• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০১৯, ১০:৩৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৫, ২০১৯, ১০:৩৯ এএম

পশ্চিমাদের বর্জ্য নিয়ে এশিয়ার দেশগুলোতে ক্ষোভ কেন?

পশ্চিমাদের বর্জ্য নিয়ে এশিয়ার দেশগুলোতে ক্ষোভ কেন?
শ্রীলঙ্কায় বন্দরে পরে আছে ১১১টি কন্টেইনার ভর্তি বর্জ্য।

নানা ইস্যুতে বিবাদ হতে পারে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে। এই মুহূর্তে ব্রিটেনের ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। আর তার ইস্যু হল আবর্জনা। ব্রিটেন থেকে পাঠানো ১১১টি কন্টেইনার ভর্তি বর্জ্য নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। দ্বীপ রাষ্ট্রটি দাবি করছে ব্রিটেন যেসব বর্জ্য পাঠিয়েছে সেগুলো এখনই ফেরত নিতে হবে। তাদের অভিযোগ এর মধ্যে ভয়াবহ বিপজ্জনক সব বর্জ্য রয়েছে। এমনকি মৃত মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও রয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।

বর্জ্য ভর্তি কন্টেইনারগুলো এই মুহূর্তে দেশটির বন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছে আমদানিকারক কোম্পানি। যার মধ্যে ২০১৭ সালে আসা কন্টেইনারও রয়েছে। এগুলো থেকে এখন ভয়াবহ গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই বর্জ্য সমুদ্রে মিশে যাওয়ার আশংকা করছে শ্রীলঙ্কা।

পুনর্ব্যবহারের কথা বলে ধোঁকা?

পশ্চিমা দেশগুলো থেকে উন্নয়নশীল এশিয়ান দেশগুলোতে পুনর্ব্যবহার বা রিসাইক্লিং-এর কথা বলে প্রচুর বর্জ্য পাঠানো হয়। ২০১৮ সালে চীন ঘোষণা দিয়েছে যে তারা পশ্চিমা কোনো দেশের প্লাস্টিক বর্জ্য আর গ্রহণ করবে না। এর ফলে এখন সেসব বর্জ্য অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে পাঠানোর প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু এই বছরের মে মাসে ফিলিপাইন ৬৯টি বর্জ্য ভর্তি কন্টেইনার কানাডায় ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াও একই কাজ করেছে সাম্প্রতিক সময়ে। একই কাজ করেছে কম্বোডিয়া। এই মাসের শুরুতে তারাও ৮৩টি কন্টেইনার যুক্তরাজ্যে ও কানাডায় ফেরত পাঠিয়ে বলেছে, ‘কম্বোডিয়া কোনো ডাস্টবিন নয়’। এই দেশগুলোর অভিযোগ পুনর্ব্যবহারের কথা বলে ধোঁকা দিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। এসব বর্জ্যের মধ্যে প্রচুর ক্ষতিকর আবর্জনা পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।

পশ্চিমা দেশগুলো আসলে তাদের ডাস্টবিন বা আবর্জনা ফেলার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মানুষ যত বাড়ছে আবর্জনা তত বাড়ছে। বিশ্বের সবচাইতে বড় উদ্বেগগুলোর একটি এখন বর্জ্য। বিশেষ করে প্লাস্টিক বর্জ্য। সেগুলো নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে নানা দেশ। আবার একই সঙ্গে এসব বর্জ্য আমদানি করে সেগুলো পুনর্ব্যবহার করার একটি ব্যবসাও দাঁড়িয়েছে।

পশ্চিমাদের ময়লা ফেলা ভাগাড় নয়

শ্রীলঙ্কায় পরিদর্শকরা সেখানে ফেলে যাওয়া কন্টেইনারগুলোর পরিদর্শনের পর কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেগুলো নিয়ে দেশটির সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চলছে তোলপাড়। কলোম্বোতে ব্রিটিশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেছে দেশটির কিছু পরিবেশবাদী ও বৌদ্ধ ভিক্ষু। তারা যেসব প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন সেগুলোর একটি বার্তা হচ্ছে তাদের দেশ ‘পশ্চিমাদের ময়লা ফেলা ভাগাড় নয়’। এখানে প্রতিবাদকারীদের একজন বলছেন, ‘এখানে এসেছি আমার ভবিষ্যতের নিরাপত্তার জন্য। আমরা একটি তৃতীয় বিশ্বের দেশ। আমাদের নিজেদের সমস্যার অন্ত নেই। অন্যদের বর্জ্যের দায়িত্ব আমরা কিভাবে নেবো?’

ব্রিটেনের বক্তব্য

ব্রিটেনের পরিবেশ বিষয়ক অধিদপ্তর জানিয়েছে তারা শ্রীলঙ্কার বিষয়টি তদন্ত করছে। তবে তারা বলছে, এই বর্জ্য সরাসরি ইংল্যান্ড থেকে অবৈধভাবে পাঠানো হয়েছে কিনা সেটি প্রমাণ করতে পারলে তবেই সেগুলো ফেরত নেয়া হবে। একজন শ্রীলঙ্কান আমদানিকারক যিনি বর্জ্যগুলো এনেছেন তাকেই সেগুলো ফেরত পাঠানোর দায়িত্ব নিতে হবে। প্রমাণ সাপেক্ষে যারা এই বর্জ্য অবৈধভাবে ব্রিটেন থেকে রপ্তানির সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি

এসজেড

 

আরও পড়ুন