• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০১৯, ০৪:২৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৬, ২০১৯, ০৪:৩১ পিএম

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

ক্ষুধা ও অপুষ্টি দূরীকরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ। সদ্য প্রকাশিত গ্লোবাল হাঙ্গার ইন্ডেক্স বা বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে এ তথ্য অবগত করা হয়েছে। ১১৭টি দেশকে এই তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। আইএফপিআরআই প্রকাশিত সাম্প্রতিক এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক (জিএইচআই) ২০১৯ তে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮, গত বছরে যা ছিল ৮৬।

সূত্র: জিএইচআই

আপাতদৃষ্টিতে অবস্থানের খানিকটা অবনতি হলেও এই সূচক অনুসারে সার্বিকভাবে উন্নতির দিকেই রয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান, ভারত ও আফগানিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো; তবে নেপাল, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে আছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক সূচকগুলোতে বড় পরিসরে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। বেসরকারি খাত ও সরকারের নেওয়া সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের কারণে ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের ৩৬.৬ পয়েন্ট থেকে কমে হয়েছে ১৯.১ পয়েন্ট। ক্ষুধা নিরসনে বাংলাদেশের এ অর্জন সার্ক দেশগুলোর মধ্যেও সর্বোচ্চ।

কীসের ভিত্তিতে তৈরি হয় এই সূচক

কোনও দেশের ঠিক কত সংখ্যক শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে তার নিরিখে তৈরি হয় গ্লোবাল হাংগার ইন্ডেক্স। পাঁচ বছরের নীচে যে সব শিশুর ওজন উচ্চতার তুলনায় কম, অথবা যে সব শিশুর উচ্চতা তাদের বয়সের তুলনায় কম এবং পাঁচের নীচে মৃত্যুর হার কত— এই সব দিক বিচার করেই তৈরি হয়ে জিএইচআই-এর এই সূচক।

বিশ্ব ক্ষুধা সূচক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, এই সূচকে ০ থেকে ১০০ পয়েন্টের মাপকাঠিতে দেশগুলোকে ফেলে যাচাই করা হয় কোন দেশটি কতটা ক্ষুধাপীড়িত। এই মাপকাঠিতে ০ হচ্ছে সবচেয়ে ভালো স্কোর, যার অর্থ সেই দেশটিতে ক্ষুধা নেই, আর ১০০ হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা। ১০ এর কম স্কোর পাওয়ার অর্থ হলো সেই দেশে ক্ষুধা সমস্যা কম। ২০ থেকে ৩৪.৯ স্কোরের অর্থ তীব্র ক্ষুধা, ৩৫ থেকে ৪৯.৯ অর্থ ভীতিকর ক্ষুধা আর ৫০ বা তার বেশি স্কোর বলতে বোঝায় চরমভাবে ভীতিকর ক্ষুধায় পীড়িত দেশকে। এই মাপকাঠিতে চলতি বছরের সূচকে মোট ১১৭টি দেশের মধ্যে ২৫.৮ স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে 'তীব্র ক্ষুধাপীড়িত' দেশের তালিকায়।

                                                                                                                                                           সূত্র: আসকম্যান ইন্ডিয়া

বিগত ৫ বছরের পরিসংখ্যান অনুসারে জিএইচআই সূচকে বাংলাদেশ

চলতি বছরসহ ৫ বছরে অবস্থানে খুব সামান্য তারতম্য হলেও দীর্ঘমেয়াদী চিত্রে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের ক্রমোন্নতির চিত্র। ২০০০ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১০০’র মধ্যে ৩৬.১, অর্থাৎ ‘ভীতিকর’। এর ৫ বছর পর, ২০০৫ সালের সূচকে সেই স্কোর কমে ৩০.৭-এ দাঁড়ায়। অর্থাৎ বাংলাদেশ ‘ভীতিকর’ থেকে ‘তীব্র’ ক্ষুধাপীড়িত দেশের পর্যায়ে চলে আসে। আরও ৫ বছর পর অর্থাৎ ২০১০ সালে স্কোর সামান্য একটু কমে ৩০.৩ হয়। আর তারপর টানা ৯ বছরের ব্যবধানে এবারের সূচকে বাংলাদেশ পেল ২৫.৮, যা ধারাবাহিক উন্নতিকেই সামনে এনেছে।

বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের ক্ষেত্রে এরইমধ্যে জাতীয় খাদ্য নীতি ২০০৬, কর্মপরিকল্পনা ২০০৮ ও ২০১৫সহ বিভিন্ন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর আওতায় বর্তমান সরকার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প-২০০৯ গ্রহণ করেছিলো, যা এখনও চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারের সবার জন্য যথেষ্ট পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব হয়।

ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর অনুসন্ধানী তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, বাংলাদেশ বর্তমান পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে ধারাবাহিক উন্নতির মাধ্যমে। বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশীয় অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ভারত ১০২, পাকিস্তান ৯৪, নেপাল ৭৩, মিয়ানমার ৬৯ এবং শ্রীলঙ্কা ৬৬তম অবস্থানে রয়েছে। তবে ভুটানের স্কোর নির্ণয়ের মতো পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এসকে

আরও পড়ুন