• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০১৯, ০৯:১৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২০, ২০১৯, ০৯:১৫ এএম

পদত্যাগ চলছেই, আরও জটিল রবীন্দ্রভারতীর সঙ্কট

পদত্যাগ চলছেই, আরও জটিল রবীন্দ্রভারতীর সঙ্কট

 

সমস্যা মেটা তো দূরস্থান, আরও জটিল হল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট। ভূগোল বিভাগের এক শিক্ষিকাকে হেনস্থা ও তার বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষী মন্তব্য করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে আপাতত উত্তাল রবীন্দ্রভারতী। বুধবার পর্যন্ত মোট চারজন বিভাগীয় প্রধান এবং বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্রের সাতজন অধিকর্তা পদত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবার নতুন করে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদককে চিঠি দিয়েছেন বাংলার বিভাগীয় প্রধান দেবলীনা শেঠ এবং দর্শনের বিভাগীয় প্রধান সর্বাণী বন্দ্যোপাধ্যায়। পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন আরও তিনটি গবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তাও।

অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছেন মোট ছ’জন বিভাগীয় প্রধান ও ১০টি গবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তা। রবীন্দ্রভারতীর ইতিহাসে এমন ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। অন্যদিকে, এদিনই আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে গেছেন উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরি। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা হলেও উপাচার্য ফোন ধরেননি।

চলতি বিতর্কের প্রেক্ষিতে বুধবার রবীন্দ্রভারতীতে যান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ভূগোল বিভাগের অভিযোগকারীণী অধ্যাপিকা সরস্বতী কেরকেটার সঙ্গে কথা না হলেও পদত্যাগী চার বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলেন পার্থ। শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে সরকার। এরপর সুর নরম করে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা জানিয়েছিলেন, তারা মন্ত্রীর কথায় আশ্বস্ত। আপাতত আন্দোলনে ইতি টানছেন। কিন্তু এদিন সকাল থেকেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

কলা বিভাগের টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক দেবব্রত দাস বলেন, “এদিন উপাচার্যের সঙ্গে বিভাগীয় প্রধানদের বৈঠকের কথা ছিল। আমরা আশা করেছিলাম উপাচার্য চিঠি দিয়ে জানাবেন, আমাদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয় নি। কিন্তু তিনি তা জানানোর সৌজন্যটুকুও দেখাতে পারলেন না। বাধ্য হয়ে পদত্যাগী বিভাগীয় প্রধানরাও বৈঠকে যোগ দিতে পারেন নি। তাঁদের সমর্থনে অধিকাংশ বিভাগীয় প্রধানই বৈঠকে অংশ নেন নি। এদিন আন্দোলনের সমর্থনে আরও পদত্যাগপত্র জমা পড়েছে।”

তার কথায়, “শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধে আমরা সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত রেখেছি। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত ছাত্র নেতা বিশ্বজিৎ দে ওরফে বাপ্পার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।” বাপ্পা অবশ্য দাবি করেন, তাকে এবং ছাত্র সংসদকে বিপাকে ফেলতেই অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছেন “বামপন্থী শিক্ষকদের” একাংশ।

শিক্ষামন্ত্রী এদিন বলেন, রাজ্য সরকার পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। কিন্তু পদত্যাগ যে কোনো সমাধান নয়, তা শিক্ষকদের উপলব্ধি করা উচিত।

রবীন্দ্রভারতীর এই ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করেছেন উপাচার্য। তাতে রয়েছেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার এবং সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পলা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কমিটি নিয়েও আপত্তি রয়েছে শিক্ষকদের। দেবব্রত বলেন, “তদন্ত কমিটি কিসের ভিত্তিতে তৈরি হলো? বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এসসি, এসটি সেল রয়েছে। উপাচার্য সেই সেলকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।”

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এসজেড