• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০১৯, ০৬:১৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৬, ২০১৯, ০৬:১৯ পিএম

৩৭০ ধারা বিলোপের পিছনে ‘রহস্য’ দেখছে পশ্চিমবঙ্গ

৩৭০ ধারা বিলোপের পিছনে ‘রহস্য’ দেখছে পশ্চিমবঙ্গ

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে দেওয়ার পিছনে অন্য রহস্য দেখতে পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দলগুলো। পাশাপাশি তাদের বক্তব্য, সংসদে কোনো বিবৃতি নেই, কোথাও কোনো আলোচনা নেই, এভাবে একতরফা সিদ্ধান্তে নিয়ে গণতন্ত্র ধ্বংস করছে বিজেপি। এই ধারা যোগ না হলে কাশ্মীর ভারতেই থাকত না। হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন নিল বিজেপি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

জম্মু কাশ্মীরের পুনর্গঠন বিলের তীব্র বিরোধিতা করবে তৃণমূল কংগ্রেস এবং এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সবদলের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল সরকারের এমনই জানালেন ভারতের তৃণমূল নেত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরী এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে, সিদ্ধান্ত নিতে পারত সরকার। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কোনো ভোট বা আলোচনা করা হয়নি। এটা গণতন্ত্র নয়। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করব।’

সোমবার ভোটাভুটির সময় রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেত্রী বলেন, এর মানে কখনই এটা নয়, ওয়াকআউট করে তারা বিল পাশ করাতে সরকারের সুবিধা করে দিয়েছে। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘ভোটাভুটির সময় রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট মানেই এই নয়, আমরা বিলটিকে সমর্থন করছি’।

জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা এবং মেহবুবা মুফতিকে গ্রেফতারির ব্যাপারে মমতা বলেন, তারা কেউই ‘সন্ত্রাসবাদী’ নন। ‘গণতন্ত্রের স্বার্থে’ তাদের অবিলম্বে মুক্তির আবেদন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে দেখেছি, ওমর আব্দুল্লাহ এবং মেহবুবা মুফতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে সরকারের কাছে আবেদন এবং অনুরোধ জানাচ্ছি, তারাও কাশ্মীরের বাসিন্দা এবং আমাদের ভাই-বোন। তাদের বিচ্ছিন্ন ভাবতে দেয়া ঠিক নয়’।

জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘আজকের সোমবারের দিনটা কালো দিন। সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য কালো দিন আজ। সংবিধানের জন্য কালো দিন, রাজ্যসভার জন্য কালো দিন’’।

রাতারাতি এমন একটা সিদ্ধান্ত নেয়ায় ক্ষুব্ধ প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। পলিটব্যুরোর এই সদস্যের মতে, কেন সারা ভারতবর্ষ এই বিষয়ে অন্ধকারে? হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত নেয়া? বোঝা যাচ্ছে না এর পিছনে কী। তবে অবশ্যই কিছু একটা রহস্য তো রয়েছেই। এই রহস্য তখনই খুলবে যখন আমরা একটা কিছু আবার দেখতে পাব। এই দুই ধারা খারিজ করে দেয়ার আগে সংসদের দুই কক্ষে কোনো আলোচনা হয়নি। এ বিষয়ে সেলিম বলেন, ‘‘সংসদে কোনো বিবৃতি না দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এটাও তো রহস্য। মানুষকে অন্ধকারে রেখে রাতারাতি হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া, এটা খুবই খারাপ ইঙ্গিত’’।

অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস মনে করছে এটি একেবারে ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্ত। ধর্মীয় ভাবাবেগে মেরুকরণের রাজনীতি হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘১০ মিনিটে খারিজ করে দেয়া হল সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এর প্রতিবাদ করা উচিত। কোনো একটা ধর্মের মানুষকে আঘাত করা নয়। এটা দেশের গণতন্ত্রকে, ভারতের সংবিধানকে আঘাত করা। কাশ্মীর অন্তর্ভুক্তই হয়েছিল ৩৭০ ও ৩৫ ধারার জন্য। কাশ্মীরকে ভারতে রাখার জন্য এই ধারা তৈরি করতে হয়। মানুষের মত, সংসদের বাইরে বিদ্বজনেদের মত নেয়া দরকার ছিল। এভাবে একতরফা গণতন্ত্রকে হত্যা করল। এতে বিজেপির স্বরূপ প্রকাশ হলো। জানি না এরপর কী হবে। দেশের যুবকদের চাকরি নেই, কোষাগার ফাঁকা, বিনিয়োগ নেই, সে সবের জন্য দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে সরকার’’।

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এসজেড

আরও পড়ুন