• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০, ০৪:০৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০, ০৪:০৬ পিএম

ব্রিটেনে নতুন অভিবাসন ভিসা চালুর ঘোষণা

ব্রিটেনে নতুন অভিবাসন ভিসা চালুর ঘোষণা

নতুন করে ব্রিটেনে নম্বরভিত্তিক অভিবাসন নীতি ঘোষণা করেছে বরিস জনসনের সরকার। কম দক্ষদের চেয়ে ভবিষ্যতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীদের অভিবাসী হিসেবে ব্রিটেনে আসার সুযোগ করে দিতে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) পয়েন্টভিত্তিক নতুন অভিবাসন পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে দেশটি।

বার্তাসংস্থা বিবিসি জানায়, এ নীতি অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে কাজ করতে হলে অভিবাসীদের যোগ্যতার ভিত্তিতে সবমিলিয়ে ৭০ মার্কস পেতে হবে। অর্থাৎ ৭০ পেলে পাস, এর কম পেলে ফেল। আর ফেল করলে তিনি অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে বিবেচিত হবেন। তাদের ভিসা দেবে না ব্রিটেন সরকার।

নতুন নীতিতে দেশটি নিয়োগকর্তাদের ইউরোপের ‘সস্তা শ্রমিকদের’ ওপর থেকে নির্ভরশীলতা পরিত্যাগ, স্থানীয় কর্মী ধরে রাখা এবং স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ওপর বিনিয়োগ বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছে।

বরিস সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল মঙ্গলবার এ অভিবাসন নীতি ঘোষণা করেন। কনজারভেটিভ সরকার এ নতুন পরিকল্পনার কথা জানালেও এটি কার্যকর হতে পার্লামেন্ট সদস্যদের অনুমোদন লাগবে।

চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ হয়েছে। একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য ও ইইউর মধ্যে বাধাহীন চলাফেরার সময়সীমা শেষ হবে। এরপরও ইইউ ও ইইউ-বহির্ভূত দেশের নাগরিকদের একই মাপকাঠিতে বিচার করা হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নতুন এ পরিকল্পনায় বিদেশি শ্রমিকরা যুক্তরাজ্যে আসতে বা থাকতে চাইলে তাদের ৭০ নম্বর অর্জন করতে হবে। কেউ ২৫ হাজার ৬০০ পাউন্ডের বেশি আয় করলে তিনি ২০ নম্বর পাবেন। ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতা থাকলে ২০ এবং কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন পেয়ে চাকরিতে নিয়োগ পেলে ২০ নম্বর। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি থাকলে ১০ বা ২০ নম্বর এবং শ্রমিক ঘাটতি আছে এমন খাতে কাজ করায় দক্ষ হলে ২০ নম্বর পাবেন।

নতুন পরিকল্পনায় স্বল্প দক্ষ শ্রমিকদের জন্য কোনো সুযোগ থাকবে না বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। ইইউ সদস্য রাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অবাধ চলাচল শেষ হওয়ার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিতে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরামর্শও দিয়েছে তারা।

কম দক্ষ শ্রমিকদের পথ বন্ধ হলেও যুক্তরাজ্যে থাকতে চাওয়া ইইউ দেশগুলোর ৩২ লাখ নাগরিকদের দিয়ে শ্রমবাজারের চাহিদা মেটানো যাবে বলেও আশা তাদের। পাশাপাশি কৃষি খাতে মৌসুমি শ্রমিক চারগুণ বাড়িয়ে ১০ হাজার করা এবং ‘ইয়ুথ মোবিলিটি অ্যাগ্রিমেন্টে’র অধীনে প্রতিবছর ২০ হাজার তরুণকে যুক্তরাজ্যে আসার সুযোগ করে দেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।

ব্রিটেনের বিরোধী লেবার পার্টি সরকারের এ পরিকল্পনার সমালোচনা করে বলছে, নতুন এ নিয়মের ফলে সৃষ্ট ‘প্রতিকূল পরিবেশ’ শ্রমিকদের আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেছেন, নতুন অভিবাসন নীতিতে ‘মেধাবী ও  সেরা মানুষরা যুক্তরাজ্যে আসার সুযোগ পাবেন’।

ব্রিটিশ বাংলাদেশি আইনজীবী রুমেল আহমদ দৈনিক জাগরণকে বলেন, নতুন এ ব্যবস্থার কারণে এখন বাংলাদেশিদের ব্রিটেনে আসা কিছুটা হলেও কঠিন হয়ে পড়বে। তবে সত্যিকারের দক্ষ ব্যক্তিদের জন্যে এটা একটা চমৎকার সুযোগ।

এফসি