• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০১৯, ০৩:০৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১২, ২০১৯, ০৩:০৭ পিএম

আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা

মিয়ানমারের বিচার নিশ্চিতে গাম্বিয়ার পাশে কানাডা

মিয়ানমারের বিচার নিশ্চিতে গাম্বিয়ার পাশে কানাডা

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত সামরিক হত্যাযজ্ঞ, জাতিগত নিধন, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসির) সদস্য রাষ্ট্র গাম্বিয়া।

সোমবার ১১ (নভেম্বর) এ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আইনের বিধান অনুসারে মিয়ানমারকে বিচারের মুখোমুখি করতেই দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন গাম্বিয়ার একদল আইনজ্ঞ। মূলত ওআইসি'র অন্তর্ভূক্ত ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে এই মামলা দায়ের করে তারা।

কানাডার প্রবীন রাজনীতিক এবং কানাডিয়ান লিবারেল পার্টির এক সময়ের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা বব রে- কানাডিয়ান প্রেস

এদিকে, গাম্বিয়ার এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় আনতে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা।

এ প্রসঙ্গে কানাডার প্রবীন রাজনীতিক এবং কানাডিয়ান লিবারেল পার্টির এক সময়ের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা বব রে বলেন, দীর্ঘ সময় পর্দার আড়াল থেকে আমি রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা, যৌন নিপীড়ন, ঘৃণামূলক বক্তব্য, গণহত্যা, পদ্ধতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ মিয়ানমার নিয়েছে তার জন্য তারা জবাবদিহিতা করতে বাধ্য। বিশেষ করে ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর যে দমন নিপীড়ন চালানো হয়েছে তা ছিল ঘৃণ্য ও বর্বরোচিত।

ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গাম্বিয়ার এই সাহসী পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে রে বলেন, গাম্বিয়ার দায়ের করা এই মামলাটিই হয়তো রোহিঙ্গাদের ন্যায্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পাথেয় হবে। এই পদক্ষেপ যেন সফল হয় তার জন্য গাম্বিয়াকে সর্বাত্মক সাহায্য প্রদানে কানাডা  প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। 

সে সময় রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এর ফলে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকট তৈরি হয় এবং বাংলাদেশের মতো একটি ছোট দেশকে এই বিপুল জনগোষ্ঠীর বোঝা বহন করতে হচ্ছে।

সোমবার আফ্রিকার মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) ৪৬ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।

এই মামলায় গাম্বিয়াকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফোলে হোয়াগ। প্রতিষ্ঠানটির আশা, আগামী মাসেই এই মামলার প্রথম শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে মিয়ানমার।

এর আগে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার জোরালো প্রমাণ তুলে ধরা হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডার হাউস অব কমন্সে ওই প্রতিবেদনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের গণহত্যার বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

গাম্বিয়ার এমন পদক্ষেপে তাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে কানাডার তরফ থেকে বলা হয়েছে, আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে থেকে আমরা গাম্বিয়ার এমন পদক্ষেপকে সমর্থন করে যাব।

সূত্র:  কানাডিয়ান প্রেস 

এসকে

আরও পড়ুন