জ্বালানি তেলে ভর্তুকি তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইকুয়েডরে ৬ দিনব্যাপী চলমান তীব্র বিক্ষোভের মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো সরকারি সকল দপ্তর রাজধানী কুইটোর বাইরে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আর এর পর পরই শহরে জারি করা হয় কারফিউ।
মঙ্গলবার দেশটির স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত এক ভাষণে মোরানো এই চলমান সহিংস বিক্ষোভকে বিরোধীদের ‘অভ্যুত্থানচেষ্টা’ অ্যাখ্যা দিয়ে ভর্তুকি তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটবেন না বলে দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বিক্ষোভ দমনে পুরো শহরজুড়ে কারফিউ জারির ঘোষণাও দেন তিনি। রয়টার্স
আদিবাসী বিভিন্ন সংগঠনের লাগাতার বিক্ষোভ ও দেশজুড়ে সড়ক অবরোধের মধ্যে মোরেনো সোমবার সরকারি দপ্তর বন্দরনগরী গায়াকুইলে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
দেশটিতে কয়েক বছরের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ এ বিক্ষোভ থেকে এরই মধ্যে ৪৭৭ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
এর আগে সোমবারের ভাষণে মোরেনো বলেছেন, “লুটপাট, ভাংচুর, সহিংসতার মাধ্যমে সরকারকে অস্থিতিশীল করতে, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ভাঙতে সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখা যাচ্ছে।”
দেশকে অস্থিতিশীল করার এ পরিকল্পনার পেছনে ইকুয়েডরের সাবেক প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া এবং ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর হাত আছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মোরেনো জানান, তিনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলেই সরকারি দপ্তর রাজধানী থেকে গায়াকুইলে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ঋণ পেতে সরকারি খাতে ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতি ছিল মোরেনো সরকারের। মার্চের ওই চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ইকুয়েডরকে ৪২০ কোটি ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় মোরেনো গত সপ্তাহে জ্বালানি তেলে সরকারের বাৎসরিক ১৩০ কোটি ডলার ভর্তুকি তুলে নেয়ার ঘোষণা দিলে পরিবহনে ক্রিয়াশীল শ্রমিক ইউনিয়নগুলো এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দেয়। পরে আদিবাসী বিভিন্ন সংগঠনের ডাকে দেশজুড়ে বিশেষ করে রাজধানীতে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় মোরেনো দুই মাসের জরুরি অবস্থা জারি করলেও বিক্ষোভের তোড় কমেনি।