• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০১৯, ০৩:৩৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৬, ২০১৯, ০৩:৩৩ পিএম

কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে যা বলছে কংগ্রেস

কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে যা বলছে কংগ্রেস


৩৭০ ধারার অধীনে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবসানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে কংগ্রেসের অভ্যন্তরেও মতবিরোধ হয় বলে জানা গেছে। তবে শেষপর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা এবং কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করার বিষয়টি সমর্থন না করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।

কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা, অভিষেক মনু সিংভি, স্বীকার করেছেন যে তাদের দলটি অন্যান্য অনেক বিরোধী দলের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। ‘আমরা রাজনৈতিকভাবেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি কারণ আমরা হাতে গোণা চার-পাঁচটি দলের মধ্যে ছিলাম যারা এর বিরোধিতা করেছিল। বলব না আমরা এটি সম্পর্কে জানতাম না কারণ আমার ধারণা গুলাম নবি আজাদ থেকে পি চিদাম্বরম পর্যন্ত আমাদের দলের সবাই ছিলেন। এটি সম্পর্কে গত এক সপ্তাহ ধরে আলোচনা করেছি আমরা। এই বিষয়টি একটি ওপেন সিক্রেট ছিল, তবে অবশ্যই এ ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম না আমরা। তবে হ্যা, আমরা এখন খুব কম সংখ্যক বিরোধী দলের মধ্যে রয়েছি যারা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যুক্তি দিয়েছি ও বিরোধিতা করে ভোট দিয়েছি, তবে এটা গণতন্ত্র ... আপনাকে সংখ্যার মাধ্যমেই যেতে হবে’, এনডিটিভিকে জানান সিংভি।

সোমবার (৫ আগস্ট) কংগ্রেস সহ বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্যসভার অধিবেশনে কাশ্মীর সংক্রান্ত বিলটি পাস করাতে সমর্থ হয় কেন্দ্রীয় সরকার। অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করে বহু বিরোধী দল, ফলে কমে যায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা। অন্যান্যরা সরকারের পক্ষেই যায়। এনডিএ রাজ্যসভায় সংখ্যালঘু হলেও ভোটাভুটি সরকারের পক্ষেই যায়। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি, নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দল, জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস, চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি, এবং  অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টিও সরকারের সমর্থনে ভোট দেয়। সব মিলিয়ে সরকারের পক্ষে সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৭। রাজ্যসভায় পাস হয়ে যায় কাশ্মীর সংক্রান্ত বিলটি।

সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা ড. করণ সিং ও গুলাম নবি আজাদ।

মে মাসে জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেই দলের খারাপ ফলের দায়ভার নিজের কাঁধে নিয়ে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধি। তবে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জনসমক্ষে প্রকাশ করেননি। কাশ্মীরের পদক্ষেপ নিয়ে কংগ্রেস দলের মধ্যেই বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এই মতবিরোধ সরিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছনোর জন্যে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির(সিডাব্লুসি)জরুরি বৈঠকের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাহুল গান্ধি এনডিটিভিকে বলেন যে তিনি ‘কংগ্রেস সভাপতি না থাকায় কোনও বৈঠক ডাকতে পারবেন না’।

জানা গেছে, কাশ্মীর ইস্যুটি সংসদের নিম্নকক্ষে গৃহীত হওয়ার আগেই একটি শক্তিশালী বিরোধী জোট গঠনের লক্ষ্য নিয়ে লোকসভার কংগ্রেস সাসংদরা সোনিয়া গান্ধি এবং রাহুল গান্ধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

৩৭০ ধারার অধীনে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবসানের জন্য সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে কংগ্রেসের অভ্যন্তরেও মতবিরোধ হয় বলে সূত্রের খবর। তবে শেষপর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা এবং কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করার বিষয়টি সমর্থন না করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।

পরবর্তীতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবলুপ্তি ঘটাতে ৩৭০ ধারা রদের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ ও কপিল সিব্বালের মতো নেতারা ক্ষোভ উগরে দিয়ে সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘গণতন্ত্র হত্যা’ বলে অভিহিত করেন।  লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদরা এর প্রতিবাদে সোনিয়া গান্ধির নেতৃত্বে ওয়াকআউট করলেও, সংসদের বাইরে বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা বেরিয়ে এসে ৩৭০ ধারা রদ নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন। একে সমর্থন করে, এটিকে তাঁদের ‘ব্যক্তিগত’ মতামত হিসাবে উল্লেখ করেন তারা।

‘আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করাকে সমর্থন করি (যেমন শুরুর শব্দটি এটি অস্থায়ী) তবে ভারতের সংবিধান দ্বারা প্রদত্ত বিধান এবং পদ্ধতি অনুসারে রাজ্য বিধানসভার সম্মতি অনুযায়ীই এটা করা উচিত - অন্য কোনওভাবেই এটি করা সংবিধানিক নয়’  ট্যুইট করেন কংগ্রেস নেতা জয়বীর শেরগিল।

নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করে মুম্বইয়ের কংগ্রেস নেতা মিলিন্দ দেওরা টুইট করেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে ধারা ৩৭০ নিয়ে একটি উদার বনাম রক্ষণশীল বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলির উচিত আদর্শগত দৃষ্টিভঙ্গী এবং বিতর্ককে সরিয়ে রেখে ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নেওয়া, যাতে জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি বজায় থাকে, এবং কাশ্মীরের যুবকদের চাকরি এবং কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ন্যায়বিচার মেলে’।

সূত্র : এনডিটিভি

এসজেড