• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০, ০৮:৩৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০, ০৮:৩৩ এএম

মুজিব বর্ষের আমেজে নতুন মাত্রা পাবে বাংলাদেশ-ভারত মিত্রতা

মুজিব বর্ষের আমেজে নতুন মাত্রা পাবে বাংলাদেশ-ভারত মিত্রতা

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ঘোষিত মুজিববর্ষ পালনের উদ্বোধনী উৎসবে যোগ দিতে আগামী ১৭ মার্চ ঢাকায় আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এই সফরকালেই দুই মিত্র রাষ্ট্রের মাঝে চলমান সম্পর্ক আরো উন্নতীকরণের মধ্যদিয়ে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে।

নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরকে সামনে রেখে প্রাথমিকভাবে এমন সিদ্ধান্তের কথাই জানিয়েছে ভারত সরকারের একটি বিশেষ সূত্র। মুজিববর্ষ উদ্বোধনের এই বিশেষ উদযাপনে অংশগ্রহণ শেষে পরদিন ১৮ মার্চ ভারত ফিরবেন মোদী। আর দুদিনের এই সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথাও রয়েছে। যেখানে দুই প্রতিবেশির মাঝে কোনো ইস্যুতে ভুল বোঝাবুঝি থাকলে তা নিরসন করার জোরালো উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানা গেছে। 

এ প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এক উদ্ধৃতিতে জানিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফর সেই যাবতীয় ভুল বোঝাবুঝি, যদি আদৌ সেরকম কিছু থেকে থাকে, ভেঙে দিতে পারবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। পাশাপাশি ভারত কখনোই এমন কিছু করবে না, যা থেকে বাংলাদেশের আশঙ্কার কারণ থাকবে- সেটাও তিনি অবশ্যই পরিষ্কার করে দেবেন।’

সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণকারী দেশটির অন্যতম সফল ও জেষ্ঠ্য কূটনীতিক হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এর আগে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।

২০১৫ সালের জুন মাসে শেষবার বাংলাদেশ সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেই হিসেবে প্রায় দীর্ঘ পাঁচ বছর পর তিনি আবার বাংলাদেশ যাচ্ছেন। যে প্রতিবেশী দেশকে ভারত সবসময় তাদের ঘনিষ্ঠতম মিত্র বলে বর্ণনা করে থাকে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে স্মরণীয় করে রাখতে ভারত কার্যত চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছে না।

২০১৫ সালে মোদির বাংলাদেশ সফর সব দিক থেকেই ছিল ব্যতিক্রমী। সেবার দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক স্থল সীমান্ত চুক্তিই শুধু স্বাক্ষরিত হয়নি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোদীর ভাষণও প্রশংসিত হয়েছিল।

কিন্তু দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আপাত মসৃণভাবে এগোলেও ভারতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি তৈরির প্রেক্ষাপট ও নতুন নাগরিকত্ব আইনকে কেন্দ্র করে দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে কিছুটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

তবে জানা গেছে ঢাকায় দুই প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বৈঠকে যে কোনও দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়েই আলোচনা হতে পারে এবং তা অবশ্যি উভয় রাশট্রের কল্যানের স্বার্থে। এমনটাই জানাচ্ছেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা জানেন, দুজন প্রধানমন্ত্রী যখন এরকম বৈঠকে মিলিত হন, তাদের আলোচনার কোনও পূর্বনির্ধারিত এজেন্ডা থাকে না। এবারেও থাকবে না। তারা চাইলে দুপক্ষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যে কোনও বিষয়ই তুলতে পারেন, সেটা নিয়ে কথা বলতে পারেন।’

এদিকে নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের ১০-১২ দিন আগেই ঢাকা উদ্দেশ্যে শ্রিংলার দিল্লি ত্যাগের আভাস পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে দুই রাষ্ট্রের সরকার প্রধানের মাঝে পরিকল্পিত সেই গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষীক বৈঠকের পটোভূমি গুছিয়ে তুলতেই তার এই আগাম ঢাকা সফর। কারণ, ভারতীয় হাইকমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী অন্যতম সফল এ কূটনীতিকের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত ইতিবাচক ও চমৎকার বন্ধুত্ব আগে থেকেই বিদ্যমান।

এর আগে দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে কয়েকদিন আগেই এক সৌজন্য সাক্ষাতকারে যান শ্রিংলা। আর সেখানেই মোদীর এই সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয় বলে জানা যায়।

এছাড়া শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করও দেখা করেছেন বাংলাদেশ হাই কমিশনার মোহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে। সেখানে আলোচনার মূল এজেন্ডাই ছিল মোদির ঢাকা সফর।

সাক্ষাতকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘শেখ মুজিবকে চিরকাল ভারতীয়রা পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে এসেছে। তিনি ছিলেন সত্যিকারের একজন বিশ্বনেতা। বাংলাদেশকেও ভারত মর্যাদার চোখে দেখে এসেছে, তাদের জন্য শুভকামনারও কখনও অভাব ছিল না।’

এসকে