• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০১৯, ০৭:৩২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৫, ২০১৯, ০৭:৩৩ পিএম

ব্রিটিশ ভোটে রুশ হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা, সরব হিলারি!

ব্রিটিশ ভোটে রুশ হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা, সরব হিলারি!

ব্রেক্সিটপন্থী সব দৈনিকের প্রথম পাতায় আজ ছিল একটাই ছবি। এই উল্লাস প্রকৃতপক্ষে ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজের জন্য। কারণ গত কাল ফারাজ জানিয়েছেন, কনজারভেটিভ এমপি-দের হাতে থাকা কোনও আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না তাঁর দল। এই ‘বোনাস’ পেয়ে যারপরনাই খুশি কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

তবে এরইমধ্যে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন বলেছেন, এ বারের ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত ব্রিটেনের রাজনীতিতে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করছে না বরিসের সরকার। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং এর কোনও ব্যাখ্যা হয় না।

একটি ব্রিটিশ চ্যানেলে হিলারি বলেছেন, ‘‘এ দেশে যাঁরা ভোট দিচ্ছেন, তাঁদের প্রত্যেকের ভোটের আগে ওই রিপোর্ট দেখা উচিত।’’ ব্রিটেনের গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গণভোট এবং ২০১৭ সালের সাধারণ নির্বাচন প্রভাবিত করতে রুশ হস্তক্ষেপের প্রমাণ রয়েছে ওই সব রিপোর্টে। রিপোর্টটি চূড়াম্ত হয় গত মার্চ মাসে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে সেটি পাঠানো হয় ১৭ অক্টোবর। ১০ ডাউনিং স্ট্রিট বলছে কোনও রিপোর্ট চেপে দেয়নি তারা। বিরোধী লেবার পার্টি আবার দাবি করেছে, সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে বড় ধরনের সাইবার হানা রুখতে সমর্থ হয়েছে তারা।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ- রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছু দিন আগে এক রেডিও চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে বরিসকে বার্তা দিয়েছিলেন, নাইজেলের সঙ্গে মিলে লড়লে আখেরে লাভ হবে। তার পরেও অবশ্য নাইজেল-বরিসের মধ্যে মীমাংসা হয়নি। সপ্তাহখানেক আগেও নাইজেল বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বরিসের ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে তাঁর আপত্তি রয়েছে। আর তাই ৫৫০টি আসনেই তাঁর দল ব্রেক্সিট পার্টি প্রার্থী দেবে। তার পরে হঠাৎই কনজ়ারভেটিভদের জন্য আসন ছেড়ে দেওয়া কেন?

সংবাদমাধ্যমে ফারাজ বলেছেন, বরিস তাকে বুঝিয়েছেন ব্রেক্সিট চুক্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে (উইথড্রয়াল এগ্রিমেন্ট) আর কোনও মেয়াদ বৃদ্ধি হবে না। প্রতিশ্রুতিমতো ইইউ-এর সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির জন্য ব্রিটেনের হাতে সময় আছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফারাজের মতে, ইইউ ছাড়ার পক্ষপাতী যাঁরা, তাঁদের একসঙ্গেই এগোনো উচিত।

বিরোধী লেবার পার্টি অবশ্য এ সব দেখেশুনে জানিয়েছে— মনে হচ্ছে নাইজেল ফারাজ এবং বরিস জনসন মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্দেশ পালন করছেন! তবে কনজ়ারভেটিভ পার্টির দাবি, নাইজেল ফারাজের পার্টির সঙ্গে তাদের কোনও চুক্তি হয়নি। ফারাজও জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বন্ধু’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা শোনার পরে তিনি মত পরিবর্তন করেছেন, এমনটা একেবারেই নয়।

নাইজেলের তরফে পাশে থাকার আশ্বাস পেলেও পুরোপুরি স্বস্তি নেই কনজারভেটিভ দলের অন্দরে।  লেবারদের ঘাঁটি এবং যে তিনশো আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে, সেই সব আসনে প্রার্থী দিচ্ছে নাইজেলের ব্রেক্সিট পার্টি। ফলে সেখানে ভোট কনজারভেটিভ, ব্রেক্সিট পার্টি ও লেবার, অন্তত তিনটি দিকে ভাগ হয়ে যাবে। এবং যার ফলে লাভ হতে পারে লেবারদেরই। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পার্লামেন্ট দখল করতে চাইলে কনজারভেটিভ দলকে এই আসনগুলির অধিকাংশই পেতে হবে। লেবার পার্টির মধ্যে যে সব শ্রমিক শ্রেণির ভোটার রয়েছেন, তাঁরা নীতিগত ভাবে কনজ়ারভেটিভ পার্টিকে ভোট দেওয়ার পক্ষপাতী নন। বরং ইইউ ছাড়তে চায় বলে তাঁরা ব্রেক্সিট পার্টিকে ভোট দিতে আগ্রহী হতে পারেন।

আনন্দবাজার

এসকে