• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২০, ০৮:৩৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ৭, ২০২০, ০৯:০৩ পিএম

কাল ভারতজুড়ে ধর্মঘট, ঠেকাতে তৎপর মমতা

কাল ভারতজুড়ে ধর্মঘট, ঠেকাতে তৎপর মমতা
প্রতীকী ছবি

১২ দফা কেন্দ্রীয় দাবি এবং পশ্চিমবঙ্গের আরও দুটি অতিরিক্ত দাবি নিয়ে সারা দেশেই ২৪ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছে ১৭টি শ্রমিক সংগঠন। একমাত্র বিজেপি ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন ছাড়া ভারতের সব ক’টি শ্রমিক সংগঠন এই ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করোতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। আর এই সাধারণ ধর্মঘটে সমর্থন জানিয়েছে 'সারা ভারত কৃষকসভা'-সহ দেশের সমস্ত কৃষক ও খেতমজুর সংগঠন। সেই সঙ্গে রয়েছে ছাত্র সংগঠন, কর্মচারী সংগঠন, মহিলা সংগঠনসহ দেশের সমস্থ অংশের গণসংগঠনগুলোও। 

দিল্লিতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ১২ দফা দাবিতে মূলত ডাকা এই ধর্মঘটের দাবির তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে নতুন নাগরিকত্ব আইন এবং সারা ভারতে নাগরিকপঞ্জি বাতিল করার বিষয়টিও। এই মুহূর্তে ভারতে অবিজেপি রাজ্য সরকারগুলোর যে বিন্যাস, তাতে অন্তত ১৫টি রাজ্যে জনজীবন যে সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যাবে, তা বলাই বাহুল্য।

 ধর্মঘট হবে পশ্চিমবঙ্গেও
ধর্মঘট হবে পশ্চিমবঙ্গেও আর সেক্ষেত্রে বেধেছে গোলমাল। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল এবং তার চেয়েও বেশি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত নীতিই হল ধর্মঘট করা চলবে না। সরকার বিরোধী প্রতিবাদের এই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিটি তিনি কিছুতেই স্বীকার করেন না। এর আগে পশ্চিমবঙ্গে যতবার বামপন্থীরা কখনও একা কখনও সহযোগী দল বা কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে, ততবারই পুলিশ এবং তৃণমূলের লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে সেই ধর্মঘট ভেঙে দিয়েছেন তিনি। তার এই কাজে বামপন্থী ১৭টি দল এবং কংগ্রেস বারবারই অভিযোগ তুলেছে, দিল্লির মোদী সরকারের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার ফলেই মমতা এই রাজ্যে কেন্দ্র বিরোধী ধর্মঘট করতে দেন না।

তাদের আরও অভিযোগ, মোদী সরকারকে যাতে কোনও ভাবে অস্বস্তির মধ্যে পড়তে না হয় তার জন্য ধর্মঘটকারীদের ওপর পুলিশ লেলিয়ে দিতেও কার্পণ্য করেন না। এবারও তার অন্যথা হবে না। মমতা এরইমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, তার সরকার সমস্ত রকম সরকারি যানবাহন চালাবে এবং সরকারি দফতরগুলো খোলা রাখবে। এর পাশাপাশি তিনি সরকারি কর্মচারীদের বুধবারের (৮ জানুয়ারি) হাজিরা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। অর্থাৎ বুধবার অফিসে না এলে বেতন তো কাটা যাবেই, সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।

এদিকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ধর্মঘটকারীরাও। সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, কংগ্রেসের নেতা আব্দুল মান্নান সহ একাধিক শীর্ষ স্থানীয় বিরোধী নেতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, অন্যান্যবারের মতো এবার যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ পাঠিয়ে কিংবা দলীয় দুষ্কতীদের দিয়ে ধর্মঘট ভাঙার সামান্যতম চেষ্টাও করেন, তাহলে রাজপথেই তার উপযুক্ত জবাব দেবেন আন্দোলনকারীরা। মোদী সরকারের একের পর এক সিদ্ধান্তে দেওয়া পিঠ ঠেকে গিয়েছে সাধারণ মানুষের। সেই ক্ষোভেরই বর্হিপ্রকাশ এবারের সাধারণ ধর্মঘট। মমতা নিজেই নাগরিকত্ব ইস্যুতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক মিটিং – মিছিল করেছেন। ধর্মঘটিকারীদের প্রশ্ন, মমতা যদি সত্যিই মোদী সরকারের বিরোধী হন, তাহলে তিনি মোদী-বিরোধী ধর্মঘট ঠেকাতে বারবার উদ্যোগ নেন কেন? তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, এবার সে চেষ্টা করলে সহজে ছাড়া হবে না।

ফলে রাত পোহালেই কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের নানা স্থানে ধর্মঘটের সমর্থনকারী এবং বিরোধীদের মধ্যে দফায় দফায় খণ্ডযুদ্ধ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। রাজনৈতিক মহল তো বটেই, এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্য সরকারকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত রাজ্যকে নোটিশ দিয়ে জানিয়েছে, ধর্মঘটের দিন পশ্চিমবঙ্গের শান্তি রক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকেই।

এসকে

আরও পড়ুন