• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০১৯, ০৬:১৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২০, ২০১৯, ০৬:১৮ পিএম

হামলায় নিহতদের পরিবারগুলোর সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার সাক্ষাৎ

হামলায় নিহতদের পরিবারগুলোর সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার সাক্ষাৎ
সোনভদ্রার হামলায় নিহতদের স্বজনরা প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে এসে দেখা করেন।

 

প্রশাসনের ১৪৪ ধারা ভাঙার অভিযোগে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে সোনভদ্রায় যেতে দেয়নি পুলিশ। এরপরও নিজের গেস্ট হাউসে সহিংসতায় নিহতদের পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন গান্ধী পরিবারের এই উত্তরসূরি।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) উত্তরপ্রদেশ সরকার যতই চেষ্টা করুক না কেন সোনভদ্রার ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা না করে প্রিয়াঙ্কা দিল্লি ফিরবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। পরবর্তীতে মির্জাপুরের যে গেস্ট হাউসটিতে তাকে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, সেখানেই সারারাত তিনি ধর্নায় বসেছিলেন।

যার প্রেক্ষিতে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে অবশেষে সোনভদ্রায় জমি নিয়ে বিরোধ সংক্রান্ত সহিংসতায় নিহতদের স্বজনরা নিজেরাই প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে মির্জাপুরে এসে দেখা করেছেন। কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা অজয় রায় বলেন, ‌‘শনিবার (২০ জুলাই) স্থানীয় সময় সকালে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর মোট ১২ সদস্য এসে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেন।’

এর আগে গত বুধবার (১৭ জুলাই) উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র জেলার উভা গ্রামে জমি দখল নিয়ে বিরোধের জেরে গ্রাম প্রধানের সমর্থকদের ছোড়া গুলিতে চার নারীসহ অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়। যার প্রেক্ষিতে শুক্রবার হামলায় নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দলের কর্মীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনি এলাকা বারানসি পৌঁছান।

পরবর্তীতে সেখান থেকে সড়ক পথে সোনভদ্রে যাওয়ার কথা ছিল তার। যদিও সোনভদ্রে কোনো ধরনের জমায়েত করা যাবে না বলে প্রিয়াঙ্কাকে পথেই আটকে দেয় পুলিশ। প্রতিবাদে মির্জাপুরে সড়কের ওপরেই অন্য নেতাদের সঙ্গে ধর্নায় বসে পড়েন কংগ্রেসের এই সাধারণ সম্পাদক। এ সময় প্রিয়াঙ্কার নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের ঘিরে রাখেন। তখন কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা সড়ক থেকে সরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে প্রশাসনের লোকজন এসে তাদের স্থানীয় একটি গেস্ট হাউসে নিয়ে যায়।

যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাকে অবিলম্বে দিল্লি ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হলেও তখনও নিজ সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন প্রিয়াঙ্কা। নিজে সাফ জানিয়ে দেন, ভুক্তভোগীদের সঙ্গে দেখা করতে না দিলে তিনি দিল্লি ফিরবেন না। যার অংশ হিসেবে শুক্রবার গোটা রাত তিনি এ ঘটনা নিয়ে একাধিক টুইট বার্তা পাঠান।

একটি টুইটে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বারানসির এডিজি, পুলিশ কমিশনার এবং মির্জাপুরের ডিআইজি আমার কাছে এক ঘণ্টা ধরে বসে রয়েছেন। আমাকে বলেছেন আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে দেখা না করেই আমাকে ফিরে যেতে হবে। আমাকে কেন আটকে দেয়া হয়েছে, তার কোনো কারণ তারা দেখাতে পারেননি। কোনো কাগজপত্রও হাতে পাইনি। এমনকি আমার আইনজীবী জানিয়েছেন, এভাবে আমায় আটক করা সম্পূর্ণ বেআইনি।’

এ দিকে গোটা রাত একইভাবে ধর্নায় থাকার পর অবশেষে শনিবার সকালে সোনভদ্রার হামলায় নিহতদের স্বজনরা প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে এসে দেখা করেন। প্রথমে নিহতদের স্বজনদের প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে গেস্ট হাউসে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। যদিও এর কিছুক্ষণ পর তারা সে নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেন। তখন নিহতদের স্বজনদের চোখের অশ্রু মুছে দিয়ে সান্ত্বনা দেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পুলিশ ও প্রশাসন আসলে ঠিক কী চাইছে তা আমি বুঝতে পারছি না। তারা (পরিবারগুলো) আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে, অথচ তাদেরই এখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিলো না।’

সোনভদ্রে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করার জন্য গত বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা। একই সঙ্গে হামলায় নিহতদের পরিবারকে সহায়তার জন্য ২৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ও আহতদের ১৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য প্রদানের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। যদিও হতাহতরা অবশ্যই বিচার পাবেন বলে এরই মধ্যে আশ্বস্ত করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। যার অংশ হিসেবে এ ঘটনায় সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটসহ আরও ৪ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে তদন্তের অংশ হিসেবে অন্তত ২৯ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। তাছাড়া ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। যাদের পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র : এনডিটিভি

এসজেড

আরও পড়ুন