• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯, ০৫:৩৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯, ০৫:৩৩ পিএম

হিন্দুস্তান টাইমস প্রতিবেদন

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: গুরুত্ব পাবে এনআরসি ইস্যু

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: গুরুত্ব পাবে এনআরসি ইস্যু
বাঁ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী- ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস

আগামী অক্টোবরে ভারত সফর করার কথা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সব কিছু ঠিক থাকলে চারদিনের এই রাষ্ট্রীয় সফরে ৩ থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। সফরকালে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন বলেও জানা গেছে।

এদিকে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনের এই সফর প্রসঙ্গে ভারতীয় বার্তা সংস্থা দ্য হিন্দুস্তান টাইমস প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামের জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়াদের নিয়ে ঢাকার উদ্বেগ এই সফরের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

চলতি মেয়াদে এই দুই দেশের সরকার প্রধানের এবারই প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে টানা তৃতীয়বার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। অপরদিকে ২০১৯ সালের জুন মাসে বিপুল নিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে টানা দ্বিতীয় বারের মত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাসীন হন নরেন্দ্র মোদী। এই দুই নেতার নেতৃত্বাধীন মিত্র রাষ্ট্র দুটির সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে। জানা যায়, দিল্লি সফরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও ৪ অক্টোবর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ভারতীয় অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনার সফর সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনায় শেখ হাসিনা আসামের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়া ব্যক্তিদের নিয়ে ঢাকার উদ্বেগ তুলে ধরবে বলে মনে করা হচ্ছে। আসামের রাজনীতিবিদদের প্রকাশ্য মন্তব্যের কারণেই এই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, ভারত বাংলাদেশকে বোঝাবে যে ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে হবে। 

এর আগে গত আগস্টে ঢাকা সফরকালীন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, আসামের অবৈধ অভিবাসী চিহ্নিত করা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। গত বৃহস্পতিবার জয়শঙ্কর বলেন, আসামের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়া ১৯ লাখ মানুষের ভাগ্য নির্ধারণী প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাদ পড়া ব্যক্তিদের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল এবং উচ্চ আদালতে আপিলের অধিকার আছে।

এদিকে তালিকা প্রকাশের পর ভারতের ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার সমন্বয়কারী ও আসামের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের বন্ধু এবং তারা আমাদের সহায়তা করে আসছে। আমরা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে উপস্থাপন করলে তারা বরাবরই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে। এই সংখ্যাটি বেশি বড় না, তবে এখন আমরা তাদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’ 

শর্মার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘এনআরসির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি আবারও বলছি, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমি জানি না এই বিষয়ে কে কী বলেছে। ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানালে, আমরা জবাব দেব। সবমিলে আমি বলতে পারি, ১৯৭১ সালের পর কেউ বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায়নি। হতে পারে ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে তারা (মূলত বাংলাভাষীরা) আসামে স্থায়ী হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে নয়।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভারত আমাদের সঙ্গে আছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক চমৎকার। তারা আমাদের বন্ধু, কিন্তু এনআরসি নিয়ে উদ্বেগের ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, ১৯৭১ সালের পর কেউ বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায়নি। আমি মনে করি না ভারত সরকার কাউকে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেবে।’

সংস্থাটির প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাগরিক তালিকা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যু নিয়েও আলোচনা হওয়ার জোড় সম্ভাবনা রয়েছে।  এছাড়া ভারতের অর্থায়নে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা এবং নদীর পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা হবে। শেখ হাসিনার আসন্ন এ সফর দেশ দুইটির সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা আরো জোরালো করবে বলেও জানায় হিন্দুস্তান টাইমস।