• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০১৯, ০২:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২২, ২০১৯, ০২:১৯ পিএম

কিছুক্ষণের মধ্যে পৃথিবী ছাড়বে চন্দ্রযান-২

কিছুক্ষণের মধ্যে পৃথিবী ছাড়বে চন্দ্রযান-২

 

যাবতীয় যান্ত্রিক ত্রুটি সমাধানের পর আবারও চাঁদের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছে ভারতীয় মহাকাশযান ‘চন্দ্রযান-২’। দেশটির দ্বিতীয় এই চন্দ্র অভিযান শুরু হচ্ছে আজ সোমবার (২২ জুলাই) স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে। রবিবার (২১ জুলাই) ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (ইসরো) পাঠানো টুইটে বলা হয়, উৎক্ষেপণ মহড়ার পর ‘চন্দ্রযান-২’ চাঁদে পাঠানোর জন্য স্বাভাবিক বলে দেখা গেছে। টুইটে পরবর্তী আপডেটের জন্য ইসরোর সঙ্গে থাকতে অনুরোধ জানানো হয়।

এর আগে যদিও গত সোমবার (১৫ জুলাই) স্থানীয় সময় ভোর রাত ২টা ৫১ মিনিটে চাঁদের অদেখা অংশের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর কথা ছিল ভারতের তৈরি এই যানটির। তবে উৎক্ষেপণের কিছুক্ষণ আগে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় নির্ধারিত সময়েঅভিযান শুরু করতে পারেনি ‘চন্দ্রযান-২’। যাত্রা শুরুর মাত্র ৫৬ মিনিট আগে স্যাটেলাইট বহনকারী রকেটের তেল বহনকারী ট্যাংকিতে ছিদ্র দেখা দিলে অভিযানটি পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। তখন ঐতিহাসিক এ মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করার জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। পরে তাৎক্ষণিক ইসরোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, উৎক্ষেপণের পরবর্তী তারিখ খুব শিগগিরই জানানো হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইসরো চাঁদে নতুন অভিযানের জন্য সব রকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। যেখানে অভিযানের জন্য তৈরি করা হয়েছে 'চন্দ্রযান-২' নামে নতুন স্যাটেলাইট। যানটি চাঁদে অবতরণ করতে পারলে এটি হবে বিশ্বের চতুর্থ কোনো দেশের সফলভাবে চন্দ্র অভিযান। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন) সফলভাবে নিজেদের অভিযানটি সম্পন্ন করেছিল।

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ন মহাকাশ কেন্দ্র (এসডিএসসি) থেকে সোমবার (২২ জুলাই) স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে অত্যন্ত শক্তিশালী, সর্বাধুনিক ‘জিএসএলভি-মার্ক-৩’ রকেটে চেপে ‘চন্দ্রযান-২’ যাত্রা করবে। যেখানে থাকবে একটি ‘অরবিটার’; যা চাঁদের বিভিন্ন কক্ষপথে থেকে প্রদক্ষিণ করবে। তাছাড়া এতে আরও থাকবে একটি বিক্রম নামের ল্যান্ডর ও প্রজ্ঞান নামের একটি রোভারও। যা চন্দ্র পৃষ্ঠের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়াবে।

ইসরো জানায়, ১৫ কোটি ডলারে নির্মিত ‘চন্দ্রযান-২’ চাঁদ থেকে পানি, খনিজ ও পাথর সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করবে। উৎক্ষেপণের প্রায় দেড় মাস পর সেপ্টেম্বরে (৫ তারিখ গভীর রাত ও ৬ তারিখ ভোর রাতের মধ্যে) চাঁদের পিঠে পা ছোঁয়াবে ল্যান্ডর ‘বিক্রম’। নামার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ল্যান্ডর থেকে বেরিয়ে আসবে খুবই ছোট একটি রোভার ‘প্রজ্ঞান’। যার ওজন মাত্র ২০ কিলোগ্রাম। আর চন্দ্রযান-২-এর সার্বিক ওজন ৩ হাজার ৮৫০ কিলোগ্রাম। ল্যান্ডরটি নেমে আসার সময় চন্দ্রযান-২-এর অরবিটারটি চাঁদের পিঠ (লুনার সারফেস) থেকে থাকবে মাত্র ১০০ কিলোমিটার ওপরে।

ভারতের 'চন্দ্রযান-২' পাঠানোর উদ্দেশ্য, চাঁদের পিঠের বালুকণায় মিশে রয়েছে কোন কোন মৌল ও খনিজ পদার্থ আর তা কী পরিমাণে রয়েছে তা জানা। সেই মৌল বা খনিজগুলো নিষ্কাশনের যোগ্য কি না, তা যাচাই করা। বিজ্ঞানীদের মতে, দক্ষিণ মেরুর দিকেই চাঁদের গভীরে এখনো বয়ে চলেছে পানির ধারা। উল্কাপাত বা অন্য কোনো মহাজাগতিক বস্তু আছড়ে পড়ায় সেখানে একটি বিশাল গর্ত (ক্রেটার) তৈরি হয়েছে। এর ফলে চাঁদের গভীরে মৌল বা খনিজ বা পানির খোঁজের কাজটা সহজতর হয়ে উঠতে পারে। এর আগে ভারতের প্রথম চন্দ্রাভিযান হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন চাঁদের কক্ষপথে গিয়েছিল ‘চন্দ্রযান-১’। চাঁদে পানির অন্যতম উপাদান হাইড্রক্সিল আয়নের খোঁজ দিয়েছিল যানটি।

সূত্র : বিবিসি, এনডিটিভি

এসজেড

আরও পড়ুন