• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০, ০৯:৩৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০, ১০:০৪ এএম

চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১০৭

করোনার নতুন নাম ‘কভিড-১৯’

করোনার নতুন নাম ‘কভিড-১৯’

আশঙ্কা ছিলই। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেলো বুধবারই। ২৪ ঘণ্টায় শুধু হুবেই প্রদেশেই মৃত্যু হয়েছে ১০৮ জনের। নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৪৭৮ জন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬৩৮। এই পরিস্থিতিতে আরও একবার মুখ খুলেছেন প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। জানিয়েছেন, এই ভাইরাস মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রণে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সদর্থক ফল মিলেছে। 
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান জানান,  এই ভাইরাসের একটি আনুষ্ঠানিক নাম দেয়া হয়েছে— কভিড-১৯ (Covid-19)।

বুধবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে বেজিংয়ে পৌঁছেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি বিশেষজ্ঞ দল। 

চীনা বিদেশ মন্ত্রকের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, এই মারণ ভাইরাস মোকাবেলায় পরবর্তী জরুরি পদক্ষেপগুলো নিয়ে তাদের দেশের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করছেন ওই দলের প্রতিনিধিরা। তবে চীনের বাইরে অন্য দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস অ্যাডহ্যানোম ঘেব্রিইয়েসাস। বুধবারই তিনি বিষয়টিকে ‘হিমশৈলের চূড়া’ মাত্র বলে টুইট করেছিলেন। তিনি আবারও টুইট করে বলেছেন, চীনের বাইরের দেশগুলো এখন থেকেই অতিরিক্ত সতকর্তা না নিলে এর ফল মারাত্মক হতে পারে। তার আশঙ্কা, যিনি কোনও দিন চীনে যাননি, খুব শিগগিরই এমন মানুষের দেহেও এই ভাইরাসের লক্ষণ মিলতে পারে। ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে কোয়ারেন্টাইনের সময় এখনও ১৪ দিনই রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

তার আরও বক্তব্য, বিশ্বে মোট ১৬৮টি পরীক্ষাগার রয়েছে, যেখানে এই ভাইরাস চিহ্নিতকরণের জন্য যথাযথ পদ্ধতি মেনে চলা হয়।

বস্তুত চীনের বাইরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে গতকয়েক দিনে। এর আগে বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে মোট ৩০০টি সংক্রমণের খবর মিললেও এখন সেই সংখ্যাটা ৩৪০ ছাড়িয়েছে। যার মধ্যে আমেরিকাতেও নতুন করে সংক্রমণের খবর মিলেছে। তবে চীনের শাংশি প্রদেশে বুধবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ৩৩ বছরের এক আক্রান্ত মহিলা এক সুস্থ কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে বলে জানায় চীনের সংবাদমাধ্যম। ৩৭ সপ্তাহের ওই সদ্যোজাতের দেহে করোনভাইরাসের লক্ষণ মেলেনি বলে জানায় চিকিৎসকরা। তবে নিশ্চিত হতে আরও কয়েক দিন পরে ওই শিশুটির ফের পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

করোনার আতঙ্কের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে প্রমোদতরীর পর্যটন ব্যবসায়। সিঙ্গাপুরের একটি প্রমোদতরীকে যেমন নিজেদের দেশের বন্দরে ঢুকতে দিতে চাইছে না থাইল্যান্ড সরকার। এর আগেও জাপান, ফিলিপিন্স, তাইওয়ানের মতো বেশ কয়েকটি দেশ। থাইল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ওই প্রমোদতরীর কোনও যাত্রীর শরীরে করোনার চিহ্ন না-মিললেও তারা ঝুঁকি নিতে চাইছে না।

এই অবস্থায় চীনের উহানে আটকে থাকা প্রায় ১৮০ জন নেপাল নাগরিককে এয়ারলিফ্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের সরকার। প্রথমে পাকিস্তানের মতোই নিজেদের দেশের আটকে পড়া নাগরিকদের চীনেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নেপাল সরকার। জানা গেছে, খুব শিগগিরই উহান থেকে যাত্রীদের তুলতে রওনা হবে নেপাল বায়ুসেনার একটি বিমান। 

চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ভারতের মণিপুরে যাওয়া ১৮৭ জন ও নাগাল্যান্ডে যাওয়া ৪২ জনকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে সেখানকার সরকার। অবশ্য এখনও কারও দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ মেলেনি। নাগাল্যান্ডের ৪২ জনের মধ্যে ৭ জনকে নিজের ঘরেই পৃথক করে রাখা হয়েছে। দিনে দু’বার করে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।

কেরলে ভাইরাস আক্রান্ত প্রথম পড়ুয়ার শরীরে আর এই রোগের লক্ষণ নেই বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল। ওই ছাত্রী উহান থেকে ভারতে ফিরেছিলেন সম্প্রতি। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি সূত্র জানায়, আপাতত ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি’র ত্রিশূর শাখার পরীক্ষাগারে ওই ছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। পুণের পরীক্ষাগার থেকে রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত চিকিৎসকরা ওই ছাত্রীকে পুরোপুরি ভাইরাস-মুক্ত বলতে পারছেন না বলে জানানো হয়েছে।

এসএমএম

আরও পড়ুন