• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯, ০৭:১৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯, ০৭:১৮ পিএম

একশ আলোকবর্ষ দূরে ‍‍‘যমজ পৃথিবী‍‍’, মিলেছে জলের সন্ধান

একশ আলোকবর্ষ দূরে ‍‍‘যমজ পৃথিবী‍‍’, মিলেছে জলের সন্ধান
নাসার গ্রাফিক্স ইমেইজে কে২-১৮বি-এর একটি চিত্র- সূত্র: রয়টার্স

প্রথমবারের মত সৌরজগতের বাইরের একটি গ্রহে পানির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জীবন ধারনের সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক ও মৌলিক এই উপাদানের উপস্থিতির ফলে গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। পৃথিবী থেকে প্রায় একশ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই গ্রহটি ও তাতে পানির সন্ধান পাওয়ার তথ্যটি প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের ইউসিএল (ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন)।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন-এর একদল জ্যোতির্বিজ্ঞানীর মহাকাশ গবেষণায় এই গ্রহটির সন্ধান পাওয়া যায় যার নাম দেয়া হয় কে২-১৮বি (K2-18B)। এ যাবত মহাকাশে খুঁজে পাওয়া প্রায় একশটির মত 'সুপার-আর্থ'-এর মত এটিও একটি। তবে পানির সন্ধান পাওয়া গেছে এমন সুপার -আর্থের সন্ধান এর আগে বিজ্ঞানীরা পাননি। এই গ্রহটির আকার পৃথিবী ও নেপচুন গ্রহের মাঝামাঝি পরিমাপের। মহাকাশের বিভিন্ন কৃষ্ণগহ্বরগুলোর মাঝে এক্সোপ্লেনেটের সন্ধানে চালানো অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে এই গ্রহটির সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা।

ইউসিএল-এর মহাকাশ গবেষণা বিভাগের জ্যোতির্বিদ ইঙ্গো ওয়্যাল্ডম্যান- ছবি: রয়টার্স

প্রতিবেদনের তথ্য মতে, সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্যটি হচ্ছে, পৃথিবীসহ সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহগুলো যেমন সূর্যকে প্রদক্ষিন করে আবর্তিত, এই গ্রহটিও ঠিক সেভাবেই তবে ভিন্ন একটি নক্ষত্রকে একটি নির্দিষ্ট অরবিটাল পথে প্রদক্ষিনরত! শুধু তাই নয় এই গ্রহটির তাপমাত্রাও একেবারে পৃথিবীর মত আদর্শ ও সহনীয় পর্যায়ের, ফলে গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে ধারনা করছেন গবেষকরা।

ইউসিএল-এর মহাকাশ গবেষণা বিভাগের জ্যোতির্বিদ ইঙ্গো ওয়্যাল্ডম্যান জানান, গ্রহটিতে পানি আছে। আমরা সেখানে পানির সন্ধান সম্পর্কে নিশ্চিত করেই বলছি। হাবল স্কোপ টেলিস্কোপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত করা গেছে যে, অন্যান্য সুপার-আর্থগুলোর মত এর চারপাশে যে ধূমায়িতো বলয় রয়েছে সেটি গ্যাসীয় নয়। কে২-১৮বি'র এই বলয়টি জলীয়বাষ্পের যা নিশ্চিত ভাবেই গ্রহটিতে পানি রয়েছে বলে প্রমাণ করে।

ইউসিএল-এর হাবল স্কোপ টেলিস্কোপে কৃষ্ণগহ্বরের নক্ষত্র রাশি- ছবি: রয়টার্স

তিনি আরো জানান, এই গ্রহটি মহাকাশের এই চেনা সৌরজগতের সীমানার বাইরে অপর একটি কৃষ্ণগহ্বরে অবস্থিত। যা উক্ত গহ্বরের নক্ষত্র রাশির (কনসটেল্যাশন) মাঝে একটি বামন নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে নিজ কক্ষপথ ধরে প্রদক্ষিনরত রয়েছে। সূর্য থেকে আমদের পৃথিবীতে আলো পৌঁছাতে যেখানে কয়েক মিনিট সময় লেগে যায়, সে হিসেবে একশ আলোকবর্ষ দূরের অবস্থিত এই গ্রহটি প্রাণ ধারনের জন্য যতই অনুকূল হক, মানুষের পক্ষে সেখানে যাওয়া অসম্ভব ব্যাপার। যা শুধু কল্পবিজ্ঞানেই সম্ভব বলে মনে করা হয়।'

প্রতিষ্ঠানটির গবেষকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সুদূর মহাকাশের বুকে খুঁজে পাওয়া এই জল-সমৃদ্ধ গ্রহটি পৃথিবীর অধিবাসীদের জন্য কোনো বিকল্প হিসেবে গ্রাহ্য করা সম্ভব নয়। আর তাই মানুষ যদি সুস্থ সুন্দর পরিবেশে বেঁচে থাকতে যায় তাহলে তার কাছে একটাই করণীয় রয়েছে। আর সেটা হলো এই সবুজ পৃথিবীকে রক্ষা করা ও সুন্দর করে গড়ে তোলা। 

রয়টার্স
এসকে     

আরও পড়ুন