• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২০, ০৫:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ১৬, ২০২০, ০৫:১৯ পিএম

বিজেপি-আতঙ্কে পাল্টাচ্ছে জাতীয় রাজনীতির বিন্যাস

বিজেপি-আতঙ্কে পাল্টাচ্ছে জাতীয় রাজনীতির বিন্যাস
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি-ছবি : কলকাতা প্রতিনিধি

কলকাতা—মমতা আর ব্রাত্য নন। মমতার হাত ধরে, তার দলকে সঙ্গে নিয়েও চলতে রাজি সিপিএম। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এই কথা স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। আর তার এই মন্তব্যের পরেই সর্বভারতীয় রাজনীতির বিন্যাস নিয়ে নতুন চেহারা নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইয়েচুরি বলেছেন, জাতীয় স্তরে সিএএ এবং এনআরসি ইস্যুতে তৃণমূলের সঙ্গে এক মঞ্চে বসতে তাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে সবার আগে মমতাকে তার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।

সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, বিজেপির বিরোধিতার প্রশ্নে তাদের কোনও ছুঁৎমার্গ নেই। নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি ইস্যুতে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বিরোধীরা। দেশের স্বার্থে এক হয়ে চলার প্রশ্নে সিপিএমের কোনও সংশয়ের জায়গা নেই। 

তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এনআরসি-এনপিএ নিয়ে আন্দোলন করছেন। তাই তার সঙ্গে আন্দোলন করাই যায়। মমতার সঙ্গে আন্দোলনে বাধা একটাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা সর্বত্র স্পষ্ট নয়। তাই সিএএ এবং এনআরসি ইস্যুতে সবার আগে তাকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। এই যে বিরোধীরা সবাই বৈঠকে বসেছিল আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতে। তিনি সেখানে গেলেনই না। আর তার না-যাওয়ার পেছনে যে যুক্তিটা দেখালেন, সেটাও বিচিত্র। উল্টে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কলকাতায় বৈঠক করলেন। তাতেই দ্বন্দ তৈরি হচ্ছে।

তবে সীতারাম ইয়েচুরি এটাও যথেষ্ট স্পষ্ট করেই বলেছেন যে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে তাদের বিরোধ থাকতেই পারে। কারণ এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সঙ্গে সিপিএমের সরাসরি সংঘাত জারি রয়েছে। তবে সর্বভারতীয় স্তরে একজেট হতে আপত্তি নেই।

এই যে মমতা মোদীর সঙ্গে বৈঠক করে ফের এনআরসি-সিএএ বিরোধী মঞ্চে চলে গেলেন ভাষণ দিতে, তাতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারাও বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি আসলে কী চাইছেন। একমাত্র মমতাই তা জানেন। সেক্ষেত্রে মমতাকে সঙ্গে নিয়ে বিরোধী ঐক্য কীভাবে দানা বাঁধবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সে কারণেই সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক মনে করেন, মমতার সঙ্গে পথ চলার আগে তাকে তার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। দু’নৌকায় পা দিয়ে চললে তাকে নিয়ে তো সমস্যা হবেই। বিরোধী ঐক্যে গোড়া থেকেই একটা ফাটল থেকে যাবে। মোদ্দা কথা সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী আন্দোলন তীব্র করতে সবার আগে প্রত্যেক বিরোধী দলকে একমত হতে হবে।

অন্যদিকে রাজনৈতিক মহল এমনও মনে করছে, মমতা অবস্থান স্পষ্ট করার কথা বলে সীতারাম ইয়েচুরি আসলে একটি রাজনৈতিক চালই দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মমতা যদি চুপ করে থাকেন, তাহলে তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে, বিশেষ করে এই জ্বলন্ত ইস্যুতে বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে তিনি কী ভাবছেন, তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি হবে। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, দিল্লির বিরোধী মঞ্চে নেতৃত্বে থাকতে পারবেন কিনা, সেই সংশয় থেকেই মমতা দূরে থাকার নীতি নিয়েছেন। কারণ সোনিয়া গান্ধী বা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে আন্দোলনে যেতে তিনি সম্ভবত রাজি নন। তাই মাঝে মাঝেই পশ্চিমবঙ্গে একলা লড়ার কথা বলে চলেছেন। বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃত্বের বক্তব্য, এর ফলে আসলে বিজেপির রাস্তাই পরিষ্কার করছেন তিনি।

ডিজিজি/এসএমএম

আরও পড়ুন