁদের তরফে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন। কংগ্রেস বৈঠকে থাকবে কি না এখনও জানা যায়নি।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যেতে আলোচনাই যথেষ্ঠ নয় বলে জানান মমতা। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশিকে লেখা চিঠিতে পুরো বিষয়টি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের  দাবি করে মমতা লিখেছেন, বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “এক দেশ, এক নির্বাচনের মতো একটি স্পর্শকাতর ও গুরুতর বিষয় নিয়ে এত কম সময়ে আলোচনা হতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, নির্বাচন বিশারদ এবং সমস্ত দলের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে তাড়াহুড়ো করার পরিবর্তে, আমার অনুরোধ, সমস্ত দলের কাছে বিষয়টি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক এবং তাদের যথেষ্ঠ  সময় দিয়ে মতামত জানতে চাওয়া হোক। যদি আপনারা এভাবে করেন, তাহলেই আমরা আমাদের মতামত ঠিকভাবে দিতে পারব। আমাদের রাজ্য সমস্ত জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতি দায়বদ্ধ, সুতরাং অসাম্য হতে পারেনা।” বুধবারের বৈঠকে আলোচনা নীতি আয়োগসহ বাকি বিষয়গুলিও প্রত্যাখ্যান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

২১ জুন তেলেঙ্গানায় কালেশ্বরম লিফট প্রকল্পের উদ্বোধন, সেই কাজে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে হাজির থাকতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। এই বৈঠকে তাদের রাজ্যের কোনও উপকার হবে না জানিয়েও তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও তাঁর ছেলে ও তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির কার্যকরী সভাপতি কেটি রামা রাওকে বৈঠকে পাঠাচ্ছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে কে চন্দ্রশেখর রাও বলেন, ‘‘ওখানে গিয়ে আলোচনা হবে? আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে সাংবিধানিক সম্পর্কটুকু কেবল রাখব। আমি ফেডেরাল ফ্রন্টের পক্ষে। কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে লাভ নেই। আমরা রাজ্যের জন্য এক টাকাও পাইনি। আমি এর আগেই বলেছি মোদি একটি ফ্যাসিস্ট সরকার চালাচ্ছেন। এটা একেবারে সত্যি কথা।” এর আগে ৩০ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান এবং সপ্তাহে নীতি আয়োগের বৈঠকেও যোগ দেন নি কে চন্দ্রশেখর রাও।

‘এক দেশ এক নির্বাচন’ কার্যকর করতে সংবিধানে সংশোধন করতে হবে। যা উচ্চ ও নিম্ন দুই কক্ষের দুই তৃতীয়াংশ সমর্থন ছাড়া করা যাবে না। সেই কারণে বিজেপিকে অন্য দলের সঙ্গে আলোচনা করার পরিকল্পনা করতে হচ্ছে। বিজেপির বক্তব্য এতে সময় ও অর্থ দুই-ই বাঁচবে। কিন্তু বিরোধীরা এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। তাদের মতে এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতির বিরুদ্ধে যায়। পাশাপাশি এই পরিবর্তনের সম্ভাব্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা।

মায়াবতী জানিয়েছেন, যদি বৈঠকটি ইভিএম নিয়ে হত তিনি আসতেন। তিনি দাবি করেন, ‘‘জোর করে ব্যালট পেপারে ভোট না করে ইভিএমে ভোট করাটা দেশের গণতন্ত্র ও সংবিধানের কাছে বিপজ্জনক।” কেজরিওয়াল ও নাইডু নিজেরা না এলেও তাঁদের দলের তরফে প্রতিনিধিরা বৈঠকে যাবেন, আম আদমি পার্টির রাঘব চাঢা ও তেলুগু দেশম পার্টির জয়দেব গাল্লা।

নীতি আয়োগ প্রস্তাবিত ২৮টি রাজ্যের ১১৭টি জেলার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি ঘটানোর জন্য ‘অ্যাসপিরিশনাল ডিস্ট্রিক্টস' বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে। বৈঠকে এ বছর মহাত্মা গান্ধির সার্ধশতবর্ষ ও ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালন করার ব্যাপারেও কথা হবে।

সূত্র : এনডিটিভি

এসজেড