বিশেষ ধর্মীয় মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদউল আযহা। ধর্মীয় রীতি অনুসারে, দিনের শুরুতে পবিত্র ঈদের নামাজ আদায় শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে পশু কোরবানীর মধ্যদিয়ে ঈদ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হচ্ছে। দ্য গালফ নিউজ
রোববার (১১ আগস্ট) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিশ্বের বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রে ঈদ উদযাপনের সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালনরত হাজীরা এদিন বিধি অনুসারে পশু কোরবানীর মধ্যদিয়ে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন।
এদিকে কাতার, ইরাক, ইরান ও আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশগুলোতে আজ পবিত্র ঈদউল আযহা পালিত হচ্ছে। একই সঙ্গে ইউরোপের দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়াসহ আরও বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রে ঈদ উদযাপন করেন মুসলমানরা। অপরদিকে ইন্দোনেশিয়া, জাপান, ফিলিপিন, কাজাখিস্তান, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশ এবং আফ্রিকার তানজিনিয়া, সুদান, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, আলজেরিয়া এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়াতেও ঈদের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়।
রাশিয়ায় পবিত্র ঈদউল আযহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় রাজধানী মস্কোর 'মস্কো গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল মস্ক' মসজিদে। ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়ায় বসবাসকারী মুসলমানরা ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেন জাগরিভ শহরের 'জাগরিভ সেন্ট্রাল মস্ক'-এ আয়োজিত ঈদের বিশেষ জামাতে। অপরদিকে সার্বিয়ার বেলগ্রাদে শহরের 'বায়রাকিল সেন্ট্রাল মস্ক', মন্টেন্যাগ্রোর 'ওসমানাগিক মস্ক'সহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের স্থানীয় মসজিদগুলোতে পবিত্র ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
পাশাপাশি এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনের মোরো মুসলইম সম্প্রদায়ের অধিবাসীরা 'বাঙ্কসামোরা সেন্ট্রাল মস্ক', চীনের 'বেইজিং সেন্ট্রাল মস্ক', ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের কারো শহরের 'মাউন্ট সিনাবাঙ্ক' মসজিদ এবং কাজখিস্তানের 'সেন্ট্রাল নূর আস্তানা মস্ক'-এ ঈদউল আযহার প্রধান প্রধান জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া মিশরের মুসলমানরা রাজধানী কায়রোতে অবস্থিত 'আমর ইবনে-আল-আস' মসজিদে তাদের ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ফিলিস্তিন, লিবিয়া এবং সিরিয়াতে ঈদের উৎসব ছিলো বরাবরের মতই ম্লান। তবে পবিত্র ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে দেশগুলোতে। ফিলিস্তিনবাসী তাদের একমাত্র ঈদউল আযহার জামাত আয়োজন করেন গাজা সীমান্তবর্তী ঐতিহ্যবাহী 'গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন' খ্যাত উদ্যানটিতে। যেখানে বহু বছর ধরে ফিলিস্তিনবাসীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও ইসরায়েলি আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলনের উদযাপন করে আসছে দেশটির মানুষ।
পবিত্র ঈদ উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে ইউরোপিয় অঞ্চলের দেশগুলোর প্রশাসন। বিশেষ দিনটিতে সম্ভাব্য সকল প্রকার নৈরাজ্য ও নাশকতামূলক কার্যক্রম রোধে মসজিদ প্রাঙ্গণসহ দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে নিরাপত্তাকর্মীদের কঠোর নজরদারি পরিলক্ষিত হয়। যেখানে সেনা, পুলিশসহ দেশগুলোর গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তৎপরতার কথাও জানা যায়।
তবে বিশ্বের কোনো অঞ্চল থেকে এখন পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি। সেক্ষেত্রে বলতে হয়, বিশ্বের যে সকল রাষ্ট্রের মুসলমানরা আজ ঈদ পালন করছেন তাদের আনন্দ উদযাপন যথাযথভাবেই চলছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গালফ, দ্য আনাদুলা এজেন্সি নিউজ
এসকে