• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০১৯, ১১:০৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২, ২০১৯, ১১:০৭ এএম

হংকংয়ে গণতন্ত্রকামীদের বিক্ষোভে সমর্থন জানাল ব্রিটেন

হংকংয়ে গণতন্ত্রকামীদের বিক্ষোভে সমর্থন জানাল ব্রিটেন
হংকংয়ের রাজপথে বিক্ষোভরত গণতন্ত্রকামী লোকজন- ছবিসূত্র : রয়টার্স

ইউরেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব উপকূলের দেশ হংকংয়ে গণতন্ত্রকামীদের সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজপথ। যদিও সড়কে আন্দোলনরত এসব গণতন্ত্রকামীদের এরই মধ্যে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাজ্য। সোমবার (১ জুলাই) ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টের করা টুইটের বরাতে আন্দোলনে এই সমর্থনের কথা নিশ্চিত করেছে গণমাধ্যম 'বিবিসি নিউজ।'

জেরেমি হান্ট তার টুইট বার্তায় বলেন, ‘হংকংয়ের প্রতিটি জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। তাই তাদের এই কর্মসূচিতে কোনো ধরনের বাধা না দেয়ার জন্য ব্রিটেন দেশটির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।’

এদিকে, গত সোমবার (১ জুলাই) চীনের কাছে হংকং হস্তান্তর বার্ষিকী উপলক্ষে সকাল থেকেই সড়কে জড়ো হতে শুরু করে হাজার হাজার লোকজন। এক সময় সরকারি দপ্তরগুলোতে চালানো হয় ভাঙচুর। এমনকি আইন পরিষদ ভবনেও ধাতব বস্তু দিয়ে চালানো হয় হামলা।

আন্দোলনকারীদের থামাতে গিয়ে গণতন্ত্রপন্থি পরিষদ সদস্যরাও হয়েছেন ব্যর্থ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভবনগুলোর আশপাশে অনেক দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কারণে আন্দোলনরত লোকজন কিছুক্ষণ শান্ত থাকলেও পরে আবারও সামনের দিকে এগোতে শুরু করেন।

মূলত এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনকরীদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে নিজের টুইট বার্তায় ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হংকং হস্তান্তর বার্ষিকী উপলক্ষে আমরা তাদের স্বাধীনতার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাই। কোনো সহিংসতাই গ্রহণযোগ্য নয়, তারপরও হংকংয়ের জনগণের আইন মেনে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পূর্ণ অধিকার রয়েছে। যা আজ অগণিত সাহসী মানুষ করে দেখিয়েছেন।’

প্রায় ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের অধীনে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ১ জুলাইয়ে এক অস্থায়ী হস্তান্তর চুক্তিতে মেয়াদ শেষ হওয়ায় অঞ্চলটি শক্তিশালী চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। ঐতিহাসিক এই দিবসটির ২২ বছর পূর্তিতে সোমবার (১ জুলাই) আন্দোলনে সড়ক অবরোধ করেন গণতন্ত্রকামী এসব লোকজন। প্রতি বছরের এই দিনে কর্মকর্তারা এক দিকে সরকারি ভবনগুলোতে উৎসব পালন করেন আর অপর দিকে গণতন্ত্রকামীরা অবস্থান নেন রাজপথে।

দীর্ঘদিন যাবত হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল থেকে অঞ্চলটিকে স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দেয় দেশটি। এর আগে গত মাসেও চীনপন্থি এক বিল নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইউরেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব উপকূলের এই দেশ।

মূলত চীন এবং তাইওয়ানে আসামি প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত একটি বিলের বিপক্ষে তখন গোটা দেশে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলনকারীদের মূল ক্ষোভ দাঁড়ায় চীনের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে। বেইজিংয়ের দুর্বল আইন ব্যবস্থা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ডের কারণে হংকংয়ের সাধারণ মানুষ সেখানে কাউকে ফেরত পাঠাতে চাইছেন না। তাদের মতে, পার্লামেন্টে বিলটি পাস হলে তা অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষেত্রে চীনা হস্তক্ষেপের সুযোগ অনেকাংশে বাড়িয়ে দিবে।

অপর দিকে হংকং কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে ঐতিহাসিক এই দিবসটি পালনের প্রস্তুতি চলছিল। অপরদিকে, হাজার হাজার তরুণ কালো মুখোশ পড়ে সড়ক অবরোধের মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করে। পরবর্তীতে তাদের দমনে হেলমেট ও ঢাল নিয়ে সড়কে দেওয়াল হয়ে দাঁড়ায় দাঙ্গা পুলিশ। ছিল ঝিরিঝিরি বৃষ্টিও। এত কিছুর পরও আন্দোলনকারীরা একটুও দমে যাননি।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উপস্থিত আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, ‘পুলিশরা আমাদের ওপর মরিচের গুড়া স্প্রে করেছে। তার ঝাঁঝে আমাদের অনেকে কাতরাচ্ছিল। আমরা ভাগ্যবান যে পুলিশ বেধড়ক লাঠিপেটা করলেও আমরা তাতে আহত হইনি। কেননা আমারা নিজেদের ছাতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিলাম।’


এসকে/টিএফ