• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০১৯, ০২:৪১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৫, ২০১৯, ০২:৪২ পিএম

নিজ ভূখণ্ডের জন্য তুর্কিদের লড়াই ন্যায্য: ট্রাম্প

নিজ ভূখণ্ডের জন্য তুর্কিদের লড়াই ন্যায্য: ট্রাম্প

মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তুরস্কের চলমান অভিযানে নিহতের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলছে। শনিবার (১২ অক্টোবর) পর্যন্ত অন্তত চার শতাধিক কুর্দি সেনাকে ‘নিউট্রালাইজ’ করেছে তুরস্ক। কোনো সন্ত্রাসীকে হত্যা, আটক বা কোনো সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করলে তুর্কি প্রশাসন নিউট্রালাইজ শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। তুর্কি জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এরই মধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা সিএনএন প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়, টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তুরস্ককে নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষার নিমিত্তে লড়াইয়ের সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

টুইট পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের কথিত খিলাফতকে শতভাগ পরাজিত করার পর আমি অঞ্চলটি থেকে মোটাদাগে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নিয়েছি। এবার সিরিয়া ও আসাদ সরকারকে কুর্দিদের রক্ষা করতে দিন। এমনকি তুরস্ককেও তাদের নিজ ভূখণ্ডের জন্য লড়াই করতে দিন। আমি আমার জেনারেলদের এরই মধ্যে বলে দিয়েছি, আমরা কেন শত্রু ভূখণ্ড সিরিয়া এবং আসাদ বাহিনীর জন্য লড়াই করছি?’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, ‘কুর্দিদের সুরক্ষার জন্য কেউ যদি সিরিয়াকে সহায়তা করতে চায়; তাহলে আমি তাদের স্বাগত জানাই। এটা চীন, রাশিয়া কিংবা নেপোলিয়ন বোনাপার্ট যে কেউই হতে পারে। আশা করছি, এবার তারা সবাই ভালো করবে। কেননা আমরা প্রায় সাত হাজার মাইল দূরে!’

ট্রাম্প তার টুইট বার্তায় আরও বলেছিলেন, ‘এখনো কিছু লোকজন চাইছে যে যুক্তরাষ্ট্র সাত হাজার মাইল দূর থেকে সিরিয়া সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। আর সেই দেশটির শাসন করছে আমাদের প্রকাশ্য শত্রু বাশার আল আসাদ। শুনেছি সিরিয়া এবং অন্যরা নাকি কুর্দিদের সুরক্ষা চায়। এখন আমি বরং আমাদের দক্ষিণ সীমান্তের দিকে মনোনিবেশ করব, যা যুক্তরাষ্ট্রেরই একটি অংশ। সে যাই হোক, খুব শিগগিরই মেক্সিকো সীমান্তে দেয়ালটি নির্মিত হচ্ছে!’

এ দিকে অবিলম্বে এই সেনা অভিযান বন্ধ করার জন্য তুর্কি প্রশাসনকে এরই মধ্যে অনুরোধ জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ ইরান। তাছাড়া তুরস্কের এই আগ্রাসন ভালোভাবে নিচ্ছে না ভারত, ইতালির মতো বহু দেশ। এমনকি সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। তবে এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের সমর্থন কিন্তু তুর্কি প্রশাসনের প্রতিই আছে।

এত কিছুর পরও এরদোগান কিন্তু একরোখা। নিজের টুইট পোস্টে ‘পিস স্প্রিং’ (শান্তির বসন্ত) আনার কথা উল্লেখ করে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত কুর্দিবাহিনীর বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু করেছেন তিনি।

কোনো দেশের পরোয়া না করে গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) উল্টো ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) হুমকি দিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘তুরস্কের এই অভিযানকে আগ্রাসনের তকমা দেওয়া হলে আঙ্কারা থেকে অবিলম্বে ৩৫ লক্ষাধিক শরণার্থীকে সরাসরি ইউরোপেই ফেরত পাঠানো হবে।’

অপর দিকে সিরিয়ার কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে তুর্কি হামলা অব্যাহত থাকায় দেশটির ওপর অচিরেই এক বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এমনকি ন্যাটো বাহিনীতে তুরস্কের সদস্য পদ থাকা নিয়েও এবার আলোচনা শুরু হয়েছে বলে এরই মধ্যে দাবি করেছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স।

এর আগে গত বুধবার (৯ অক্টোবর) সিরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন সমর্থিত কুর্দিবাহিনীর ওপর সশস্ত্র অভিযান শুরু করে তুরস্ক। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

এসকে

আরও পড়ুন