• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০১৯, ০৪:৩৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২, ২০১৯, ০৪:৪০ পিএম

আগস্টে যত জঙ্গি হামলা ও হত্যাযজ্ঞ

আগস্টে যত জঙ্গি হামলা ও হত্যাযজ্ঞ

আগস্ট- বাঙালির জাতির এক শোকের মাস। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ১৯৭৫ সালের এই মাসে। দিনটি ছিল ১৫ আগস্ট। আগস্টের ২১ তারিখে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের সামনে গ্রেনেড হামলাসহ আরও বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলা ও হত্যাযজ্ঞ সংঘঠিত হয়, যা কোনওভাবেই বিস্মৃত হওয়ার নয়।

দৈনিক জাগরণ-এর পাঠকের জন্য সে সব হামলা যৎসামান্য চিত্র তুলে ধরা হলো 

সিলেটে গুলশান সেন্টারে হামলা, ৭ আগস্ট ২০০৪

২০০৪ সালের ৭ আগস্ট সিলেটের তালতলায় অবস্থিত গুলশান সেন্টারে আওয়ামী লীগের কার্যকরি সভা চলছিল। সে সময় বোমা ও গ্রেনেড হামলা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ। এ ঘটনায় নিহত হন একজন। আহত হন ৪০ জন । নিহত ব্যক্তি হলেন তৎকালীন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলী। ঘটনার এত বছর পরেও আহতদের মধ্যে অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন নি। সিলেটভিত্তিক একটি অনলাইনের সূত্র জানায়, এই হামলার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও মামলায় তেমন কোনও অগ্রগতি হয়নি। ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট সিলেট কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু্টি মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের। ২০০৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১০ সালের ২ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মিসবাহউদ্দিন ঘটনার পুনঃতদন্তের আবেদন করেন। বিষ্ফোরক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ এখনও চলছে আর হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

 আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা, ২১ আগস্ট ২০০৪ 

২০০৪ সালে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। দেশের ইতিহাসে জঙ্গিবাদের অন্যতম বিভৎস উদাহরণ ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা। হামলায় অল্পের জন্য বেঁচে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে প্রাণ হারান আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কমী। আহত হন শেখ হাসিনাসহ ৩০০-৪০০ জন। আহতদের অনেকেই এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।

এই মামলায় তৎকালীন সরকার জজ মিয়া নাটক সাজায় ও মূল আসামিদের বাইরে রেখেই মামলার নিষ্পত্তি করে। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে মামলাটির পুনঃতদন্ত করা হয়। ঘটনার দুটি মামলায় ৪৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ২২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই এই মামলাগুলোর রায় পাওয়া যাবে। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বা হুজি এ হামলা করেছে বলে জানা গেছে।

সিরিজ বোমা হামলা, ১৭ আগস্ট ২০০৫

২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলায় একযোগে কেঁপে ওঠে সারাদেশ। অন্তত ৫০০টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে একযোগে এই বোমা হামলা চালানো হয়। এতে দুইজন নিহত ও দুই শতাধিক লোক আহত হন। এই ঘটনায় সারাদেশে ৬৬০ জনকে আসামি করে ১৬১টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ১০৩ মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকি মামলাগুলো চলমান রয়েছে।বিচারে এ পর্যন্ত ১৫ জেএমবি সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় ১১৮ জনকে, বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে ১১৬ জনকে। মামলা থেকে অব্যহতি পান ১১৮ জন।

তৈয়বুর রহমান ও নাজমুল মনির হত্যা, ৮ আগস্ট ২০১৩

২০১৩ সালের ৮ আগস্ট খুন হন উম্মুল মুমেনীন দাবিদার তৈয়বুর রহমান ও তার ছেলে নাজমুল মনির। বিতর্কিত ধর্মীয় পরিচয় ছাড়াও তিনি ছিলেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক উপ-পরিচালক। এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনও  তথ্য পাওয়া যায় নি।

ব্লগার নিলয় নীল, ৭ আগস্ট ২০১৫

২০১৫ সালের ৭ আগস্ট রাজধানীর গোড়ানে বাসায় ঢুকে ব্লগার নিলয় নীলকে হত্যা করে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। নিলয়কে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। নিলয়ের হত্যা মামলায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মামলাটির প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যা, ২৭ আগস্ট ২০১৪

২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট হত্যা করা হয় চ্যানেল আই এর ধর্মীয় বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘কাফেলা’র উপস্থাপক শেখ নুরুল ইসলাম ফারুকীকে। জনপ্রিয় টেলিভিশন ধর্মীয় বক্তা নুরুল ইসলাম ফারুকীর বাসায় ঢুকে গলাকেটে তাকে হত্যা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি। ঘটনার পরের দিন ফারুকীর ছেলে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা। মামলাটি চলমান রয়েছে।

শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে ধানমণ্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে হামলা করে নিষিদ্ধ ফ্রিডম পার্টি ১৯৮৯ সালের ১১ আগস্ট। এটিও আগস্টে মাসে ঘটা আলোচিত ঘটনা।

এইচএম/এসএমএম

আরও পড়ুন